খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ | ২৯ মার্চ, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এসবির রিপোর্টার নিহত
  চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে
'যশোরে আমার নাড়ির টান আছে'

বাংলাদেশের ব্যাংকে টাকা নেই, এমন দাবি মিথ্যা: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রক্ত ও হত্যা ছাড়া বিএনপি আর কিছু দিতে পারেনি। তারা শুধু পারে মানুষের রক্ত চুষে খেতে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে দেশে লুটপাট হয়েছে। আওয়ামী লীগ ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে বলেই দেশের এত উন্নয়ন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) যশোরে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের রিজার্ভ কোথাও যায়নি। মানুষের কাজে লেগেছে। বাংলাদেশের ব্যাংকে টাকা নেই, এমন দাবি মিথ্যা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থল বন্দের ট্রাক রাখার জায়গা ছিল না। বেনাপোলকে অটোমেশন করে দিয়েছি। মধুমতি সেতু করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালে যশোর-নড়াইল যোগাযোগে সড়ক করা হয়। পদ্মাসেতুর কারণে সহজে যশোর-ঢাকা যাতায়াত করা যাচ্ছে। যশোর বিমানবন্দর আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এখন শুধু ঢাকায় নয়, যশোর থেকে কক্সবাজার যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হচ্ছে। কর্মসংস্থান ব্যাংক করা হচ্ছে। ফ্রিলাঞ্চারদের জন্য রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ করে দিয়েছি। কেউ বেকার থাকবে না, কিছু না কিছু করবে সেই সুযোগ আ’লীগ সরকার করে দিয়েছে। ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে যশোরে চলে আসবে রেল লাইনে সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। যশোরে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল করা হয়েছে। রোগী অনুযায়ী স্বাস্থ্যকম্পেলেক্সে আসন বাড়ানো হয়েছে।

উন্নত দেশ কিন্তু ফ্রিতে করোনা ভ্যাকসিন দেয়নি, টাকা দিয়ে নিয়েছে। আমরা কিন্তু ফ্রিতে দিয়েছি। রিজার্ভ মানুষের কাজে লেগেছে। তম, ভুট্টা, সার সবকিছুর দাম বেড়েছে। একইঞ্চি জমি যেন অনাবাদী না থাকে। সেইভাবে যার যেখানে জমি আছে উৎপাদন করেন। যশোরের বিভিন্ন অবকাঠামোর উন্নয়ন করেছি।

তিনি বলেন, হতদরিদ্র ২৫ ভাগ ছিল, আমরা ১০ ভাগে নামিয়ে এনেছি। এদেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম বেড়েছে। আমাদের দেশেও খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। তবুও যাদের কিছু নেই তাদের ফ্রিতে ৩০ কেজি চাল দিয়েছি। ভবদহ অঞ্চলের মানুষের জলাবদ্ধতাদূরীকরণের ব্যবস্থা নিয়েছি। নদীর নাব্যতা ফিরে পায় সেই ব্যবস্থা করে দিব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যশোরে নাড়ির টান আছে। আমার নানা জহুরুল হক যশোরে চাকরি করতেন। আমার নানা যশোরের মাটিতেই শুয়ে আছেন। সেই জন্য তার নামে দারিদ্র্য বিমোচমের জন্য জহিরুল ইসলাম ট্রেনিং সেন্টার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গুজবে কান দিবেন না। বিএনপির কাজই হচ্ছে গুজব ছড়ানো। আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষের কল্যানে কাজ করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিচার পাওয়ার অধিকার আমার ছিল না। বাবা-মা-ভাই-বোন সবাইকে হারিয়েছি। তারপরও এ বাংলায় ফিরে এসেছি। বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই ছিল আমার লক্ষ্য। মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে বিএনপি নিজেদের উন্নয়ন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) কিছুই দিতে পারে না, শুধু পারে মানুষের রক্ত চুষে খেতে। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

রিজার্ভ নিয়ে সমালোচকদের জবাব দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘অনেকে এখন রিজার্ভ নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা করছে। অথচ আমাদের সরকার রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাণ বাড়িয়েছে। আর কোনো সরকার রিজার্ভ বাড়াতে পারেনি। পর্যাপ্ত রিজার্ভ হাতে রেখেই সব কাজ করছি আমরা। রিজার্ভের কোনো সমস্যা নেই, আমাদের সব ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা আছে। সামনের দিনেও কোনো সমস্যা হবে না।’

তিনি বলেন, ‘রিজার্ভ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমালোচনা শুনছি। অনেকে প্রশ্ন করেন, রিজার্ভ গেল কোথায়? আমরা তো রিজার্ভ অপচয় করিনি। মানুষের কল্যাণে কাজে লাগিয়েছি। জ্বালানি তেল কিনতে হয়েছে, খাদ্যশস্য কিনেছি। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। করোনার টিকা ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছি। এসব কাজে রিজার্ভ থেকে খরচ করতে হয়েছে আমাদের। কারণ আমরা সবসময় মানুষের কথা চিন্তা করে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যশোরে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, মেডিকেল কলেজ, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করে দিয়েছি।

কোনো মানুষ ভূমিহীন থাকবে না, ঠিকানাহীন থাকবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যখন ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসি, তখন থেকে সিদ্ধান্ত নিই একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না। এবার আমরা ক্ষমতায় এসে ভূমিহীনদের ঘর তৈরি করে দিয়েছি। তাই ৩৫ লাখ মানুষকে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। ঘর পেয়ে মানুষের জীবন পাল্টে গেছে। জাতির পিতার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেছি।

তিনি বলেন, কারও জমি যেন অনাবাদি না থাকে। প্রত্যকটা জমি আবাদ করতে হবে। যাতে করে আমাদের খাদ্য ঘাড়তি না হয়। কারও কাছে হাত পাততে না হয়। কারো কাছে চেয়ে চলতে না হয়। যার কাছে যা আছে তা দিয়ে কিছু উৎপাদন করেন। একটা মরিচ গাছ লাগান, একটা লাউ গাছ লাগান, সিম গাছ লাগান। এখানে মা-বোনেরা আছেন। তাদের কাছে এটাই আহ্বান আমার।

সরকারপ্রধান আরও বলেন, আপনারা নৌকা মার্কা ভোট দিয়ে আমাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আগামীতে নৌকা মার্কা ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন কি না ওয়াদা চাই। আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন।

এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, সম্পাদক মন্ডলী সদস্য ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সামছুন্নাহার চাপা, কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, ইকবাল হোসেন অপু, আনিসুর রহমান, মেরিনা জাহান কবিতা ও পারভিন জামান কল্পনা।

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের পরিচালনায় জনসভায় বক্তব্য রাখেন বাগেরহাট-১ (চিতলমারী, মোল্লাহাট, ফকিরহাট) আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

এর আগে দুপুর ২টা ৩৮ মিনিটে তিনি যশোর শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে জনসভা মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। মঞ্চে উঠে তিনি হাত নেড়ে জনসভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। এ সময় উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীরা স্লোগান দেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!