খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর সদরঘাটের শ্যামবাজারঘাটে লঞ্চে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে
  বান্দরবানের তিন উপজেলায় ভোট স্থগিত : ইসি সচিব
  নাটোরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষে এক ট্রাক ড্রাইভার নিহত

যানবাহনের চাপ সামলাতে খুলনাঞ্চলের সড়কগুলো কতটুকু প্রস্তুত

একরামুল হোসেন লিপু

পদ্মা সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ টি জেলার কয়েক কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের একটি লালিত স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে আগামী ২৫ জুন। দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যানবাহনের ব্যাপক চাপ বেড়ে যাবে। ‌বি‌শেষ ক‌রে পদ্মা সেতু থে‌কে গোপালগঞ্জ হ‌য়ে বা‌গেরহা‌টের কাটাখা‌লি, খুলনা-মোংলা, খুলনা-য‌শোর ও খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়‌কের ওপর চাপ পড়‌বে ব‌্যাপক। যানবাহনের এই অতিরিক্ত চাপ সামলাতে খুলনাঞ্চলে সড়ক-মহাসড়কগুলো কতটুকু প্রস্তুত ? জবাবে সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান মাসুদ খুলনা গেজেটকে বলেন, সঙ্গত কারণেই পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণবঙ্গে পরিবহনের অতিরিক্ত চাপ বেড়ে যাবে। বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা খুলনাঞ্চলে যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে গত ২ বছর ধরে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছি এবং সেই আলোকে প্রকল্প তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে সেগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, ময়লাপোতা হতে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। খুলনার ফেরিঘাট হতে আফিল গেট পর্যন্ত সড়ক ৪ অথবা ৬ লেনে উন্নীতকরণ করা হবে। প্রকল্পটির ফিজিবিলিটি এবং ডিজাইনের কাজ চলমান রয়েছে। একইভাবে খুলনা-যশোর রোডের রাজঘাট থেকে আফিলগেট হয়ে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৪ লেন বিশিষ্ট সড়ক তৈরী করা হবে।

সওজ’র এই কর্মকর্তা জানান, খুলনা জেলখানা খেয়াঘাটে ব্রিজ / ট্যানেল নির্মাণের ফিজিবিলিটি স্টাডি চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে এই প্রকল্পের আওতায় খুলনা রেলস্টেশন পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা হাইওয়ের গোপালগঞ্জের চন্দ্রদিঘলিয়া পয়েন্ট পর্যন্ত ৪ লেন সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রস্তাবিত ৪ লেন বিশিষ্ট এ সড়কটি নির্মিত হলে ঢাকা থেকে খুলনার দূরত্ব আনুমানিক আরও ৩৫ কিলোমিটার কমে যাবে। ঢাকা থেকে খুলনায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় যাওয়া যাবে।

এছাড়া তেরখাদা উপজেলা খুলনা জেলা শহরের সাথে যুক্ত হবে। তেরখাদা এলাকার পরিত্যক্ত জলাবদ্ধ বিলে শিল্পায়নের ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থান হবে। খুলনা থেকে গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম ও বরিশালের দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার কমে যাবে। এতে সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প বিকশিত হবে। ঢাকা থেকে খুলনার আকাশপথের চেয়ে সড়কপথে যোগাযোগ সহজ ও দ্রুততর হবে। ভৈরব নদের উপর সাসপেনশন ব্রিজ তৈরির কারণে নদীর প্রবাহের কোন ক্ষতি হবে না।

তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে জিরো পয়েন্ট নামক স্থানে ইন্টারসেকশন নির্মাণ করা হবে। পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকা থেকে সরাসরি পদ্মা সেতু হয়ে যানবাহনগুলি জিরো পয়েন্ট হয়ে খুলনা-সাতক্ষীরা এবং চুকনগরে প্রবেশ করবে। জিরো পয়েন্টে ইন্টারসেকশন নির্মিত হলে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

দৌলতদিয়া-ফরিদপুর (গোয়ালচামট)-মাগুরা-ঝিনাইদহ-যশোর-খুলনা-মংলা-(দ্বিগরাজ) সড়কের আফিলগেট হতে পাওয়ার হাউজ পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়ক ৬ লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। খুলনা শহর বাইপাস এবং গল্লামারি-বটিয়াঘাটা-দাকোপ নলিয়ান ফরেস্ট সড়কের সাচিবুনিয়া নামক স্থানে ইন্টারসেকশন নির্মাণ করা হবে। গল্লামারি-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়কের ২৮ তম কিঃ মিঃ -এ চুনকুড়ি নদীর উপর পোদ্দারগঞ্জ ফেরিঘাটে চুনকুড়ি সেতু এবং একইভাবে গল্লামারি-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়কের ২১ তম কিঃ মিঃ -এ ঝপঝপিয়া নদীর উপর পানখালী ফেরিঘাটে ঝমঝপিয়া সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে । সেতু দুটি নির্মিত হলে এ অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষ পদ্মা সেতুর সুফল ভোগ করতে পারবে। সরাসরি রাজধানীর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

এছাড়া খুলনা সিটি বাইপাস সড়ক (এন-৭০৯) শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক জোনে গমনের জন্য নতুন চার লেন সড়ক ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ওভারপাস নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সওজ’র এই প্রকৌশলী আরও জানান, পদ্মা সেতু চালু হলে এ অঞ্চলে পরিবহনের বাড়তি চাপের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যে খুলনা জোনের আওতাধীন মহাসড়কে ৫ টি বিদ্যমান সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন কংক্রিট সেতু / বেইলি সেতুর স্থলে কংক্রিট সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!