খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন সভাপতি মিশা, সাধারণ সম্পাদক ডিপজল

ঝিনাইদহে ঢাবির দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মেধাবী ছাত্রের আমরণ অনশন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আলমপুর গ্রামের শাহিন আলম তীব্র মাত্রার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এক মেধাবী যুবক। এসএসসি থেকে অনার্স পর্যন্ত তার রেজাল্ট সাফল্য জনক। পিতা আব্দুল কাদেরের দুই সন্তানের মধ্যে শাহিন আলম ছোট। তার বড় ভাই সাইদুর রহমান সুজন বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। পিতার টানাটানির সংসারে অভাব-অনটন লেগেই রয়েছে।

শাহিন আলম ২০১৩ সালে জিপিএ ৪.০০ ও ২০১৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় ৪.৫৮ পেয়ে নিজ যোগ্যতাবলে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স ভর্তি হন। ২০১৯ সালে তিনি অনার্স পাস করে মাস্টার্সে অধ্যায়নরত। এখন তার বয়স ২৫ বছর। অভাবের সংসারে শাহিন আলম এখন হাল ধরতে চান। এজন্য তার দরকার একটি সরকারি চাকরি। তাই প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ ও দৃষ্টি কামনার জন্য বসেছেন অনশনে।

ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আজ সোমবার(৯ মে) সকাল ৯টা থেকে শাহীন আলম আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তাকে সমর্থন ও তার দাবীর প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে অনেক পথচারী সহমর্মিতা জানাচ্ছেন। সকলেই শাহিন আলমের একটি সরকারি চাকরির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাচ্ছেন। শাহিন আলম জানিয়েছেন চাকরি না হওয়া পর্যন্ত তিনি আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন। এতে যদি তার মৃত্যু হয় তবুও তিনি পিছপা হবেন না।

ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্তরে একটা হ্যান্ড মাইক নিয়ে তিনি তার আবেদন জানাচ্ছেন। তার ভাষ্য, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির আবেদন করছেন কিন্তু প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে তাকে কেউ চাকরী দিচ্ছেন না। শাহীন আলমের প্রশ্ন চাকরি যদি নাই হবে তাহলে কেন সরকার তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুযোগ দিল? শাহীন আলম লেখাপড়ার পাশাপাশি বে-সরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং তিনি নিজ উদ্যোগে ভারত, বাংলাদেশের প্রায় ২’শ শিক্ষার্থীকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

শাহীন আলম বলছেন, তার সরকারী চাকরির বয়সসীমা পার হয়ে যাচ্ছে অথচ সব্বোর্চ ডিগ্রী নিয়েও চাকরিতে ঢুকতে পারছেন না। তিনি বলেন সংবিধানে প্রতিবন্ধী ব্যাক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ এর ধারা (১) দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা রয়েছে ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে বঞ্চিত বা তার প্রতি বৈষম্য করা বা তাকে বাধাগ্রস্থ করা যাবে না।’ বিভিন্ন দপ্তরে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও অবহেলা ও অর্থের কাছে হার মেনেছেন শাহিন আলম।

শাহিন আলম সোমবার বিকালে জানান, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের একজন ম্যাজিষ্ট্রেট তাকে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসেন। কিন্তু চাকরী পাওয়ার কোন আশ্বাস না থাকায় তিনি অনশন ভঙ্গ বা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে যান নি। তিনি বলেন, মিডিয়া কর্মীদের সামনে চাকরীর প্রতিশ্রুতি পেলে কেবল তিনি অনশন ভঙ্গ বা ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ত্যাগ করবেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!