খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চট্টগ্রামে পটিয়ায় বাস-সিএনজি অটো রিকশা সংঘর্ষে নিহত ২
  রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
  জাতীয় পতাকার নকশাকার, জাসদ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন

পাগলা মসজিদের সিন্দুকে মিললো রেকর্ড ৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা

গেজেট ডেস্ক

কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের সিন্দুক ১১৮ দিন পর আবারও খোলা হলো। এবার মসজিদের ৮টি দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় ১৯ বস্তা টাকা। সারাদিন গণনা শেষে যার অঙ্ক দাঁড়ায় ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা। যা এ যাবৎ কালের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।

সিন্দুক খোলা উপকমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এটিএম ফরহাদ চৌধুরী সন্ধ্যার পর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ৭ জানুয়ারি খোলা হয়েছিল মসজিদের সিন্দুক। তখন পাওয়া গিয়েছিল ৪ কোটি ১৮ লাখের বেশি টাকা।
এ বছর টাকা গুনতে দুই শতাধিক লোকের লেগে যায় ১১ ঘণ্টা সময়। জেলা প্রশাসনের এ কর্মকর্তা আরো জানান, কেবল টাকা নয়, উল্লেখযোগ্য পরিমান সোনা-রূপার গহনা, ডলার, পাউন্ড, রিয়ালসহ বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রাও পাওয়া গেছে সিন্দুকে। টাকার অঙ্কে এগুলোর দাম কত, তা পরে নির্ণয় করা হবে।

আজ শনিবার সকাল ৮টায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে, বেশ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কড়া নিরাপত্তায় খোলা হয় কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের সিন্দুক। টাকাগুলো রাখতে লেগে যায় ১৯টি বস্তা। সাধারণত ৯০ থেকে ৯৫ দিনের মধ্যে ভরে যায় সিন্দুকগুলো। এ কারণে তিন মাস পর পর খোলা হয় এগুলো। তবে রোজার কারণে এবার ১১৮দিন বা চার মাস পর খোলা হয় সিন্দুক। তাই মসজিদের সব রেকর্ড ছাপিয়ে এবার মিলল ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা।

বেলা ১১টার দিকে মসজিদে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় উৎসবমুখর পরিবেশ। সবাই মগ্ন টাকা গণনার কাজে। টাকার বস্তা ঢেলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাছাইয়ের কাজে লেগে যায় সবাই। কেউ হাজার টাকা, কেউবা পাঁচশ টাকা, কেউ আবার ১০০ টাকাসহ বিভিন্ন ধরণের নোটগুলো বাছাইয়ে হাত লাগায়। পরে এগুলো পাঠিয়ে দেওয়া হয় সামনে বসা ব্যাংকের লোকজনের কাছে। সেখান থেকে এগুলো যেতে থাকে যেতে থাকে টাকা গণনার মেশিনে। পরে এগুলো বেঁধে স্তুপাকারে রাখা হয়। এভাবে বস্তার পর বস্তা টাকা গোনার কাজ এগিয়ে চলে। দুপুরের দিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ টাকা গণনার কাজ পরিদর্শন করে যান।

জানা গেছে সর্বশেষ জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে খেলা হয়েছিল সিন্দুক তখন পাওয়া যায় ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। এর আগে গত বছরের অক্টোবর মাসের ১ তারিখ খোলা হয়েছিল সিন্দুক। সেদিন পাওয়া যায় তিন কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা। ২ জুলাই সিন্দুকে পাওয়া যায় তিন কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ বলেন, দেশ পেরিয়ে দেশের বাইরেও পাগলা মসজিদের সুনাম ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে দিন দিন দানের পরিমাণ বেড়েই চলছে। এ মসজিদে মানুষের দানের দৃশ্য চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। রীতিমতো লাইন ধরে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে লোকজন এখানে দান করেন।

পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, দানের টাকাগুলো এখন ব্যাংকে জমানো হচ্ছে। এটা টাকা দিয়ে পাগলা মসজিদ ক্যাম্পাসে একটি আন্তর্জাতিকমানের দৃষ্টিনন্দক ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। মুসল্লিদের জন্য সবধরণের সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে। এতে ৬০ হাজার লোক একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবে। এতে প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। প্রকল্পের প্রাথমিক কাজকর্ম চলছে। এগুলো শেষ হলে মূলকাজ হাতে নেওয়া হবে।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!