খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬ ডিগ্রি, খুলনায় ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে
  চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে প্রাণ গেল ১ জনের
  দাবদহের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ল ৫ দিন, খুলবে ২৮ এপ্রিল

ভারতে কৃষক-ক্ষেতমজুর আন্দোলন, কৃষি আইন ও কিছু কথা

মোহাম্মদ সাদউদ্দিন

ভারতের বিজেপি সরকারের জনবিরোধী কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষক-ক্ষেতমজুরদের লড়াই আন্দোলন এতটাই গতিশীল ও চলমান যে, শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ইউরোপে শ্রমজীবী মানুষের ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিটকে’ একরকম হার মানিয়ে দিয়েছে। স্বাধীনতা পৃর্ব ও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এত দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলন সংগঠিত হয়নি।

স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমিতে নীল বিদ্রোহ, হুল বিদ্রোহ ও সাঁওতাল বিদ্রোহের মত দুর্বার কৃষক আন্দোলনের ঘটনা ঘটেছে ঠিকই। এমনকি মুম্বাইয়ে শ্রমিক আন্দোলনের মত ঘটনা ঘটেছে ঠিকই। কিন্তু ২৬ নভেম্বর থেকে এ যাবত পর্যন্ত একমাস সময় ধরে দুটো বনধ, রাস্তা অবরোধ, রিলে অনশন , প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিজের বুকের রক্ত দিয়ে পাঞ্জাবের কৃষকদের চিঠি লিখে প্রেরণ করার মতো ঘটনা ঘটেছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ কেউ কৃষক-ক্ষেতমজুরদের মনোবল ভেঙে দিতে সক্ষম হননি। নতুন করে মহারাষ্ট্রের মুম্বই ও নাসিক থেকে দিল্লির দিকে দফায় দফায় মহামিছিল ঢুকছে। কৃষক-ক্ষেতমজুরদের একটাই কথা, যতক্ষণ পর্যন্ত কৃষি আইন প্রত্যাহার না করা হবে, বিক্ষোভ- আন্দোলন লাগাতার চলবে। আন্দোলনের রেশ এতটাই শক্তিশালী যে , পশ্চিমবঙ্গ সহ পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি মশাল মিছিল শুরু করে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যেই কৃষক- ক্ষেতমজুরদের জাঠা হয়ে গেছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে ভারতে কৃষক- ক্ষেতমজুর বিক্ষোভ কিন্তু সর্বাত্মক। কিন্তু কেন? ভারত সরকারের কৃষি আইন কি খুব ভয়ঙ্কর? চলুন এবার একটু সেই দিকেই যাওয়া যাক।

কৃষি আইন- ২০২০ বিজেপি সরকার চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশ করিয়ে নেন। এই বিলের মধ্যে এমন কতগুলো দিক রয়েছে যেখানে কৃষক তার মন মতো ফসল ফলাতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে দেশি- বিদেশি সংস্থা যা করবে কৃষককে তা মেনে নিতে হবে, ভারত সরকারে কৃষক স্বার্থবাহী স্মামীনাথন কমিটির সুপারিশ মোতাবেক নূন্যতম সহায়ক মূল্যে কৃষক তার ফসল বিক্রি করতে পারবেন না, ক্ষেত মজুর তার কাজ হারাবেন, ধান-চাল-গম-সরিষা-গম-সব্জি-ইত্যাদি অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকার মধ্যে থাকছে না, কৃষি উপকরণগুলির দাম কমছে না। এর ফলে কৃষি ও কৃষককে চলতে হবে সংস্থাগুলির অঙ্গুলি হেলনে।

কৃষিতে পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনা বা কৃষিতে যে সবুজ বিপ্লবের বিষয়টি ছিল তা আর থাকছে না। ভারতের মতো বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশে আশি শতাংশের বেশি মানুষ কৃষির উপর নির্ভর শীল। কিন্তু সেই কৃষি ব্যবস্থা চলে যাবে কর্পোরেট লবির হাতে। কৃষি মার খাওয়া মানেই জিডিপি তলানিতে ঠেকবে। এই জায়গায় ভারতের কৃষক ও ক্ষেতমজুর সমাজ উপলব্ধি করছেন যে, এই কৃষি আইন আদানি আম্বানিদের জন্য । কৃষক ও ক্ষেতমজুর সমাজকে কার্যত নরকে পাঠাবে। তাই লড়াই – আন্দোলনই তাদের কাছে একমাত্র পথ। জানি না এর শেষ কোথায়?

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!