খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো : প্রধানমন্ত্রী
  সুনামগঞ্জে বাস-সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে সংগীতশিল্পী পাগল হাসানসহ নিহত ২

সংখ্যালঘু নয়, নিজেকে দেশের নাগরিক ভাবুন: প্রধানমন্ত্রী

গেজেট ডেস্ক

বাংলাদেশের মাটিতে নিজের যতটা অধিকার, ঠিক ততটাই অধিকার দেশের প্রতিটি ধর্মের মানুষের আছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই নিজেদের সংখ্যালঘু না ভেবে দেশের নাগরিক হিসেবে সমান অধিকার নিয়ে চলতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা।

শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার বিকেলে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।

রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির ও চট্টগ্রামের জে এম সেন হল থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সংযুক্ত ছিলেন এই শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই এখানে সব ধর্মের মানুষ সমানভাবে নিজের অধিকার নিয়ে বসবাস করবে। হিন্দু সম্প্রদায়, সনাতন সম্প্রদায় সবার উদ্দেশ্যে বলব, আপনারা এ দেশের মানুষ। এই মাটিতে আপনাদের সমান অধিকার। আমার যতটুকু অধিকার, আপনারও ততটুকুই অধিকার। এখানে সবার সমান অধিকার রয়েছে।

‘কাজেই আপনারা কখনও নিজেদেরকে সংখ্যালঘু বা এ রকম মনে করবেন না। আপনারা মনে করবেন এ দেশেরই নাগরিক। সমানভাবে নাগরিক অধিকার আপনারা ভোগ করবেন। আমরা সেভাবেই আপনাদেরকে দেখতে চাই।’

ট্রান্সজেন্ডারসহ দেশের পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপও তুলে ধরেন প্রধানমনন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের দেশটা এগিয়ে যাবে, আমাদের সব মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। শুধু ধর্মীয় শ্রেণী না, আমাদের যেসব শ্রেণী অবহেলিত ছিল, আমি সরকারে আসার পর তাদের সবাইকে কিন্তু ধীরে ধীরে সমাজে তুলে নিয়ে আসছি।’

‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’- এই স্লোগান স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন আমাদের দেশের একশ্রেণীর মানুষ কোনোদিনই মেনে নিতে পারেনি। আমরা আওয়ামী লীগ, আমরা সব সময় জাতির পিতার সেই চেতনায় বিশ্বাস করি এবং সব ধর্মের সমান অধিকার থাকবে।’

ধর্মীয়, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়- বাংলাদেশে সব উৎসবে সবাই শামিল হয় জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের এই যে সুন্দর পরিবেশ, তা নষ্ট করতে অনেক চেষ্টা করা হয়। একেকটা শ্রেণী কিন্তু আছে। শুধু একটা ধর্মে নয়, সব ধর্মেই কিন্তু এ জাতীয় কিছু আছে; যারা মাঝে মাঝেই একেকটা সমস্যা সৃষ্টির চেষ্টা করে।’

ধর্মীয়সহ যেকোনো ইস্যুতে যখনই কোনো ঘটনা ঘটে, সরকার তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেয় বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ব্যবস্থা নেয়ার পরও যেভাবে প্রচার করা হয়, তা নিয়ে আক্ষেপ করেন সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখনই কোনো ঘটনা ঘটে আমাদের পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। তবে দুঃখের সঙ্গে বলছি, যখন একটা ঘটনা ঘটল, সেই ঘটনাটাকে দেশ-বিদেশে এমনভাবে প্রচার করা হয় যে মনে হয় এ দেশে হিন্দুদের কোনো অধিকারই নেই। এমন একটা ভাব দেয়া হয়।

‘কিন্তু ঘটনার পর আমাদের যে অ্যাকশনগুলো, সে যে ধর্মেরই হোক আমরা যে তাকে গ্রেপ্তার করি, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই, সেই বিষয়টা কিন্তু তুলে ধরা হয় না। এমনকি মন্দির রক্ষা করতে গিয়ে অনেক সময় আমাদের অনেক মুসলমানও কিন্তু পুলিশের গুলিতে মারা গেছে। যেটা কুমিল্লায় ঘটেছিল। কিন্তু এই কথাগুলো বলা হয় না। সেখানে প্রচারটা এমনভাবে করা হয় যে মনে হবে হিন্দুরা এখানে ভীষণ খারাপ অবস্থায় আছে।’

মন্দির রক্ষায় আওয়ামী লীগ ও সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমরা মানব ধর্মে বিশ্বাস করি। শ্রীকৃষ্ণ কিন্তু তাই চেয়েছিলেন। দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন- এটাই ছিল তার লক্ষ্য। তিনিও কিন্তু এই অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করতেন। ঠিক তেমনই আমাদের মহানবী (সা.) সব সময় সব ধর্মের সমানাধিকারের কথা বলেছেন। তিনি সেটা বিশ্বাস করতেন।’

পবিত্র কোরআন শরিফ থেকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যার যার ধর্ম সে সে পালন করবেন।’

সেই চেতনায় বিশ্বাসের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কোনো কথা বলা ঠিক না। কারণ এটা হচ্ছে মানুষের বিশ্বাস। আমরা ‍যদি বিশ্বাস করি যে এই বিশ্বটা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তাহলে অবশ্যই এটা বিশ্বাস করতে হবে যে ধর্ম বর্ণ যা-ই থাকুক না কেন কার মধ্যে কী শক্তি আছে তা আমরা জানি না, সৃষ্টিকর্তা জানেন।

‘কাজেই আমরা সেখানে কাউকে ছোট করে দেখাব কেন? বা আমরা কাউকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করব কেন? আমরা তার প্রতি কেন অবহেলা দেখাব?’

বঙ্গবন্ধু-কন্যা বলেন, ‘সেই নীতিতে অন্তত আমরা বিশ্বাস করি না। অন্তত আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না। সেটা আপনাদের স্পষ্ট বলতে পারি। আমাদের সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। সেই আশ্বাসটুকু আপনাদের দিতে পারি।’

খুলনা গেজেট/এইচআরডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!