খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
  রাঙামাটির সাজেকে শ্রমিকবাহী মিনি ট্রাক পাহাড়ের খাদে পড়ে ৯ জন নিহত

ডা. নিশাত ও ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক 

শ্লীলতাহানী ও শিশুর অঙ্গহানীর অভিযোগে ডা. নিশাত আবদুল্লাহ এবং হক নার্সিং হোমের মালিক নুরুল হক ফকিরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভুক্তভোগী নুসরাত আরা ময়না। বুধবার দুপুরে খুলনা সোনাডাঙ্গা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, আমার স্বামী একজন সরকারী চাকুরীজীবি। বর্তমানে তার কর্মস্থল সাতক্ষীরা। চাকুরীর সুবাদে তিনি সেখানেই অবস্থান করেন। আমার মেয়ের চিকিৎসার জন্য শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে ডা. নিশাত আব্দুল্লাহকে দেখালে তিনি মেয়ের হাতের আঙ্গুলের অপারেশন করানোর কথা বলেন। তিনি আবু নাসের হাসপাতালে অপারেশন না করিয়ে তার পরিচিত ময়লাপোতা হক নার্সিং হোম থেকে অপারেশন করালে ভাল হবে বলে জানান। কারণ তিনি হক নার্সিং হোমে রুগী দেখেন ও অপারেশন করেন। তার কথা অনুযায়ী গত ১৭ জানুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে আমার মেয়েকে অপারেশন করানোর জন্য সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধীন শেখপাড়ার হক নার্সিং হোমে ভর্তি করি। ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ডাক্তার নিশাত আমার মেয়ের হাতের আঙ্গুল অপারেশন করেন।

অপারেশন করার পর থেকে দিন দিন আমার মেয়ের হাতের আঙ্গুল কালো হতে থাকে। এ বিষয়ে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বললে সে আমার মেয়ের আঙ্গুলের ছবি হোয়াটস এ্যাপে দিতে বলেন। আমি তার কথা অনুযায়ী সরল বিশ্বাসে আমার ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বারে মেয়ের আঙ্গুলের ছবি পাঠাই। পরবর্তীতে সে আমার মেয়ের চিকিৎসার সুযোগ নিয়ে আমার সহিত ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য আমার ব্যবহৃত মোবাইলে নম্বারে বিভিন্ন সময় তার ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে কল করে। আমার মোবাইল নম্বরে তার ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা ৩২ মিনিটে ‘ঘুম?’ রাত ১২টা ৩৪ মিনিটে ‘রাগ?’ রাত ১২টা ৩৮ মিনিটে ‘কথা বলা যাবে?’সহ বিভিন্ন সময় আপত্তিকর বার্তা প্রেরণ করেন।

এছাড়া বিভিন্ন সময় ফোন করে আমাকে একা দেখা করতে বলেন। আমার মেয়ের সু-চিকিৎসার কথা চিন্তা করে চিকিৎসকের মোবাইলের কল ও ম্যাসেজের বিষয়ে কাউকে কিছু জানাইনি।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘গত ৬ ফেব্রুয়ারি আমার মেয়েকে নিয়ে শেখপাড়া হক নার্সিং হোমের চেম্বারে ড্রেসিং করানোর জন্য যেতে বলেন। সন্ধ্যায় সেখানে গেলেও আমাকে প্রায় দেড় ঘণ্টা বসিয়ে রাখেন। রাত সাড়ে ৮টায় আমার মেয়েকে নিয়ে অপারেশন থিয়েটারের ভেতরে গেলে নিশাত আবদুল্লাহ আমাকে বিভিন্ন প্রকার আপত্তিকর কথাবার্তা বলার একপর্যায়ে আমার হাত ধরে টেনে তার কাছে নেওয়ার চেষ্টা করে। তার কু-মতলব বুঝতে পেরে মেয়েকে নিয়ে আমি অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে আসি। বিষয়টি ক্লিনিক মালিককে জানালে তিনি ডা. নিশাতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আমাকে কাউকে না বলার জন্য শাশায়।’

এজাহারে বলা হয়, আমি কাউকে কিছু না বলে মনে কষ্ট নিয়ে মেয়ের সু-চিকিৎসার কথা ভেবে চুপ থাকি। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আবু নাসের হাসপাতালে ওই ডাক্তারের কাছে গেলে তার নির্দেশে হাসপাতালে থাকা ফিজিও থেরাফিস্ট লিপি নামে একজন আমার মেয়ের হাতের আঙ্গুল ড্রেসিং করে দেয়। পরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমার মেয়ের হাতের আঙ্গুল ব্যান্ডেজসহ খুলে পড়ে গেলে ডাক্তার নিশাতকে ফোনে জানাই ও হক নাসিং হোমে যাই। সেখানে আমার মেয়ের চিকিৎসা করতে অনিহা প্রকাশ করে ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন রকম কথাবার্তা বলে। তখন আমি ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানালে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে আমার মেয়ে আঙ্গুল ব্যান্ডেজ করে দেয়। আমার উপর অসৎ উদ্দেশ্যে চরিতার্থ করতে না পেরে অন্য আসামীদের পরস্পর যোগসাজসে আমার মেয়ে অথৈই (৬) এর বাম হাতের আঙ্গুলে গুরুতর আঘাত দিয়ে আঙ্গুল স্থায়ীভাবে বিকলঙ্গ করে অপুরণীয় ক্ষতি করেছে।

এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মমতাজুল হক জানান, মামলাটি গ্রহণ করে তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি তদন্ত করে দেখবেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!