খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ৭ নং দিঘলিয়া (দঃ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিতে বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য খেলা-ধূলার সামগ্রী স্থাপনে বাঁধা দিয়েছে অবৈধ দখলদাররা। এমনকি তারা স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নানা ধরনের ভয়-ভীতি ও দেখে নেওয়ারও হুমকি প্রদান করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান শনিবার (১৩ আগস্ট) দিঘলিয়া থানায় নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, ৭নং দিঘলিয়া (দঃ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য ২০২১- ২২ অর্থবছরে প্রাপ্ত বিদ্যালয়ের শিশুদের খেলাধুলার সামগ্রী (প্লেয়িং এক্সেসরিজ) বসানোর জায়গা নির্ধারণের জন্য বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মতামতের ভিত্তিতে বিদ্যালয়ের বাউন্ডারির ভিতর পশ্চিম পাশে খোলা জায়গায় উক্ত খেলাধুলার সামগ্রী বসাতে গেলে স্থানীয় খান আক্তারুজ্জামান, খান আসাদুজ্জামান, খান বাদল হোসেন ও খান মোস্তাফিজুর রহমান নামে চার ব্যক্তি ওই জমি তাদের দাবি করে বাঁধা প্রদান করেন । ঘটনাটি তিনি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খান নজরুল ইসলাম ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হায়দার আলী মোড়লসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবহিত করেন। তাদের পরামর্শে তিনি গত ২৩ জুলাই বিদ্যালয়ে একটি সভা আহবান করেন। সভায় বাঁধা প্রদানকারীরা স্কুলের জমিতে নির্ধারিত স্থানেই উক্ত খেলা-ধূলার সামগ্রী স্থাপনে সম্মত হন। সে মোতাবেক গত ৬ আগষ্ট নির্ধারিত স্থানে খেলা-ধূলার সামগ্রী স্থাপন করতে গেলে উল্লিখিত ব্যক্তিরা পূণরায় বাঁধা প্রদান করেন। এমনকি উক্ত জমির দাবিদার নিলুফা ইয়াসমিন তার ভাইদের নিয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খান নজরুল ইসলাম ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হায়দার আলী মোড়লসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে অপমানজনক আচরণ করেন। এমনকি গণ্যমান্য ব্যক্তিরা চলে গেলে জমির মালিকানা দাবিদাররা স্কুলের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে তাঁকে উচ্চস্বরে হুমকি দেন এবং মামলায় জড়িয়ে, উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা দ্বারা এবং সাংবাদিক দিয়ে তাঁকে হেনস্তা করার হুমকি প্রদান করেন। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক মো. সিদ্দিকুর রহমান জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মর্মে নিলুফার ইয়াসমিনসহ তাঁর অপর ৪ ভাইয়ের নামোল্লেখ করে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি)করেন।
প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান খুলনা গেজেটকে বলেন, জমির দাবিদার নিলুফার ইয়াসমিন আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ”আপনি স্কুলের শিক্ষক, এ সব বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে এমন ভাবে শিক্ষা দেবো টেরই পাবেন না। স্কুলে যাতে কোন অনুদান না আসে সে ব্যবস্থা করব। সাংবাদিক দিয়ে আপনাকে হেনস্থা করা হবে।”
এ ব্যাপারে নিলুফা ইয়াসমিন এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি খুলনা গেজেটকে বলেন, আমি প্রধান শিক্ষককে হুমকি দিতে যাব কি কারণে? তিনি বলেন, স্কুলের মোট সম্পত্তির ৩০ শতাংশ আমাদের পৌত্রিক সম্পত্তি যে সব নিয়ে আমরা কথা বলেছি। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র আমাদের কাছে রয়েছে।
এদিকে বিদ্যালয়টি নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে শনিবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, অভিভাবকবৃন্দ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে বিশেষ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি এম এ মজিদ ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এ মতবিনিময় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আগামী ১৬ আগস্ট বিদ্যালয়ের পূর্ব নির্ধারিত স্থানেই শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সামগ্রী স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
খুলনা গেজেট/ টি আই