খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  রাঙ্গামাটির সাজেকের উদয়পুর সড়কে ট্রাক খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত
  চাঁদপুরের হবিগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে মা ও শিশুর মৃত্যু
  নাটোরের সিংড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি-সম্পাদককে দল থেকে অব্যাহতি

পাকা ধান তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক, শ্রমিক সংকটে মাঠে নারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জে ইরি-বোরো মৌসুমে পাকা ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। ধান পাকলেও শ্রমিকের অভাবে বিপাকে পড়েছেন জেলার কৃষকরা। দ্বিগুণ পারিশ্রমিক দিয়েও মিলছেনা ধান কাটা শ্রমিক। বর্তমানে এ জেলায় ধানকাটা শ্রমিকের মূল্য ৮ শ টাকা থেকে হাজার টাকা। সেই সাথে দু বেলা খাবারও দিতে হচ্ছে। তারপরও মিলছেনা ধান কাটা শ্রমিক। ফলে নতুন ধান ঘরে আসার সম্ভাবনাতেও হাসি নেই কৃসকের মুখে। এমন সময়ে পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি ঘরে বসে নেই নারী শ্রমিকেরাও। তারাও পুরুষ শ্রমিকের সাথে তাল মিলিয়ে ধান কাটা, মাড়াই করাসহ সকল কিছু সমানে সমান করে যাচ্ছে নারীরা।

গোপালগঞ্জ জেলায় ৮১ হাজার ২শ ২৯ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ হয়েছে। উপাদনও ভাল হয়েছে। কৃষক এইসব ধান ঘরে তুলতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। প্রখর তাপ উপেক্ষা করে ভোর ৫ টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত গামছা কাধে ও কাস্তে হাতে ধান কাটা থেকে মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক। আসন্ন ঘুর্নিঝড় ও জোয়ারের পানি খেত মালিকদের আরও ব্যাস্ত করে তুলেছে। তাদেরকে ঝড়-বৃষ্টির আগেই খেতের পাকা ধান ঘরে তুলতে হবে। কিন্তু এখন চরম সংকট চলছে শ্রমিকের। দ্বিগুণ পারিশ্রমিক দিয়েও শ্রমিক না পেয়ে বাধ্য হয়ে পরিবারের পুরুষ ও নারী সদস্যরা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। মাঠের পর মাঠে পাকা ধান বাতাসে দুলছে। এ দুলুনিতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ। যা কৃষক কোন ভাবেই দুশ্চিন্তা মুক্ত হতে পারছেনা।মাঠ ভরা পাকা ধান নিয়ে কৃষক নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

বোড়াশী গ্রামের নাজমা বেগম বলেন, শ্রমিক সংকট ও মজুরি বেশী হওয়ায় তারা কষ্ট করে নিজেরাই জমিতে ধান কাটছেন। তিনি তার নাতনী হাসনা খানমকে সাথে নিয়ে জমিতে ধান নিজেরাই কাটছেন। অধিকমূল্যে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটালে তাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। তাই লোকসান হওয়ার আশংকায় নিজেরাই কষ্ট করে ধান কাটছেন।

ধান কাটা শ্রমিক মোহাম্মদ আলী বলেন,ভোর ৭টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ধান কাটা এবং মালিকের বাড়িতে ধান পৌছে দেয়ার কাজ করে দিনে ৯ শ টাকা পান। সাথে দু’বেলা খাবার।এই উচ্চমূল্যের বাজারে জমির মালিকরা এই পারিশ্রমিককে বেশি বললেও এ উপার্জনে সংসার চালাতে কষ্ট হয়।

ধান উৎপাদনকারী জমির মালিকরা বলছেন, এখন ধান কাটার পুরো মৌসুম চলছে। চাষাবাদের তুলনায় শ্রমিকের সংখ্যা অনেক কম। চাষাবাদ ঠিকঠাক করতে পারলেও ধান কেটে ঘরে তোলা শ্রমিক সংকট এবং মজুরি বেশী। বাইরের জেলার কৃষি শ্রমিকরা এখানে এসে ধান কেটে দেন। শ্রমিক সংকটকে পুজি করে শ্রমিকরা আগের তুলনায় মজুরি বেশী নিচ্ছেন। শ্রমিক সংকটের কারন হিসেবে তারা দেশের যুব শ্রমিকদের বিদেশ গামীতাকে দায়ী করেছেন। অধিকমূল্যে শ্রমিক নিয়ে ধানের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়ে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকআব্দুল কাদের সরদার শ্রমিক সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, এবছর জেলায় উচ্চ ফলনশীল ও উপসি জাতের ৮১ হাজার ২২৯ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৪৭ হাজার হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে।বাকী ধান আগামী সপ্তাহের মধ্যে কৃষকের গোলায় তুরতে পাবেন।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!