খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  রাঙ্গামাটির সাজেকের উদয়পুর সড়কে ট্রাক খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত
  চাঁদপুরের হবিগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে মা ও শিশুর মৃত্যু
  নাটোরের সিংড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি-সম্পাদককে দল থেকে অব্যাহতি

দশ মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে স্বপ্ন ভেঙেছে কৃষকের

কয়রা প্রতিনিধি

স্বল্প সময়ে লাভজনক ফসল তরমুজ। গত বছরের তুলনায় এবার কয়রায় বেড়েছে এর চাষ। তবে মঙ্গলবার ১০ মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে গাছ ও তরমুজ নষ্ট হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন এ এলাকার কৃষকেরা।

প্রতিবছর এ অঞ্চলের কৃষকের ‍উৎপাদিত তরমুজ উপজেলা ও জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়। কৃষি অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, এবছর কয়রা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ১২শ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষাবাদ করা হয়েছে। এবছর ফসলের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে হেক্টপ্রতি ৬০ টন। তবে শীলা বৃষ্টি হওয়ায় ২শ হেক্টর জমির তরমুজ নষ্ট হয়েছে। আর দমকা হাওয়ার কারনে অনেক এলাকায় তরমুজ গাছেরও ক্ষতি হয়েছে। তবে এবছর লক্ষ মাত্রা অর্জনে সংশয় রয়েছে বলে জানান স্থানীয় তরমুজ চাষিরা।

আমাদি ইউনিয়নের তরমুজ চাষী পুলকেশ বৈরাগী বলেন, সমিতির থেকে লোন নিয়ে প্রতি বিষা ৭ হাজার টাকা করে বর্গা নিয়ে ১০ বিঘা জমি ৭০ হাজার টাকা দিয়ে তরমুজ চাষ করেন। এপর্যন্ত আড়াই লক্ষ টাকা করচ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছিল। আশা করেছিলেন দ্বিগুণ লাভ হবে। কিছুদিন পরে তরমুজ তুলবেন এর মধ্যে বৃষ্টির সাথে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের শিলা বৃষ্টিতে সব তরমুজ নষ্ট হয়ে তার স্বপ্ন ভেঙেছে। গত বছরও তিনি ৬ হাজার টাকা করে লিজ নিয়ে ১৮ বিঘা জমিতে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা খরচ করে তরমুজ চাষ করেন। অতিবৃষ্টির কারনে তরমুজ বিক্রি না হওয়ায় দেড় লক্ষটাকার ক্ষতি হয়।

একই এলাকার কৃষাণী চপোলা বৈরাগী বলেন, এবছর প্রথম বার ৬ হাজার টাকা করে বর্গা নিয়ে ৩ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেন। ফলন ভালো হওয়ায়। দ্বিগুণ লাভের আশা করেছিলেন তিনি। তবে ফল ওঠার মুখে হঠাৎ বৃষ্টির সাথে শিলাবৃষ্টি হওয়ায় তার তরমুজ ক্ষেতের সব তরমুজ নষ্ট হয়েছে।

করুণাকান্ত বৈরাগী বলেন, এলাকার মহাজোনের কাছ থেকে সুদে ১লক্ষ টাকা নিয়ে পাঁচ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছিল কিছুদিন পরে বিক্রি করার উপযোগী হবে। এপর্যন্ত তার এক লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকা খরচ করেছেন। কিন্তু হঠাৎ ১০ মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে আমার তরমুজ ও গাছ গুলো সব থেতলে গেছে। শীলা বৃষ্টি না হলে তিনি তার ৫ বিঘা জমি চার লক্ষ টাকায় বিক্রি করতে পারতেন। গত বছরও তিনি ৫ বিগা জমিতে তরমুজ চাষ করেন। তবে ফল ওঠার সময় অতিবৃষ্টির কারনে তার ৫৬ হাজার টাকা লস হয়।
একই এলাকার জয়ন্ত সরদার নিজের এগারো বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেন। এপর্যন্ত সাড়ে তিন লক্ষ টাকা করচ হয়েছে পনের দিন পরে ফল ওঠার কথা থাকলেও হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে তার সব তরমুজ নষ্ট হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অসিম কুমার দাস বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে দমকা হাওয়া ও শীলাবৃষ্টিতে প্রায় ২শ হেক্টরের মতো তরমুজ ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। কৃষি অফিসের সকল কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে এখনও কয়েক দিন না যাওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না লক্ষমাত্রা অর্জন হবে কিনা।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!