চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে নিখোঁজের পঞ্চম দিনে আবু সাঈদ (৩০) নামের এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) দুপুর ২টায় পৌর শহরে আঁশতলা পাড়ার নির্মাণাধীন ভবনের লিফটের বেসমেন্টের থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত আবু সাঈদ পৌর এলাকার হাইস্কুল পাড়ার মো. রইচ উদ্দিনের ছোট ছেলে। তিনি পেশায় একজন জুতা ব্যবসায়ী ছিলেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), র্যাব, ডিবি, ডিএসবি, সিআইডির সদস্যরাসহ চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান লালন।
পরিবারিক ও স্থানীয়রা জানান, আবু সাঈদ গত রবিবার (২ এপ্রিল) সেহরি খেয়ে ভোরের নামাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হন। তারপর থেকেই সে নিখোঁজ। তাকে অনেক স্থানে খোজাখুজি করে কোথাও আর খোঁজ মেলিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আঁশতলাপাড়া কোরিয়ান প্রবাসী কবির হোসেনের নির্মাণাধীন সাত তলা ভবনে শ্রমিকেরা কাজ করতে গেলে তারা ভেতরে পঁচা দুর্গন্ধ পান। নির্মাণ শ্রমিকেরা গন্ধের সন্ধান করতে ভবনের ভিতরে প্রবেশ করলে দেখতে পায় লিফটের বেজমেন্টে একটি লাশ পড়ে আছে। লাশ দেখে তারা নিহতে পরিবারের খবর দিলে পরিবারের সদস্যরা তার ব্যবহৃত পোশাক দেখে লাশ শনাক্ত করেন। এরপর পুলিশের খবর দিলে সকাল ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছে বেজমেন্টের প্রাচীর ভেঙ্গে দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যান।
নিহতের ভাই আবু হাসান বলেন, আবু সাইদ গত রবিবার (২ এপ্রিল) ভোরে মসজিদে নামাজ আদায় করতে বাড়ি থেকে বের হন। পরে আর বাড়ি আসেনি। তখন থেকে সে নিখোঁজ। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় সকল স্থানে খোজাখুজি করে কোথাও না পেয়ে গত সোমবার (৩ এপ্রিল) সকালে থানায় সাধারণ ডাইরি করি। এরপর বিকাল ৪টার দিকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তার (আবু সাঈদের মোবাইল ফোন থেকে আমার কাছে কল দেন এবং তারা আমার পরিচয় জানতে চাই পরিচয় পাওয়ার পর ফোন কেটে দেন।পরবর্তীতে ইন্টারনেট(আইপি) নাম্বার থেকে আমার কাছে ফোন দিয়ে ১৫হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। টাকা দিলে সাঈদের খোঁজ দেবে। টাকা না দিলে তার খোঁজ পাওয়া যাবে না বলে জানায়।
তিনি আরও বলেন,ভাই নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় গত সোমবার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। নিয়মিত থানায় যোগাযোগ করতেন। তবে পুলিশ আবু সাইদের কোনো সন্ধান দিতে পারেনি।জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দীন মৃধা জানান, নিখোঁজ ব্যবসায়ীর মরদেহ শনাক্ত করেছেন পরিবারের সদস্যরা। ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন,লাশের দেহে পোঁচে যাওয়ার কারণে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি।ঘটনাস্থল থেকে দুই জোড়া স্যান্ডেল ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও তদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞতানামা ব্যক্তির নামে থানায় মামলা করেছেন।
খুলনা গেজেট/কেডি