খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  রাঙামাটির সাজেকে শ্রমিকবাহী মিনি ট্রাক পাহাড়ের খাদে পড়ে ৯ জন নিহত

জ্বর হলে প্রাথমিক করণীয়

ডা. হিমেল ঘোষ

কখনো জ্বর হয়নি এরকম মানুষ মনে হয় কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। জ্বর কিন্তু আসলে কোনো রোগ নয়, বরং এটি বিভিন্ন রোগের একটি উপসর্গ। কারো শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের ওপরে গেলে তখন তাকে জ্বর বলে। ডেঙ্গু হোক বা করোনা সংক্রমণ, বেশির ভাগ জ্বরই কিন্তু ভাইরাসজনিত। জ্বর হলে প্রাথমিকভাবে বাসায় থেকেই কিছু বিষয় মেনে চললে সচারচর ৫-৭ দিনের মাঝেই জ্বর সেরে যায়। তবে জ্বরের কারণের উপর নির্ভর করে জ্বরের স্থায়িত্ব, গতি-প্রকৃতি ইত্যাদি কম-বেশি হতে পারে। যেকোনো জ্বর হলে কিছু করণীয় রয়েছে, যেমন –

বয়স্কদের ক্ষেত্রে :
১. জ্বর হওয়ার প্রথম তিন দিন শুধু সঠিক পরিমাণে প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ খান। জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামলের পরিবর্তে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অন্য কোনো ব্যথানাশক ঔষধ যেমন- অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন বা কোনো ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করবেন না।

২. শুরু থেকেই শরীরে যেন তরলের জোগান ঠিক থাকে সে জন্য পর্যাপ্ত পানি বা তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন। মুখের রুচি বাড়াতে টকজাতীয় ফল খেতে পারেন।

৩. জ্বরের লক্ষণ দেখা দিলে পূর্ণ বিশ্রাম গ্রহণ করুন।

৪. যাঁরা ডায়াবেটিস, হৃৎপিণ্ড, বৃক্ক বা যকৃতের অসুখ কিংবা অন্য জটিল অসুখে ভুগছেন অথবা আগে কখনো ডেঙ্গু হয়েছে তাঁরা খুব সতর্ক থাকুন।

৫. এসির ব্যবহার কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। অনেক সময় এসি থেকে ফ্লু বা নিউমোনিয়া সংক্রমণও হতে পারে।

৬. জ্বরের সাথে বমি, পেটব্যথা, শ্বাসকষ্ট, কোন অংশ থেকে রক্তপাত হচ্ছে কিনা ইত্যাদি খেয়াল রাখুন। এরকম হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৭. জ্বর আসলে বারবার মাথায় জলপট্টি দিন এবং পরিষ্কার কাপড় পানিতে ভিজিয়ে পুরা শরীর স্পঞ্জ করে মুছে ফেলুন।

শিশুদের ক্ষেত্রে :

১. জ্বরের সময় পানিশূন্যতা প্রতিরোধে মায়ের দুধ পান করে এমন শিশুদের ঘন ঘন মায়ের দুধ খাওয়ান। এ সময় স্তন্যদানকারী মাকেও সাবধানতার সঙ্গে চলাফেরা ও পর্যাপ্ত খাওয়া দাওয়া করতে হবে।

২. শিশুকে হালকা গরম পানি দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে গোসল করাতে পারেন। দরকার হলে কিছু সময় পর পর জলপট্টি দিতে পারেন।

৩. চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক শিশুর বয়স ও ওজন অনুযায়ী প্যারাসিটামল সিরাপ বা পেডিয়াট্রিক ড্রপ খাওয়ান। ছোট শিশুকে সর্দি-কাশির সিরাপ- যেটার মাঝে জ্বর কমানোর উপাদান আছে, তা সেবন করানো থেকে বিরত থাকুন। এতে জ্বরের ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত সেবন হয়ে যেতে পারে।

৪. শিশুর ঘরের তাপমাত্রা আরামদায়ক রাখুন (১৮ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস), জানালা খুলে যথেষ্ট আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন। প্রয়োজনে ফ্যান ছেড়ে দিতে পারেন।

৫. জ্বর হলে শিশুকে অতিরিক্ত কাপড়চোপড়, কাঁথা বা চাদর দিয়ে ঢেকে রাখার প্রয়োজন নেই। বিশেষ করে শিশুর মাথা না ঢেকেই রাখা উচিত। কারণ ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে মাথা থেকেই তাপ বেশি নির্গত হয়।

৬. জ্বরের সময় খেলাধুলা বা অত্যধিক পরিশ্রম পরিহার করতে হবে। প্রয়োজনে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে কিছুদিন বিশ্রাম নিতে হবে।

লেখক : এমবিবিএস (ঢাকা মেডিকেল কলেজ), বিসিএস (স্বাস্থ্য), মেডিকেল অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ডুমুরিয়া, খুলনা।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!