খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ | ২৯ মার্চ, ২০২৪

Breaking News

  ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত
  সাবেক সংসদ সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজির হোসেন মারা গেছেন
  নওগাঁয় বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত
  যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত

শীতে শরীরের ব্যথায় মুক্তির উপায়

গেজেট ডেস্ক

চারিদিকে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। শীতকালেই শরীরের বিভিন্ন ব্যথা বেশি বাড়ে। হাঁটু আর গাঁটের ব্যথায় চলাফেরায় অসুবিধে, কিংবা হাত ফুলে যাওয়া এসব সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। শরীরের পিঠ, কাঁধ, হাঁটু, মাথাসহ গাঁটের ব্যথা হলে অনেকে প্যারাসিটামল বা এ জাতীয় ওষুধ সেবন করে থাকেন যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তাপমাত্রা কমলে জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির রক্তনালীগুলো সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে রক্তের তাপমাত্রাও কমে যায়। ফলে জয়েন্টগুলো শক্ত হয়ে ফুলে ওঠে। তখনই ব্যথা বাড়ে। এছাড়াও ঠান্ডার সময় গায়ে অনেক গরম পোশাক চাপানো থাকে। যার ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চালনের বেগ কম থাকে। আর রক্ত সঞ্চালন কম হলেই ত্বকে বেশি ব্যথা অনুভূত হয়। আগে বলা হত ৪০ বছর বয়সের পর বাত আসে। কিন্তু এসব কথা এখন আর খাটে না। ২৫ বছর বয়সেও গাঁটে ব্যথা হয়। এবছর যেহেতু প্রায় সকলেই ঘরে বসে কাজ করছেন, টানা ৯ ঘন্টা বসে থাকছেন সে কারণে ব্যথার প্রকোপও বেশি হবে।

মহিলাদের মধ্যে বাতের সমস্যা বেশি দেখা গেলেও ছাড় পান না ছেলেরা। গাঁটের ব্যথা যে কোনও মানুষের হতেই পারে। এখনকার অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, পরিবেশ দূষণের ফলে অল্প বয়সেই শরীরে দেখা দিচ্ছে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি। ঘাটতি হচ্ছে ভিটামিন ডি-এর। যে কারণে প্রথমেই ওষুধ না খেয়ে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে ও ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে সুস্থ থাকা যায় সেদিকেই নজর দিন। রইল কিছু টোটকা।

মেথি ভেজানো পানি খান : শরীরের যে কোনও ব্যথার উপশম হয় মেথিতে। আগের রাতে এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে ভালো করে ছেঁকে নিয়ে সেই পানি খান। তাহলে শরীরও ভালো থাকবে, ব্যথাও কমবে।

লবণ পানি দিয়ে সেঁক নিন : এককাপ পানিতে সামান্য পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম সালফেট মিশিয়ে ভালো করে গরম করে নিন। এবার ওই পানিতে কাপড় ডুবিয়ে সেঁক দিতে থাকুন। সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন করলে ভালো উপকার পাবেন।

হলুদ-আদার মিশ্রণ : এক গ্লাস পানি নিন। এবার ওই পানিতে হলুদ আর আদা ফুটিয়ে নিন। জল ফুটে আধ কাপ হলে নামিয়ে নিন। এবার ছেঁকে নিয়ে মধু মিশিয়ে খান। দিনে দুবার খেলেই কমবে ব্যথা। সাকা শীত খেতে পারলে সুস্থ থাকবেন।

এক কোয়া রসুন : রসুনের মধ্যে রয়েছে ব্যথানাশক উপাদান সালফার। এটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং পেশী ও গাঁটের ব্যথা ও ফোলা ভাব কমাতে উপকারী। এজন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খাওয়া ভালো। এছাড়া আক্রান্ত স্থানে রসুন-তেল গরম করে নিয়মিত মালিশ করতে পারেন।

ঠান্ডা-গরম সেঁক : হট ওয়াটার ব্যাগ থাকলে ভালো। নইলে একবার ঠান্ডা পানিতে, একবার গরম পানিতে পা ডোবান। এরকম ১৫ মিনিট করুন। হট ওয়াটার ব্যাগ থাকলে ৩০ মিনিট সেঁক দিন। এইভাবে সেঁক দিলে গাঁটের ব্যথার সমস্যা অনেকটাই কমে।

কফি : এক গবেষণা থেকে জানা যায়, কফি পানে ব্যায়ামজনিত ব্যথা দূর হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ২০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন পান করলে মাথাব্যথা, মাইগ্রেইনের ব্যথা অনেক কমে, তবে সেটা দীর্ঘসময়ের জন্যে নয়।

গাজরের জুস : গাজরের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই গাজরের জুস বানিয়ে ওর মধ্যে পাতিলেবুর রস দিয়ে খান। খালি পেটে প্রতিদিন সকালে খেলে উপকার পাবেন।

তিলের বীজ : তিল বীজও ব্যথা সারাতে ভালো কাজ করে। এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা মাথা ব্যথা ও মাংস পেশীর ব্যথা অনায়াসে দূর করতে সাহায্য করে।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ও আদা : অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের সঙ্গে আদার রস মিশিয়ে খান। প্রয়োজনে সামান্য মধু যোগ করতে পারেন। সারা বছর খেলে ব্যথা কমবেই। অ্যাপেল সিডার ভিনিগার কিন্তু হালকা গরম পানিই খেতে হয়।

মরিচের গুঁড়া ও নারিকেল তেলের মিশ্রণ : চিকিৎসকদের মতে, গাঁটের ব্যথা কমাতে ক্যাপসাইসিন খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। লাল মরিচে মিলবে এই ক্যাপসাইসিন। আধ-কাপ নারকেল তেলে দু’চামচ মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে ব্যথার জায়গায় ২০ মিনিট ধরে মালিশ করুন। এর পর হালকা গরম জায়গাটা ভাল করে পরিষ্কার করে ফেলুন। দিনে অন্তত ৩-৪ বার এই ভাবে মালিশ করলে গাঁটের ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।

পুদিনা পাতার রস : পুদিনা পাতায় মেনথল নামে একটি উপাদান আছে, যা ধনুষ্টংকার রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া, এর তেল পায়ের কজ্বি ও গোড়ালীতে মালিশে ব্যথা উপশম হয়। এমনকি মাথা ব্যথায় পুদিনা পাতা কপালে ঘষলেও ব্যথা উপশম হয়।

খুলনা গেজেট / এমএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!