খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬ ডিগ্রি, খুলনায় ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে
  চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে প্রাণ গেল ১ জনের
  দাবদহের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ল ৫ দিন, খুলবে ২৮ এপ্রিল
দু’জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট

নয় মাসের সিআইডি তদন্তে উদঘাটিত হল নুরুন্নাহার হত্যা রহস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে জামাল ও নুরুন্নাহার। আর্থিক কারণে তাদের এ সম্পর্কের মধ্যে ফাঁটল ধরে। নুরুন্নাহার মাঝে মধ্যে টাকা পয়সার জন্য জামালকে অপমান অপদস্ত করত। দীর্ঘ টানাপোড়নের একপর্যায়ে নুরুন্নাহারকে হত্যার পরিকল্পনা করে সে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২২ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮ টায় জামাল ও ফারুক মহাজন নামে দু’ব্যক্তি হত্যা করে নুরুন্নাহারকে । আদালতে দাখিলকৃত চার্জশিটে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

চার্জশিট সূত্রে জানা যায়, আসামি জামাল খুলনা নিউ মার্কেট এলাকায় মানুষের ক্রয় করা মাছ কেটে জীবিকা নির্বাহ করত। ওই এলাকার ইয়াছিন শেখের মাধ্যমে ভিকটিমের সাথে পরিচয় হয় জামালের। নুরুন্নাহার ও তার বোন প্রায়ই জামালের মাধ্যমে ঐ এলাকার বিসমিল্লাহ হোটেলে খাওয়া দাওয়া করত। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

নুরুন্নাহারের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নারী লোভী জামাল অর্থের বিনিময়ে তার সাথে বিভিন্ন স্থানে সময় কাটাতে শুরু করে। অবৈধ এ সম্পর্কের কথা বলে নুরুন্নাহার একপর্যায়ে জামালকে ব্লাকমেইল করতে থাকে। টাকা না দিলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতো জামালকে।

এক পর্যায়ে অক্টোবর মাসে জামাল নুরুন্নাহারকে খুন করার পরিকল্পনা করে। গ্রামের পরিচিত দুলাভাই ফারুক মহাজনকে বিষয়টি খুলে বলে সে। নুরুন্নাহারকে হত্যার জন্য ফারুক মহাজনকে ৫ হাজার টাকা দিতেও রাজী হয় জামাল।

পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২২ নভেম্বর জামাল সাইকেল নিয়ে নগরীর ৫ নং ঘাটে মামুর আস্তানায় গিয়ে ফারুক মহাজনের সাথে দেখা করে। সেখান থেকে সিমেন্টের বস্তা সেলাই করা সুতা সংগ্রহ করে। এরপর ফোন করা হয় নুরুন্নাহারকে। তারা তিনজন একসাথে ছাচিবুনিয়ার চৌরাস্তায় মিলিত হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী দোকান থেকে জুস, আপেল ও ঘুমের ঔষধ ক্রয় করা হয়। জুসে ঘুমের ঔষধ মেশানো হয়। যৌন মিলনের পর নুরুন্নাহারকে প্রথমে আপেল ও পরে জুস খাওয়ানো হয়। জুস খাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়লেই সিমেন্টের বস্তা সেলাই করা সুতা দিয়ে গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে নুরুন্নাহারকে হত্যা করা হয়। এরপর যে যার মতো বাড়ি চলে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা লবনচরা থানাধীন খুলনা–বাগেরহাট মহাসড়কের খোলাবাড়িয়া ডেসটিনির পরিত্যক্ত জমিতে লাশ দেখে থানায় খবর দেয়। পুলিশ লাশের সুরাতহাল রির্পোট তৈরি করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করেন।

এ ব্যাপারে নিহতের ছেলে ওই দিন লবনচরা থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা দায়ের করেন, যার নং ১৫। মামলাটি তদন্ত নিয়ে থানার এসআই শরীফুল আলম জামাল হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করলে পুলিশকে ৯২ হাজার টাকা ধরিয়ে দেয়। টাকার ব্যাপার জানতে চাইলে জামাল কোন উত্তর দিতে পারেনি। পরে মামলাটি খুলনা সিআইডির পরিদর্শক মোছাঃ মাহমুদা খাতুনের ওপর ন্যাস্ত হলে তিনি এ রহস্য বের করেন।

দীর্ঘ ৯ মাস পরে সিআইডি কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুন ভিকটিম নুরুন্নাহার হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে জামাল হাওলাদার ও ফারুক মহাজনকে আসামি করে রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) খুলনা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!