খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন সভাপতি মিশা, সাধারণ সম্পাদক ডিপজল

ডুমুরিয়ায় অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে বাঁধার মুখে পিছু হটলেন ম্যাজিস্ট্রেট!

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি

ডুমুরিয়ায় দুটি খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে গিয়ে বাঁধার মুখে পিছু হটলেন উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ। কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার বাঁধায় তিনি অভিযান না করে ফিরে এলেন। শনিবার সকালে ওড়াবুনিয়া বিলের মধুমারী ও বিষের খালে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে যেয়ে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, আটলিয়া ও মাগুরাঘোনা ইউনিয়নভুক্ত ওড়াবুনিয়া বিলের মধুমারী ও বিষের খাল নামক দু’টি খালে শনিবার ছিলো অবৈধ দখল উচ্ছেদের পূর্ব নির্ধারিত দিন। এ লক্ষ্যে গত দু’দিন যাবৎ এলাকায় মাইকিং করে প্রচারণা চালানো হয়। এতে ব্যাপক সাড়া দিয়ে এলাকার দুই শতাধিক কৃষক স্বেচ্ছায় উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেয়ার জন্যে অবস্থান করতে থাকেন। তারা সকাল থেকে মাগুরাঘোনা করিম বকসের মোড়ে অবস্থান নেয়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের অভিযানিক দলটি সেখানে পৌঁছায়। অভিযানের শুরুতেই কতিপয় নেতার বাঁধার মুখে পড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মামুনুর রশীদ বলেন, পূর্ব নির্ধারিত দিন মোতাবেক মধুমারী ও বিষের খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযানে আসি। কিন্তু অবৈধ দখলদারদের পক্ষে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা অভিযান পরিচালনা না করতে অনুরোধ করেন। তারা ঘেরের মাছ উঠানোর জন্য সময় প্রার্থনা করেন। সে কারণে তাদেরকে তিন সপ্তাহ অর্থাৎ আগামী অক্টোবর মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। এর ভিতরে সার্ভেয়ার দ্বারা খালের সীমানা নির্ধারণ করা হবে। নির্ধারিত দিন পার হলে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এসময়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক, সার্ভেয়ার মিরাজ হোসেনসহ থানা পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, মধুমারী ও বিষের খাল দু’টি দীর্ঘদিন ধরে কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধভাবে বেঁড়ি বাঁধ ও নেট-পাটা দিয়ে মাছ চাষ করছেন। যার কারনে বিলের পানি নিষ্কাশনে বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে। ওই বিলে অন্তত ২ হাজার একর ফসলী জমি রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবহার ও শুষ্ক মৌসুমে ধান ও মাছ চাষাবাদের জন্য খাল দুটির গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্ত বিগত কয়েক বছর ধরে মাগুরাঘোনার মোঃ মতিয়ার রহমান সরদার, দক্ষিণ চুকনগর গ্রামের আলতাপ হোসেন শেখ, চাকুন্দিয়া গ্রামের আলমগীর শেখ, নরনিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম শেখ, মালতিয়া গ্রামের জব্বার মল্লিক ও আব্দুল হালিম মোড়লসহ কতিপয় জমির মালিক তাদের জমির পাশ দিয়ে প্রবাহিত খাল দু’টির বিভিন্ন অংশে অবৈধভাবে বেড়িবাঁধ, পাটা দিয়ে ঘের তৈরী করে মাছ চাষ করছেন। এসব কারণে খাল দিয়ে পানি সরবরাহে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে বিলের মৎস্য ঘের তলিয়ে যাওয়াসহ ধানের চাষ ব্যহত হচ্ছে। অপর দিকে মাগুরাঘোনা ইউনিয়ের বেতাগ্রাম, ঘোষড়া, কাঞ্চনপুর, হোগলাডাঙ্গা, মাগুরাঘোনা গ্রামসহ পাশ্ববর্তি তালা উপজেলার কয়েকটি গ্রামের পানি নিষ্কাশনের এক মাত্র পথ খাল দু’টিতে বাঁধ থাকায় পানি বের হতে না পারায় এলাকা প্লাবিত হয়ে আসছে। যার কারণে গত এপ্রিল মাস থেকে এলাকার অন্তত ২০০ শতাধিক ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ লিখিতভাবে একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনের কাছে খাল দু’টির অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে পানি প্রবাহ পথ সুগম করার ব্যবহার দাবি জানিয়ে আসছেন।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!