খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  নাটোরের সিংড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি-সম্পাদককে দল থেকে অব্যাহতি
  আপিল বিভাগে ৩ বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি; গেজেট শিগগিরই

শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক চিন্ময় বসুর বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিভাবকসহ এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেছেন।

চিন্ময় বসু কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি বানিয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি কলাবাড়ী ইউনিয়নের কুমুরিয়া গ্রামের চন্দ্রকান্ত বসুর ছেলে।

জানা গেছে, শিক্ষক চিন্ময় বসু শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় পঞ্চম শ্রেণির বিভিন্ন ছাত্রীকে কাছে ডেকে নিয়ে তাদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতেন। এ ঘটনা ওই সকল ছাত্রী তাদের অভিভাবকদের জানালে তাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিখা হালদারসহ অন্যান্য শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রাবেয়া সুলতানাকে জানায়। প্রধান শিক্ষক তাকে রক্ষার জন্য তাড়িঘড়ি করে তাকে তিন দিনের ছুটি প্রদান করেন।

এর আগে শিক্ষক চিন্ময় বসুর এ ধরণের কর্মকান্ডের কারণে পঞ্চম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দেয়। ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় অভিভাবকরা তাদের মেয়েদেরকে বিদ্যালয় পাঠাবেন না বলে জানিয়েছেন।

পঞ্চম শ্রেণির এক মেধাবী ছাত্রী বলেন, শিক্ষক পাঠদানের সময় আমাদের এক এক জনকে কাছে ডেকে নিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতেন। এ কারণে আমরা কয়েকজন ছাত্রী পিছনের বেঞ্চে গিয়ে বসতাম। স্যার সেখানে গিয়েও আমাদেরকে জড়িয়ে ধরতেন। তার হাত থেকে রক্ষার জন্য ২/৩ ছাত্রী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক অভিভাবক বলেন, গত কয়েকদিন ধরে আমার মেয়ে বিদ্যালয়ে যেতে চাচ্ছিলো না। তার কাছে বিদ্যালয়ে না যাওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে সে শিক্ষক চিন্ময় বসুর কু-কর্মের কথা আমাকে জানায়। আমি বিষয়টি প্রধান শিক্ষক শিখা হালদারকে জানাই। সে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ওই শিক্ষককে ছুটি প্রদান করেন। ওই শিক্ষকে বিদ্যালয় থেকে বদলী না করা পর্যন্ত আমার মেয়েকে বিদ্যালয়ে পাঠাবো না।

এ বিষয়ে জানার জন্য বিদ্যালয়সহ শিক্ষক চিন্ময় বসুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রধান শিক্ষক শিখা হালদার বলেন, বিষয়টি আমি বিভিন্ন অভিভাবকদের কাছ থেকে জানার পরে শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছিলাম। তিনি ঘটনাটি মিথ্যা বলে জানিয়েছেন। তিনি ছাত্রীদেরকে আদর করে পড়া বুঝিয়ে দিতেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। ছুটির আবেদন করলে বৃহস্পতিবার (১১ মে)থেকে তাকে তিন দিনের ছুটি প্রদান করা হয়।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই বিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষক বলেন, চিন্ময় বসু এখানে যোগদানের পর থেকেই পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের কারণে অকারণে গায়ে হাত দিতেন। বিষয়টি নজরে আসার পর প্রধান শিক্ষক শিখা হালদারকে জানানো হলেও তিনি তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি। পক্ষান্তরে তাকে রক্ষার জন্য তিনি তাকে ৩দিনের ছুটি প্রদান করেন।

এদিকে, রোববার শিক্ষক চিন্ময় বসুর বিদ্যালয়ে যোগদান করার কথাথাকলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনি যোগদান করেননি।

বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রাবেয়া সুলতানা বলেন, চিন্ময় বসুর কু-কর্মের কথা পঞ্চম শ্রেণির অনেক ছাত্রীর অভিভাবকই আমাকে জানিয়েছেন। আমরা তার বদলীসহ শাস্তি দাবি করছি।

কোটালীপাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার তিনি বিষয়টি জানার জন্য স্কুলে গিয়েছিলেন। সেখানে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছেন।সেখান থেকে প্রাপ্ত বিষয়াদি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে জানান তিনি আরও জানিয়েছেন।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!