খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ | ২৯ মার্চ, ২০২৪

Breaking News

  দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫
  গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২
প্রতিষ্ঠানের মালিককে কারাদণ্ড ও জরিমানা

যশোরে তৈরি হচ্ছে পশুর নকল বিদেশি ওষুধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরেই তৈরি হচ্ছে গবাদি পশুর নকল বিদেশি ওষুধ। কোরিয়া, চায়না ও ভারতের বিভিন্ন কোম্পানির লেবেল দিয়ে মোড়ক বসানো হচ্ছে । এরপর নকল বিদেশি ওষুধ পৌঁছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এসব ওষুধ বাজারজাতকরণে জড়িত রয়েছে বিভিন্ন গ্রামের হাতুড়ে পশু ডাক্তার। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এ রহস্য উন্মোচিত হয়।

যশোরের উপশহর ই-ব্লকে ইম্পেরিয়াল ইউনাইটেড ফার্মা লিমিটেড নামক একটি গবাদি পশুর পুষ্টি প্রিমিক্স উৎপাদন কারখানায় সোমবার বিকেলে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় অনুমোদনহীন ওষুধ উৎপাদনের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের মালিক মোশারফ হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাসের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তপু কুমার সাহা।

অভিযানের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাস জানান, প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অনুমোদন ছাড়াই গবাদি পশুর ওষুধ উৎপাদন করে যাচ্ছে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি পশুর বিভিন্ন রোগের ২৭ প্রকার ওষুধ উৎপাদন করছে। এর মধ্যে তাদের ছয় প্রকার ওষুধ উৎপাদনের অনুমোদন রয়েছে। বাকি ২১ প্রকার ওষুধ উৎপাদনের কোন অনুমোদন নেই। কর্তৃপক্ষ অনুমোদন ছাড়াই এসব ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। এছাড়া, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোন রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই কর্মীরা হাত দিয়ে ওষুধ উৎপাদন ও মোড়কজাত করছে, যা ওষুধ প্রশাসনের আইন বহির্ভূত।

তিনি আরও জানান, প্রতিষ্ঠানটি দেশের বাইরে বিদেশি ওষুধও উৎপাদন করছে। এসব ওষুধে কোরিয়া, চায়না ও ভারতে তৈরির লেবেল বসিয়ে মোড়ক তৈরি করে বাজারজাত করছে। যা বড় ধরণের প্রতারণার শামিল। এসব কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিষ্ঠানের মালিক মোশারফ হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। অভিযান শেষে অনুমোদনহীন ওষুধ জব্দ করে উপস্থিত জনসাধারণের সামনে ধ্বংস করা হয়।

জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোশারফ হোসেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশপোল গ্রামের আব্দুর ছাত্তারের ছেলে। ২০১৩ সালে এফএস এগ্রোভেট নামক একটি গবাদি প্রাণির ওষুধ বাজারজাতকরণ কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগে চাকরি করতেন। সেখানে চার বছর চাকরি করার সুবাদে গবাদি পশুর ওষুধ তৈরি ও বাজারজাতকরণের উপর তার ভালো অভিজ্ঞতা তৈরি হয়। তখন পরিকল্পনা করেন নিজেই একটি গবাদি পশুর ওষুধ উৎপাদন কারখানা করবেন। এরপর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইম্পেরিয়াল ইউনাইটেড ফার্মা লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠানটি চালু করেন। প্রথমে অনুমোদন নিয়ে ৬ প্রকার ওষুধ উৎপাদন করলেও পরবর্তীতে অধিক লাভের আশায় অবৈধ প্রক্রিয়ায় আরো ২১ প্রকার ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করেন। এর মধ্যে বিদেশি কোম্পানির ওষুধও রয়েছে। যা প্রতারণামূলক কর্মকান্ড।

প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোশারফ হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালতকে জানান, তার কোম্পানির উৎপাদিত ওষুধ খুলনা বিভাগের ১০টি জেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়মিত সরবরাহ করা হয়ে থাকে। স্থানীয় কোয়াক পশু ডাক্তার ও তার কোম্পানির প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলায় এ ওষুধ বাজারজাত করা হয়। তার প্রতিষ্ঠান ইম্পেরিয়াল ইউনাইটেড ফার্মা লিমিটেড প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ টাকার ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করে থাকে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!