খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬ ডিগ্রি, খুলনায় ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে
  চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে প্রাণ গেল ১ জনের
  দাবদহের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ল ৫ দিন, খুলবে ২৮ এপ্রিল

দুই বন্ধুকে হারিয়ে নির্বাক

অধ্যাপক শেখ দিদারুল আলম

মনটা ভালো নেই। সকালে দু’টি মৃত্যু সংবাদে শোকে বিহ্বল। একজন ফুটবলার ও ব্যাংকার মোশাররফ হোসেন। আর একজন সাংবাদিক ও আবৃত্তিকার আবদুল মতিন। দুই জনই আমার বয়সের সিনিয়র। কিন্তু ছিলেন বন্ধু ও ঘনিষ্ঠজন।

প্রথমে মোশাররফ ভাইয়ের কথায় আসা যাক। মোশাররফ ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় আশির দশকে গোড়ার দিকে। তখন খুলনা সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লীগের ব্যাংকার্স ক্লাবের গোলকিপার। খুব অমায়িক ব্যবহারের অধিকারী ছিলেন তিনি। সহজেই সকলকে আপন করে নিতে পারতেন। হাসিখুশি এই মানুষটিকে কোন দিন রাগ করতে দেখিনি। দেখা হলে আগে সালাম দিতেন এবং কিছু না খাইয়ে ছাড়তেন না। জানতাম তিনি অসুস্থ। তবে এত অসুস্থ তা জানতাম না। বন্ধু ফুটবলার ইকবাল অসুস্থ। তার জন্য দোয়া চাইতাম। কিন্তু মোশাররফ ভাই এভাবে চলে যাবেন একবারও ভাবিনি। তার ভাইপো সাংবাদিক রুমি ও বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল তারকা বন্ধু শেখ মোহাম্মদ আসলামের নিকট থেকে ফোনের মাধ্যমে মোশাররফ ভাইয়ের ইন্তেকালের খবরটি শোনার মনে হলো নিজের ভাইকে হারালাম। খুলনা, বাংলাদেশ এবং বিশ্ব ফুটবলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সাথে আলাপ হতো। ব্যাংকার্স ক্লাবের সোনালী যুগের আমীর ভাই ও মজিদ ভাই ইতোমধ্যে আল্লাহর ডাকে বিদায় নিয়েছেন। চলে গেলেন মোশাররফ ভাইও। চিন্তা চেতনার মিল থাকায় অনেক কথা হতো। চলে গেলেন মোশাররফ ভাই। আমি হারালাম আমার এক বন্ধুকে আর খুলনাবাসী হারালো একজন প্রকৃত খুলনা প্রেমিককে।

এবার মতিন ভাইয়ের কথায় আসা যাক। মতিন ভাই আমার সিনিয়র হলেও সাংবাদিকতায় আসেন আমার পরে। কিন্তু সম্পর্ক ছিল খুব ঘনিষ্ঠ। একে অপরকে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারতাম। মতিন ভাই যতটা সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত তার চেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন বাংলাদেশ বেতারের শিল্পী হিসেবে। তিনি একাধারে কবি, আবৃত্তিকার, নাট্যকার,অভিনেতা ও রম্য রচনাকার। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই মানুষটিকে আমরা যথাযথ মর্যাদা দিতে পারিনি। আমাদের সমাজে টাকা না থাকলে অনেক সময় মূল্যায়ন হয় না। তিনি রাজনীতি সচেতন ছিলেন কিন্তু রাজনীতি নিয়ে বাড়াবাড়ি করতেন না।

মতিন ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় হয় তার বড় ভাই ফুড অফিসার সৈয়দ আবদুল মবিন ভাইয়ের মাধ্যমে। তিনিও সাহিত্যিক ছিলেন। তার আর এক ভাই এই মূহুর্তে নামটি মনে করতে পারছি না। সে ছিল চলচ্চিত্রের কাহিনিকার ও পরিচালক। তাদের গোটা পরিবার সাহিত্য ও সংস্কৃতি মনা। তার আপন খালাতো ভাই মরহুম কাজী রফিক বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিউজ চিত্রগ্রাহক ছিলেন। মতিন ভাই কষ্টে থাকলেও মুখে হাসি থাকতো। আমি পারিবারিক ও অফিসের কাজে ঢাকা থাকায় কারো জানাজায় উপস্থিত থাকতে না পেরে নিজকে সামলাতে পারছি না। হে আল্লাহ আমার দুই ভাইকে জান্নাতবাসী করুন।

(লেখক : খুলনা প্রতিনিধি, ইউএনবি ও যুগ্ম সম্পাদক, খুলনা গেজেট)

খুলনা গেজেট / আ হ আ




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!