খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  রাঙামাটির সাজেকে শ্রমিকবাহী মিনি ট্রাক পাহাড়ের খাদে পড়ে ৯ জন নিহত

ভাঙনরোধের জিওব্যাগেও ভেজাল-ওজন কম!

দাকোপ প্রতিনিধি

ভাঙন বন্ধ করতে তৈরী করা জিওব্যাগে বালির পরিবর্তে কাদামাটি ও ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ওই ভেজাল বস্তার পরিমাণে কম পাওয়া গেছে। এ ঘটনা স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। খুলনার দাকোপ উপজেলায় ৩২ পোল্ডারের ১২টি পয়েন্টে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের এ কাজ চলছিল।

বৃহস্পতিবার (২৫) ওই বাঁধ এলাকার কাজ পরিদর্শন করেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাসসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালীপনা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতা ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সমন্বয়হীনতায় কাজের মান খারাপ হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, জেলার দাকোপের ৩২নং পোল্ডারের ১২টি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দেওয়ায় সেখানে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধের কাজ চলছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৩২ ও ৩৩ নং পোল্ডারে মোট ব্যয় হবে ৪০ কোটি টাকা। কিন্তু পয়েন্ট গুলো পরিদর্শনে গেলে নানা অনিয়মের চিএ ধরা পড়ে। জিও ব্যাগে ২৮০ কেজি বালি দেয়ার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। স্থানীয়রা ওজন দিয়ে দেখেছেন সেখানে বস্তার ওজন ১৮৫ কেজি- ২৫০ কেজি বালি পাওয়া গেছে। এছাড়া কাঁদাবালির নমুনা পাওয়া গেছে। বস্তা গণণায়ও রয়েছে শুভংকরের ফাঁকি।

মূল ঠিকাদারকে না পাওয়া গেলেও বিপ্লব নামের একজন সাব কন্টাকটর দায়িত্ব পালন করছিলেন।

 উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল হোসেন পরিদর্শনের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, সেখানে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। ঠিকমত জিওব্যাগ তৈরী না হলে  ভাঙন প্রতিরোধ করা যাবে না। তাই তাদের কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি।

ভুক্তভোগীরা জানান, ৩২নং পোল্ডারটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। ১২ টি পয়েন্ট এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে এসব পয়েন্ট ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। চরম বিপদাপন্ন পোল্ডারটি ঘিরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর তদারকি  দায়সারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে নির্মাণের পর পরই দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। রাস্তার পাশ ঘেসে মাটি কাটা, পূনরায় সেসব জায়গায় নতুন করে ঘরবাধা নিয়মে পরিণত হয়েছে! মাটির সাথে বালি মিশানোর ফলে বৃষ্টির সাথে সাথে এসব রাস্তায় যত্রতত্র বৃষ্টির পানি জমে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও ধ্সে পড়তেও দেখা গেছে।

অপরদিকে ৩২ নং পোল্ডারে এখনো গাছ লাগানো বাকি রয়েছে অনেকটা। কবে হবে জানা নেই কারোও। ১২টি পয়েন্টে কতগুলো জিওব্যাগ পড়বে তা বলতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। কালাবগীর একটি পয়েন্টে নতুন রাস্তা ছিদ্র করে লবণ পানি তোলার দৃশ্য দেখা গেছে। ব্লক দিয়ে বাঁধ রক্ষার বিষয়টিও আলোর মুখ দেখেনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী গোপাল দত্তকে বিষয়টি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করে এলাকাবাসী। এসব জায়গা গুলো দেখার জন্য কমিটি করে দেয়া হয়।

খুলনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, বালির বস্তা গণনায় অনিয়ম, বস্তায় ওজনে বালির পরিমাণ কম দেওয়া ও কাদাযুক্ত বালি ভর্তি করার বিষয়টি প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে সাব ঠিকাদারের কাজ বাতিল করা হয়েছে। আমরা সিডিউল অনুযায়ী কাজ শুরু করেছি।

এ ব্যাপারে জাতীয় সংসদের হুইপ  ও স্থানীয় সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস বলেন, ওই কাজে আর অনিয়ম হবে না। পাউবোর কর্মকর্তারা  নিয়মিত কাজ তদারকির করার  প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!