বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ২০১৬ সালে সাইবার হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরির ঘটনা তদন্ত করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমানসহ ব্যাংকের নেতৃত্বে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপরও এই তদন্ত হবে।
দুকের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, দুদকের স্ক্রুটিনি সেল একটি তদন্ত নথি প্রস্তুত করে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তদন্ত কাজ শুরু করবে।
দুদকের একজন মহাপরিচালক বলেন, ‘গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও দুদকের গোয়েন্দা ইউনিট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা এই ঘটনার সঙ্গে দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করেছি।’
ড. আতিউর রহমান ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্তত ১০-১২ জন সাবেক ও বর্তমান জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে তদন্তের আওতায় আনা হবে। এর মধ্যে একজন নির্বাহী পরিচালক, একজন মহাব্যবস্থাপক, চারজন যুগ্ম পরিচালক, তিনজন উপ-মহাব্যবস্থাপক এবং দুইজন উপ-পরিচালক রয়েছেন।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের ফেডারেল রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি করে জালিয়াতির মাধ্যমে। তাদের লক্ষ্য ছিল ১ বিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেওয়া।
ফিলিপাইনে স্থানান্তরিত ৮১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে প্রায় ১৮ মিলিয়ন ডলার এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
এ ঘটনা তদন্তের সময় পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল যে, এই সাইবার হামলায় ড্রাইডেক্স ম্যালওয়্যার ব্যবহৃত হতে পারে।
২০১৬ সালের ১৫ মার্চ ঘটনার ৩৯ দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক জুবায়ের বিন হুদা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মতিঝিল থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত ভার অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দেওয়া হলেও তারা এখন পর্যন্ত তা শেষ করতে বা আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের জন্য ব্যবহৃত সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফিনান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন (এসডাব্লিউআইএফটি) সার্ভার অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি সিস্টেম। তারপরও তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান এই সার্ভারের সঙ্গে রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) সিস্টেম সংযুক্ত করার অনুমোদন দিয়েছিলেন।
তদন্তকারীরা এই সিদ্ধান্তকে অপরাধমূলক বলে চিহ্নিত করেছেন। আরটিজিএস এমন একটি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর মধ্যে তাৎক্ষণিক অর্থ স্থানান্তর করা সম্ভব হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম