সাতক্ষীরায় প্রেমিকার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়তে রাজী না হওয়ায় বিয়ের পূর্বের অন্তরঙ্গ ছবি ফেইসবুকে ও স্বামীর মোবাইল ফোনের হোয়াটস আ্যপে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ ( সামেক) হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ ইকবাল মাহমুদ পিয়ালকে পর্নোগ্রাফি আইনে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২০ জুন) সকালে তাকে সাতক্ষীরা শহরের শহিদ আলাউদ্দিন চত্ত্বর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ইকবাল মাহমুদ সোমবার বিকালে সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম সালাহউদ্দিন এর কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
মঙ্গলবার (২১জুন) দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম জিয়ারুল ইসলাম এর আদালতে তার জামিনের আবেদন জানালে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, যশোর জেলার কোতোয়ালি থানাধীন চাঁচড়া ডাল মিল এলাকার ও বর্তমানে সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুরের বাসিন্দা এক দন্ত চিকিৎসক নারীর সঙ্গে সাতক্ষীরা শহরের উত্তর কাটিয়া এলাকার কামালউদ্দিনের ছেলে সামেক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: ইকবাল মাহমুদ পিয়ালের সঙ্গে কয়েক বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্কের জের ধরে ডা: ইকবাল মাহমুদ পিয়াল ওই নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ধারণ করে রাখেন।
ওই নারী ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে ইকবাল মাহমুদকে বিয়ে করতে বলায় তিনি রাজী হননি। একপর্যায়ে ওই নারীকে পরিবারের পক্ষ থেকে নারায়ানগঞ্জ জেলা সদরের অধ্যক্ষ খগেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী রোডের বাসিন্দা এক চিকিৎসকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে ডা: ইকবাল মাহমুদ পিয়াল এক ডাক্তারকে বিয়ে করেন। তাদের একটি সন্তানও রয়েছে।
মামলার বিবরণে আরও জানা যায়, পেশাগত কারণে সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুরে অবস্থান করায় ডা: ইকবাল মাহমুদ পূর্বের প্রেমিকা দন্ত চিকিৎসককে তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য প্রায়ই তার উপর চাপ সৃষ্টি করতেন। পিয়ালের প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় বিয়ের পূর্বেকার তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের তোলা ছবি ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া ও তার স্বামীর কাছে দেওয়ার হুমকি দেন ডাঃ ইকবাল মাহমুদ। এরই ধারাবাহিকতকায় ডা: ইকবাল মাহমুদ তার নিজ মোবাইল ফোন থেকে ওই দন্ত চিকিৎসক নারীর সঙ্গে বিয়ের পূর্বের তার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তার স্বামীর হোয়াটস অ্যাপ এ পাঠিয়ে দেন।
বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে রোববার ওই নারী বাদি হয়ে ডা: ইকবাল মাহমুদের নাম উল্লেখ করে ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি আইনের ৮(১), ৮(২) ও ৮(৩) ধারায় সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক পিন্টু লাল দাস সোমবার সকালে দিকে শহরের শহীদ আলাউদ্দিন চত্ত্বর থেকে ওই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করে বিকালে তাকে আদালতে পাঠান।
সাতক্ষীরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক পিন্টুলাল দাস জানান, গ্রেপ্তারকৃত ডা: ইকবাল মাহমুদ সোমবার আদালতে বিচারিক হাকিম সালাউদ্দিনের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মোঃ মাহমুদ হোসেন জানান, মঙ্গলবার ডাঃ ইকবাল মাহমুদের পক্ষে তার আইনজীবী আলমগীর হোসেন বাপ্পি জামিন আবেদন করলে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম জিয়ারুল ইসলাম তার জামিন আবেদন না’মঞ্জুর করেন।