খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ | ২৮ মার্চ, ২০২৪

Breaking News

  ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত
  সাবেক সংসদ সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজির হোসেন মারা গেছেন
  নওগাঁয় বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত
  যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত

রূপপুরের পণ্যবোঝাই রুশ জাহাজটি এখন চীনের পথে

গেজেট ডেস্ক

বাংলাদেশ  ও ভারতের বন্দরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য খালাস করতে পারেনি মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা পতাকাবাহী রুশ জাহাজ ‘উরসা মেজর’। নানা নাটকীয়তার পর এবার জাহাজটি যাচ্ছে চীনের দিকে। দক্ষিণ চীনের সায়েনথো বন্দরে (সিএনএসটিজি) বহন করা পণ্যগুলো খালাস করার কথা রয়েছে সেটির।

কূটনৈতিক চ্যানেলগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র বলছে, ভারতের বন্দরে ভিড়তে না পারায় জাহাজটিকে রুট পরিবর্তন করিয়ে চীনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চীনের সায়েনথো বন্দরে গিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য খালাস করতে চায় রাশিয়া। আশা করা হচ্ছে, আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে জাহাজটি চীনের বন্দরে গিয়ে পৌঁছাবে।

গ্লোবাল শিপ ট্র্যাকিং ইন্টেলিজেন্সের তথ্য বলছে, উরসা মেজর জাহাজটি বর্তমানে বঙ্গপোসাগরে ভারতের অংশের মাঝ সমুদ্রে রয়েছে। জাহাজটি সায়েনথোর দিকে যাচ্ছে। প্রায় সাড়ে আটদিনের মাথায় জাহাজটি সায়েনথো বন্দরে গিয়ে পৌঁছাবে।

এদিকে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা রুশ জাহাজটি নিয়ে খোলামেলা মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। রোববার (২২ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাশিয়ার এমন আচরণে বিরক্তি প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জেনেশুনে নিষেধাজ্ঞা আছে, এমন জাহাজের নাম পরিবর্তন করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পণ্য পাঠিয়েছে। আমরা এটি আশা করিনি। আমাদের কাছে তাজ্জব লেগেছে এটা।

তিনি বলেন, রাশিয়ার ৬৯টি জাহাজ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। এর বাইরে তাদের কয়েক হাজার জাহাজ আছে। নিষেধাজ্ঞা আছে, এমন জাহাজ আমরা গ্রহণ করতে চাই না। আমরা রাশিয়াকে বলেছি, তাদের যেসব জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে, সেগুলো ছাড়া অন্য যেকোনো জাহাজে পাঠাতে পারে।

নিষেধাজ্ঞা নেই এমন একটি জাহাজে রাশিয়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য পাঠাবে বলে আশা প্রকাশ করেন মোমেন।

গত ২৪ ডিসেম্বর উরসা মেজর নামে রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজটির রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে মোংলা বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। বাংলাদেশ জানতে পারে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ‘স্পার্টা-৩’ জাহাজ। যেটি রঙ ও নাম বদল করে উরসা মেজর নাম দেওয়া হয়। জাহাজটির আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার (আইএমও) সনদ নম্বর: ৯৫৩৮৮৯২, যা প্রকৃতপক্ষে ‘স্পার্টা-৩’ জাহাজের সনদ নম্বর।

তথ্য নিশ্চিত হবার পরে বাংলাদেশ জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে নিষেধ করে। যদিও জাহাজটিকে বন্দরে পণ্য খালাসের অনুমতি দিতে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে রাশিয়া। তবে জাহাজটি বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার বিষয়ে অনড় অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে জাহাজটি ভারতের যেকোনো বন্দরে পণ্য খালাস করে, পরে তা অন্য জাহাজে করে বাংলাদেশে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু জাহাজটি প্রায় দুই সপ্তাহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পণ্য খালাসের জন্য অপেক্ষা করে ব্যর্থ হয়। পরে জাহাজটি ১৬ জানুয়ারি ভারতের জলসীমা ছেড়ে যায়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ তথ্য পেতে হবে কেন? জাহাজ রওনা হওয়ার মাস খানেক আগে বন্দরকে জানানো হয়। জাহাজের নাম পরিবর্তন করা গেলেও আইএমও নম্বর পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। জাহাজ রওনা হওয়ার পর থেকে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বন্দরে আপডেট দেয়। বাংলাদেশ থেকে কত নটিক্যাল মাইল দূরে আছে, এটা জানানো হয়। বন্দর সংশ্লিষ্টরা আইএমও নম্বর দেখে বলতে পারার কথা এটা উরসা মেজর নয়, ‘স্পার্টা-৩’ জাহাজ।

রাশিয়া কি ইচ্ছা করেই নিষেধাজ্ঞায় থাকা জাহাজ বাংলাদেশে পাঠিয়েছে─ প্রশ্নের জবাবে এ কর্মকর্তা বলেন, কোনো একটা কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে গোলমাল হয়েছে।

রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পর সাংবাদিকরা রাশিয়ান জাহাজের বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের কাছে জানতে চান। রাশিয়ার জাহাজ ফেরত দেওয়াকে কেন্দ্র করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য পাঠানো নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে যাচ্ছে কি না─ জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটু দেরি তো হবেই। এটুকু বলতে পারি।

তিনি বলেন, ভারতে খালাসের কথা বলা হচ্ছে। এরকম বার্তা আমাদের কাছে ছিল না। এটা একটা কমার্শিয়াল ট্রানজেকশন। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব হলো আমাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। আশা করি সেটা হবে। এটা বাস্তবায়নের দায়িত্বে যারা আছেন, তারা বিষয়টা দেখবেন।

রাশিয়া নিষেধাজ্ঞায় থাকা জাহাজ বাংলাদেশে পাঠাল। এ বিষয়ে মস্কোকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কি না ঢাকা─ জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা আমার সম্পূর্ণ জানা নেই। বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় নিশ্চয়ই সেটা জানিয়েছে। তারা বিষয়টা ডিল করছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!