খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
  ঢাকা শিশু হাসপাতালে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট
  রাজধানীর খিলগাঁওয়ে হাত বাঁধা অবস্থায় যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
  জাতীয় পতাকার নকশাকার, জাসদ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন

ঠিকাদারের নয়ছয় : শেষ হয়নি কাজ, সড়ক এখন দুর্ভোগ

নিতিশ সানা, কয়রা

ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে খুলনার কয়রা উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কে খানা খন্দের সৃষ্টি হয়। সড়কটি সংস্কারের জন্য ২০২১ সালে দরপত্র আহব্বান করা হয়। মেসার্স রাকা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এক কোটি ২৩ লাখ টাকা বরাদ্দের কাজটি পান। সেই থেকে রাস্তার দুপাশে খুঁড়ে রেখেছেন ঠিকাদার।

খুঁড়ে রাখা গর্তে পানি ও কাদা জমে বর্তমানে মরণ ফাঁদের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। এ অবস্থায় ওই সড়ক দিয়ে দীর্ঘদিন ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে দুইটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। সেই সঙ্গে সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।

এদিকে ২০২২ সালের ৩০ জুন কাজের মেয়াদ শেষ হলে এতদিন পরে তড়িঘড়ি করে কাজ শুরু করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।

উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কয়রা-মদিনবাদ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোড় থেকে ৪ নম্বর কয়রা অভিমুখে সড়কটি ২০২০ সালে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রায় আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘের ওই সড়ক সংস্কারের জন্য দরপত্র আহব্বান করা হলে মেসার্স রাকা এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। এক কোটি ২৩ লাখ টাকা বরাদ্দের এ কাজটির মেয়াদ ৩০ জুন শেষ হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কের কয়েকটি স্থানে অল্প সংখ্যক শ্রমিক মাটি সরানোর চেষ্টা করছেন। কয়েক জায়গায় কিছু ইট বসাতেও দেখা গেছে। শ্রমিকরা জানান, কাজের সাইটে প্রয়োজনীয় মালামাল না থাকায় মূল কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে ওই সড়কটি বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে সড়কের দুই পাশে গর্ত খুড়ে ফেলে রাখায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। বৃষ্টিতে ওই গর্তে পানি ও কাদা জমে থাকায় হেঁটে চলাচল করাও সম্ভব হচ্ছে না। অনেক সময় গর্তে পড়ে পোশাক নষ্ট হয়ে যায়।

কয়রা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম বলেন, ওই সড়কটির কারণে কলেজগামী শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কটির সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করতে সংশ্লিষ্টদেরকে একাধিকবার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির ঠিকাদার তপন কুমার বলেন, কাজের মেয়াদ দুই মাস বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছি। অনুমোদন পেলে আশা করছি এর মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবো।

কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত এলজিইডির উপ-সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল কাদের বলেন, কাজটি যথা সময়ে শেষ করতে ঠিকাদারকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে তার কার্যাদেশ ও জামানত বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হয়। এ অবস্থায় ঠিকাদার কাজ শেষ করতে দুই মাসের সময় চেয়ে আবেদন করেছেন বলে জানি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, দীর্ঘ দিন সড়কের পাশে গর্ত খুড়ে রাখায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে স্থানীয়ভাবে ওই সব গর্তে পুরানো খোয়া বালি ফেলে ভরাট করা হয়েছে।

জানতে চাইলে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঠিকাদার কাজ শেষ করতে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন। আমরা তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করতে পারলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!