খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬ ডিগ্রি, খুলনায় ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে
  চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় হিট স্ট্রোকে ২ জনের মৃত্যু
  দাবদহের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ল ৫ দিন, খুলবে ২৮ এপ্রিল

বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোরআন হাতে লিখেছেন সাতক্ষীরার হাবিবুর রহমান

রুহুল কুদ্দুস, সাতক্ষীরা

ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়, সেটি আবারও প্রমাণ করলেন সাতক্ষীরা উদ্যমী যুবক মোঃ হাবিবুর রহমান। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী না হয়েও নিজ হাতে আরবি ভাষাতে কোরআন শরীফ লিখেছেন, যেটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাতে লেখা কোরআনে কারিম বলে দাবি করেছেন তিনি। যা আকারে ৩৩৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ২৬৪ সেন্টিমিটার।

দীর্ঘ ৬ বছর ৮মাস ২৩ দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১৪২ পাতায় লিখেছেন ৬ হাজার ৬৬৬ টি আয়াত। সূরা বা পারা কলামের যেখানে শেষ হয়েছে সেই কলামের বাকি অংশে লেখা হয়েছে আল্লাহর নাম। মার্জিন ও পেইজ ডিজাইনের জন্য মধুর এ নামটি এসেছে তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার বার। ৩০ পারার ঝকঝকে হরফে লেখা ১১৪ টি সূরা’র এই কোরআন দেখে বোঝার উপায় নেই এটি ছাপা, না হাতে লেখা। দিন-রাত পরিশ্রম করে পুরো কোরআন হাতে লিখে দীর্ঘ দিনের ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিলেন মোঃ হাবিবুর রহমান।

হাবিবুর রহমানের বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশপোল এলাকায়। তার বাবা মোঃ আজিজুর রহমান। হাবিবুর ২০০৩ সালে সাতক্ষীরা পিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন, ২০০৫ সালে এইচএসসি ও পরবর্তীতে এলএলবি সম্পন্ন করেন। জীবনে কখনও মাদ্রাসায় না যেয়েও ইউটিউব দেখে আয়ত্ব করেছেন আরবিসহ কয়েকটি ভাষা। মানবতার জন্য কিছু করার ইচ্ছা থেকেই তিনি পুরো কোরআন হাতে লিখেছেন।

কেন তার এই প্রচেষ্টা? এমন প্রশ্নের জবাবে মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, ২০১৩ সালের দিকে তিনি সাতক্ষীরা শহর সমাজসেবা অফিসে কম্পিউটার ইনস্ট্রাকটর হিসেবে কাজ করতেন। সে সময় সমাজের অসহায় অবহেলিত গরীব মানুষের দূরবস্থা দেখে তাদের পাশে থেকে চিকিৎসা সেবার জন্য কিছু একটা করার আগ্রহ জাগে। তখন থেকে তিনি চিন্তা করেন এমন কিছু করবে যেটি বিশ্ব রেকর্ড করবে। সেই চিন্তা থেকেই তার মাথায় আসে বিশ্বের সব চেয়ে বড় কোরআন তিনি হাতে লিখবেন।

তিনি বলেন, জীবনে কখনও মাদ্রাসায় যাননি তিনি, ইউটিউব দেখে আয়ত্ব করেছেন আরবিসহ কয়েকটি ভাষা। মহান আল্লাহর বাণীকে ভালোবেসে সেই বিদেশী ভাষাতেই নিজের হাতে লিখেছেন মহাগ্রন্থ আল কোরআন। শুধু লেখা নয় তিনি নিজ সাধনায় মুখস্ত করেছেন কোরআনের দুইটি পারাও। এবার মানবতার জন্য কিছু করতে চান তিনি।

তিন হাজার চারশ আটটি আর্ট পেপারের সমন্বয়ে মোট ১৪২ টি পাতায় লেখা এ কোরআন শরীফের ওজন হয়েছে ৪০৫ কেজি। আকারে ৩৩৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ২৬৪ সেন্টিমিটার। লাল, নীল, সবুজ ও কালো রঙের চারটি কলাম শোভা বাড়িয়েছে ঐশি বাণীর। সূরা বা পারা কলামের যেখানে শেষ হয়েছে সেই কলামের বাকি অংশে লেখা হয়েছে আল্লাহর নাম। মার্জিন ও পেইজ ডিজাইনের জন্য মধুর এ নামটি এসেছে তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার বার।

হাবিবুরের মা ফিরোজা পারভীন জানান, ২০১৬ সালের পহেলা জানুয়ারীতে আমার ছেলে এই পবিত্র কোরআন হাতে লেখা শুরু করে এবং এ বছরের ২৩ শে সেপ্টেম্বর সম্পন্ন করে। অতিরিক্ত পরিশ্রম করে সারা রাত জেগে সে এই কোরআন শরীফটি নিজের হাতে লিখেছে। এমন অনেক দিন গেছে সারা রাত জেগে লিখে তার পরে ফজরের নামাজ আদায় করে ঘুমাতে গেছে। সন্তানের এমন ভাল কাজের বিনিময়ে মহান রাব্বুল আলামিন যেন তার সন্তানের জীবনে আরও ভাল কিছু করেন এমনটায় দোয়া করেন তিনি।

এদিকে, আরবি ভাষায় অভিজ্ঞ আলেমরাও তার কোরআন পড়ে নির্ভুল বলেছেন। প্রশংসা করেছেন তার এমন উদ্যোগের।

সাতক্ষীরা আশাশুনি খরিয়াটি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আজিজুর রহমান বলেন, মহাগ্রহন্থ কোরআনুল কারিম বৃহতাকারে তিনি লিখছেন। আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন আয়াত তেলাওয়াত করেছি এবং দেখেছি এগুলো অতি সুন্দর এবং নির্ভুল ভাবে লেখা হয়েছে। তাতে করে আমি মনে করি, গোটা কোরআন লেখাটা নির্ভূল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!