খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  উপজেলা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিল বিএনপি ও জামায়াত
  শ্রম আইন লঙ্ঘন : স্থায়ী নয় ২৩ মে পর্যন্ত জামিনে থাকবেন ড. ইউনূস
  ফরিদপুরের কানাইপুরে বাস-পিকআপ ভ্যান মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১৩

জমে উঠেছে কলারোয়া পৌর নির্বাচন : মেয়র পদে ত্রিমুখী লড়াই‌য়ের সম্ভাবনা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আর মাত্র ১৫দিন বাকী। ইতিমধ্যে নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই মাঠে ঝাপিয়ে পড়েছেন প্রার্থীরা। কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছুটছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। করছেন গণসংযোগ ও পথ সভা। বিতরণ করছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি সম্বলিত লিফলেট। ফলে জমে উঠেছে সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে তাই কলারোয়ায় এখন বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

এই নির্বাচন উপলক্ষে পোষ্টার আর ব্যানারে ছেয়ে গেছে কলারোয়া পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ড। মেয়র পদে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র মনিরুজ্জামান বুলবুল। আর অ’লীগের বিদ্রোহি প্রার্থী সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী মজনু পেয়েছেন মোবাইল ফোন প্রতীক। বিএনপির প্রার্থী শরিফুজ্জামান তুহিন পেয়েছেন ধানের শীষ প্রতীক। এছাড়া বিএনপির বিদ্রোহি প্রাথী আক্তারুল ইসলাম নারকেল গাছ ও তার স্ত্রী নাসরিন সুলতানা জগ প্রতীকে লড়ছেন।

এদিকে নির্বাচনে জয় লাভ করতে আ’লীগ, বিএনপি ও বিদ্রোহী প্রার্থীরা সকলেই আশাবাদী। নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থী মনিরুজ্জামান বুলবুল এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সদ্য ঘোষিত জেলা আ’লীগের নির্বাহী সদস্য ও কলারোয়া উপজেলা আ’লীগের সাবেক আহবায়ক সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী মজনু। ইতিমধ্যে তাকে বহিষ্কারের সুাপরিশ করে কেন্দ্রে চিঠি পাঠিয়েছে জেলা আ’লীগ। মজনুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় ফিরবেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মনিরুজ্জামান বুলবুল। কিন্তু আওয়ামীলীগের একটি বড় অংশ বিদ্রোহী প্রার্থী সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী মজনুর কাদে কাদ মিলিয়ে কাজ করছেন। দলের মধ্যে গ্র“পিং থাকার কারণে কলারোয়ায় পৌরসভা নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থী এই পর্যন্ত জয়লাভ করতে পারিনি। সুষ্ঠ ভোট হলে নৌকার প্রাথীর ভরা ডুবি হতে পারে বলে মন্তব্য করছেন সাধারণ ভোটাররা।

অপরদিকে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রাথী শরিফুজ্জামান তুহিন এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়েছেন বরখাস্তকৃত সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা আক্তারুল ইসলাম ও তার স্ত্রী নাসরিন সুলতানা। প্রথমবার বিএনপির বিদ্রোহী হয়ে এবং দ্বিতীয়বার বিএনপির প্রার্থী হিসাবে মেয়র পদে নির্বাচনে জয়লাভ করেন আক্তারুল ইসলাম। কিন্তু শাসকদলের রোষানলে পড়ে মেয়র হিসাবে তিনি তার দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত যদি তিনি নির্বাচনী মাঠে টিকে যান তাহলে কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে লড়াই হবে ত্রিমুখী।

বিএনপি প্রার্থী শরিফুজ্জামান তুহিন বলেন, তার দলের নেতা কর্মীরা দলের বিদ্রোহি স্বামী-স্ত্রী দুই প্রার্থীকে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বলেছেন। কিন্তু তারা তা মানছেন না। তবে তাদের সাথে আলোচনা চলছে। বিদ্রোহি প্রার্থীরা দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিলে মেয়র পদে ধানের শীষের জয়লাভ করতে সহজ হবে। তবে ভোট যদি সুণ্ঠ হয় আর মানুষ যদি ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে তবে তিনিই এই নির্বাচনে জয় লাভ করবেন। তবে বিএনপির কর্মী সামর্থকরা একথাও বলছে কৌশলগত করণে তারা দলের ৩ জন প্রার্থী রেখেছেন। এছাড়া বরখাস্ত মেয়র আক্তারুল ইসলামের একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তার সাজা হয়ে যেতে পারে। সেজন্য বিকল্প রাখা হয়েছে।

কলারোয়া আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী মনিরুজ্জামান বুলবুল জানান, দল তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। সাধারণ মানুষ তাকে ভাল বাসে। সাধারণ ভোটারদের সাথে নিয়ে তিনি নির্বাচনি কাজ করে যাচ্ছেন। এই নির্বাচনে তিনি জয় লাভ করবেন।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহি প্রাথী সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী মজনু জানান, তিনি নৌকা প্রতীক চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়নি। তিনি পৌরসভার নেতা কর্মী সামর্থকদের চাপে মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। দলেয় নেতা কর্মীরা তার সাথে আছে। ঢাকা থেকে নৌকা প্রতীক দেওয়া প্রাথীকে স্থানীয় নেতাকর্মীরা মেনে নিতে পারছে না। নির্বাচনে তিনিই জয়লাভ করবেন।

কলারোয়া উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, আগামী ৩০ জানুয়ারি কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন আর সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৩ জন প্রাথী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কলারোয়া পৌরসভায় মোট ভোটারের সংখ্যা ২১ হাজার ২শ’ ৮১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ২৮৫ জন ও নারী ভোটার রয়েছে ১০ হাজার ৯৯৬ জন। পৌরসভার ৯টি কেন্দ্রে ৬৩টি কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থী মনিরুজ্জামান বুলবুল ও বিএনপি প্রার্থী শরিফুজ্জামান তুহিন জোরে সোরে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে কে জিতবে তা এই মুহুর্ত্বে বলা খুবই কঠিন। তবে ভোট গ্রহণ সুষ্ঠু হবে কি না তা নিয়ে সংশয় আছে বিএনপির নেতা কর্মীদের মধ্যে। আর ভোটাররা বলছে ভোট দেয়ার সুযোগ হলে কলারোয়া পৌরসভার উন্নয়নের জন্য তারা সৎ যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!