খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ | ২৯ মার্চ, ২০২৪

Breaking News

  দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫
  গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২

জীবন যুদ্ধে হার না মানা শিক্ষিত শারীরিক প্রতিবন্ধীর অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানো চেষ্টা

গাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডুমুরিয়া 

সকল প্রতিকুলতাকে পিছনে ফেলে জীবন যুদ্ধে হার না মানা এক যুবকের নাম রশিদুল ইসলাম । জন্মই যেন তার অভিশাপ। এরপর পরিবারের দারিদ্রতার মাঝে সমাজের নানা বাধা বিপত্তি। জীবন যেন যন্ত্রনার এক মরুভূমি। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া গ্রামের হতদরিদ্র নূরুল ইসলাম জোয়াদ্দার ও রাবেয়া বেগমের গর্ভে জম্ম নেওয়া সন্তান রাশিদুল শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয়।

মাতৃস্নেহে রাশিদুল বড় হতে থাকে এতে পিতা মাতার চিন্তার অর্ন্তহীন হয়ে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা করে ব‍্যর্থ‍ হয়ে সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রেখে ছেলেকে শিক্ষিত করার বাসনা নিয়ে গুটুদিয়া পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ে ভর্তি করে। মা কোলে করে স্কুলে যাতায়াত করতে শুরু করে। স্কুলে আসার পর সহপাটিরা নানা বিদ্রুপ আচারন কোমল মনকে ব‍্যথিত করত।

সহপাটিরা দৌড় ছুট খেলাধুলা করত। সে খেলাধুলা করতে না পারায় আক্ষেপ ছিল। কিন্ত মনকে মেনে নিয়ে লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠে। এতে শিক্ষকদের ভালবাসায় সামনের দিকে চলতে সহায়তা করেছে। প্রাথমিক শিক্ষা শেষে মাধ‍্যমিকে গুটুদিয়া স্কুলে ভর্তি হয় । বাড়ি থেকে বেশ দুরে স্কুলে যেতে পরিবারের বাবা মা ভাইর সহযোগীতা নিতে হয়।

মাধ‍্যমিকে এ গ্রেডে পাশ করে এইচ এসসিতে কৈয়া আবুল কাশেম কলেজে ভর্তি হয়। এইচ এসসি ও বিএ সাফল‍্যের সাথে এ গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়। এর মাঝে পিতাকে হারিয়ে মা ভাইদের সানিধ্যে চাকুরি নামক সোনার হরিণের পিছনে দৌড়াতে থাকে। বিভিন্ন স্থানে চাকুরির আবেদন করে ব‍্যর্থ হয়ে ক্রান্ত মন নিয়ে মায়ের আচলতলে ঠিকানা খুঁজে।
জীবন তো কারও জন‍্য থেমে থাকছে না বয়স বাড়ছে তাই এক পর্যায়ে পিতার রেখে যাওয়া বাড়ির পাশে ৭৫ শতাংশ জমিতে একটি মৎস খামার ও গাভী পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। নিজ সামথ‍্য না থাকায় অর্থের অভাবে মৎসচাষ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল এর মাঝে সংবাদ পেয়ে উপজেলা সমাজ সেবা দপ্তর থেকে ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহন করে।

রাশিদুল ইসলামের বলেন, প্রতিবন্ধি জীবন বড়ই কষ্টের। বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধিদের কল‍্যানে নানা মুখি উদ‍্যোগ গ্রহণ করায় প্রাপ্ত সুবিধা নিয়ে জীবনকে গুছানোর চেষ্টা চালিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে আর্তনির্ভরশীল হওয়ার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়া আমি বাচ্ছাদের প্রাইভেট পড়িয়ে সংসারের খরচ বহন করে থাকি।

উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা সুব্রত বিশ্বাস বলেন, দপ্তরের দগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ঋণ কর্মসূচি আওতায় সমাজে প্রতিবন্ধী তথা সুবর্ণ নাগরিকদের স্বাবলম্বী করার নিমিত্তে এবং সমাজের মুল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করা জন‍্য আর্ত সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন‍্য একজন প্রতিবন্ধী ব‍্যক্তিকে ৩০ হাজার টাকা করে সুদ মুক্ত ক্ষুদ্র ঋণ করা হচ্ছে। রাশিদুলকে ২০২১ সালে মৎস‍্য চাষে ঋণ প্রদান করা হয়। সে মাছ চাষ করে লাভবান হয়ে গরু কিনেছে। সে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!