খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  রাঙ্গামাটির সাজেকের উদয়পুর সড়কে ট্রাক খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত
  চাঁদপুরের হবিগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে মা ও শিশুর মৃত্যু
  নাটোরের সিংড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি-সম্পাদককে দল থেকে অব্যাহতি

রূপসায় যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রূপসা উপজেলার কাজদিয়া পাঁচানি গ্রামে যৌতুকের বলি হয়েছেন আসমা খাতুন নামের এক গৃহবধূ। শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) গৃহবধূ আসমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর ওই গৃহবধূকে মারপিট করা হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

নির্যাতনের অভিযোগে গৃহবধূ আসমার ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন তার শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি। তবে পুলিশ ঘাতক স্বামীকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে পারিবারিকভাবে কাজদিয়া পাঁচানি গ্রামের আব্দুস সত্তারের ছেলে আসাদুজ্জামান নুরের সাথে আলমগীর গাজীর মেয়ে আসমা খাতুনের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনেরা তাকে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। শুরু হয় মানষিক ও শারীরিক নির্যাতন। এরই মধ্যে আসমা ও নুরের ঘরে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে আসমা খাতুন তাদের অবর্ণনীয় অত্যাচার সহ্য করেছেন। নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে সহ্য করতে না পেরে পাঁচ মাস আগে তিনি বাবার বাড়ি টুটপাড়া সরকার পাড়ায় চলে আসেন।

তবে স্ত্রী ও কন্যা সন্তানকে বাড়ি ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য স্থানীয় সাবেক এক মহিলা মেম্বারের সাথে শ্বশুর বাড়ি আসেন আসাদুজ্জামান নুর। সাবেক ওই মেম্বারের জিম্মায় আসমা খাতুন ও তার সন্তানকে ফিরিয়ে নেন বলে গৃহবধূর পিতা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বাড়ি ফিরিয়ে নেওয়ার পর ৫ সেপ্টেম্বর রাতে শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। ঘটনার দিন ভিকটিমকে বিদ্যুতের তার দিয়ে পেচিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়। বুকে একাধিক লাথি ও ঘুষি মারা হয়। শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ভিকটিমকে কাজদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি দেখে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। চিকিৎসকরা তার অবস্থার অবনতি দেখে তাকে নিবীড় পর্যাবেক্ষণ কেন্দ্রে স্থানান্তর করেন। এর আগে আসাদুজ্জামান ওই গৃহবধূর মাকে ফোন করে বলেন, তার মেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসার জন্য তাগিদ দেয়। তিনি হাসপাতালে আসার পর মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকেরা পালিয়ে যায়। জিম্মায় নেওয়া সাবেক মহিলা মেম্বরও ব্যক্তিগত ফোন বন্ধ রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন নিহতে বাবা আলমগীর গাজী।

এ ঘটনার পর বোনকে মারধোরের ঘটনায় গত ৮ সেপ্টেম্বর গৃহবধূ আসমার ভাই রূপসা থানায় বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন (যার নং ৯)। ওই মামলায় গৃহবধূর শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা খুলনা কারাগারে রয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রূপসা থানার এসআই শহীদ জানান, যৌতুকের কারণে গৃহবধূকে প্রায় নির্যাতন করা হতো। ভিকটিমের ভাই মামলা দায়ের করলে আসামির বাবা ও মাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার গৃহবধূ আসমা খাতুনের মৃত্যুর বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এখন পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!