খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  নোয়াখালীর হাতিয়ায় ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজ ডুবি
  অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা চুয়েট; শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ
  প্রতিবাদে বাসে আগুন ও প্রশাসনিক ভবনে তালা
  আগামী রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি, ৪ মে শনিবারও শ্রেণী কার্যক্রম চালু থাকবে : শিক্ষা মন্ত্রণালয়
  সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত

জিয়া হত্যার আগে মার্কিন দূতাবাস অভ্যুত্থানের আভাস পায়

কাজী মোতাহার রহমান

১৯৮১ সাল বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঘটনাবহুল বছর। এসময় ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন ডেভিড টি স্নাইডার। তিনি ঝানু কুটনীতিক। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়া হত্যার ১৫ দিন আগে অভ্যুত্থান সম্পর্কে তিনি ওয়াশিংটনকে অবহিত করেন।

স্বাধীনতার স্থাপতি রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যার পরে মার্কিন দূতাবাস সক্রিয় হয়। রাষ্ট্রদূত ঘন্টায় ঘণ্টায় ওয়াশিংটনে তার বার্তা পাঠাতেন। সম্প্রতি মার্কিনের অবমুক্ত করা দলিলের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক প্রয়াত মিজানুর রহমান খান রচিত ‘মার্কিন দলিলে জিয়া ও মন্জুর হত্যাকান্ড এরশাদের পতন এবং বিএনপির জন্ম’ নামক গ্রন্থে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

মেজর আবুল মন্জুর মুক্তিযুদ্ধকালে ৮ নং সেক্টরের অধিনায়ক ছিলেন। ১৯৭৩ সালে লেঃ কর্নেল, আগষ্টে কর্নেল, ১৯৭৫ সালের জুনে বিগ্রেডিয়ার এবং ১৯৭৭ সালে মেজর জেনারেল হিসেবে পদন্নোতি পান। তিনি সেনাপ্রধান হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। প্রেসিডেন্ট জে. জিয়াউর রহমান বীর উত্তম তাকে এমনই আশ্বাস দেন। প্রেসিডেন্ট এর সাথে তার সম্পর্ক ঘনিষ্ট। মার্কিন দূতাবাসে মূল্যায়নপত্রে বলা হয়, ৭৫ সাল পরবর্তী দিনগুলোতে তিনি তৎকালীন সেনা প্রধান মেজর জে. জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিশ্বস্ত উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। ঐ সময় জে. আবুল মন্জুর প্রেসিডেন্টের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন। মার্কিন দূতাবাসের এক তারবার্তায় উল্লেখ করা হয়, জে. মন্জুরের রাজনৈতিক দীক্ষা অস্পষ্ট। তাকে চীনা বামপন্থী হিসেবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। সাবেক সেনা প্রধান মাহবুবুর রহমান উল্লেখ করেন, এটা একদম খাঁটি কথা।

মার্কিন দূতাবাস জানতে পারে ১৯৭৭ সাল থেকে জে. জিয়া- জে. মন্জুর- জে. মীর শওকত ও জে. এরশাদের মধ্যে নানামাত্রিক দ্বৈরথ দানা বাঁধতে শুরু করে। জে. মন্জুর চেয়ে বেশি অনুগত ও নিরাপদ ভেবে প্রেসিডেন্ট সেদিন এরশাদকে সেনা প্রধান করেন। ১৯৭৭ সালের নভেম্বরে জে. মন্জুকে চট্টগ্রামে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক হিসেবে বদলি করা হয়। সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অবঃ) মন্জুর রশীদ খান আমার সৈনিক জীবন নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেন, যতদিন যাচ্ছিল জে. মন্জুর ততই অস্থির ও অসহিঞ্চু হয়ে উঠছিলেন।

মার্কিন দলিলে উল্লেখ আছে, ১৯৮০ সালের শেষ দিকে জে. মন্জুর প্রকাশ্যেই প্রেসিডেন্ট জিয়ার সমালোচনা করতেন। ১৯৮১ সালের ১৫ মে ‘ঢাকায় রাজনৈতিক বিদ্বেষ’ শিরোনামে মার্কিন দূতাবাসের এক তারবার্তায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অভ্যুত্থানের আশংকা করা হয়। মার্কিন নথি পর্যালোচনায় বিস্ময়করভাবে জিয়া- মন্জু- মীর শওকত ও এরশাদের মধ্যকার টানাপোড়নের এক দীর্ঘ চিহ্ন রেখা ফুটে ওঠে।

সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল এইচএম এরশাদ মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্নাইডোরকে বলেন জে. আবুল মন্জুর অনেকদিন ধরে প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়ার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের চক্রান্ত করে আসছে। ১৯৮১ সালের ৩০ মে বাদ মাগরিব জে. আবুল মন্জুর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে অভ্যুত্থানের সিদ্ধান্ত নেন। প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়া নিহত হন। সেদিন আক্রমনকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় দু’শত জন।

সামরিক গোয়েন্দারা ৩০ মে চট্টগ্রাম সফর থেকে বিরত থাকার জন্য প্রেসিডেন্ট জিয়াকে পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি সতর্কতা অগ্রাহ্য করেছিলেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!