খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  রাঙ্গামাটির সাজেকের উদয়পুর সড়কে ট্রাক খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত
  চাঁদপুরের হবিগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে মা ও শিশুর মৃত্যু
  নাটোরের সিংড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি-সম্পাদককে দল থেকে অব্যাহতি

চিতলমারীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা’র তালিকা থেকে বাদ পড়লেন ১৬ জন

চিতলমারী প্রতিনিধ

বাগেরহাটের চিতলমারীতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ে তালিকা থেকে ১৬ জন বাদ পড়েছেন। উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির প্রতিবেদনে ‘উপস্থাপিত সাক্ষ্য প্রমাণাদিতে তারা মুক্তিযোদ্ধা নন’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রæয়ারী) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নোটিশ বোর্ডে কমিটির সকল সদস্যের স্বাক্ষর সম্বলিত বাদপড়াদের নামের তালিকা টানিয়ে দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে প্রতিবেদনের কপি। গত ৩০ জানুয়ারী উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে ১৫৬ জনের একটি তালিকার যাচাই-বাছাই করা হয়। তবে তালিকা থেকে বাদপড়া সকলেই মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে আপিল করতে পারবেন বলে যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন।

যাচাই-বাছাই কমিটিতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম এ সবুর, সংসদ সদস্য কর্তৃক মনোনীত সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শামসুল আলম, জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রণজিৎ কুমার বাড়ৈ ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং সদস্য সচিব ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মারুফুল আলম।

যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম এ সবুর মুঠোফোনে জানান, ২০১০ সালের আগ পর্যন্ত যে সব মুক্তিযোদ্ধা গেজেটভুক্ত হয়েছেন তাদের ব্যাপারে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল জামুকার পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে নেতিবাচক নানা তথ্য যায়। অনেক মুক্তিযোদ্ধার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে চিতলমারীতে ১৫৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে যাচাইয়ের আওতায় আনতে পত্র আসে। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়। সে মোতাবেক চিতলমারীর ১৫৬ জন গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার কাছে এ চিঠি পৌঁছে দেয়া হয়। এরমধ্যে একজনের লাল মুক্তিবার্তায় নাম থাকায় তাকে বাদ রেখে সর্বশেষ ১৫৫ জনকে চিঠি দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়। ৩০ জানুয়ারি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত এ যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলে। মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের নির্দেশনা ও বাছাই বিধি মোতাবেক গঠিত কমিটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাছাই সম্পন্ন করেছে। তবে তালিকা থেকে বাদপড়া সকলেই মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে আপিল করতে পারবেন।

যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শামসুল আলম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রণজিৎ কুমার বাড়ৈ জানান, স্বাক্ষী প্রমাণ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপনে ব্যর্থ হওয়া ও ৩৩ প্রকার কেটাগরির প্রশ্নের সদুত্তোর দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ১৬ জন গেজেটভুক্ত ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধা নন বলে প্রমাণিত হয়েছেন।

এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কমিটির সদস্য সচিব মোঃ মারুফুল আলম বলেন, যাচাই-বাছাই তালিকার ১৫৫ জনের মধ্যে দুইজন বাদে সকলেই উপস্থিত ছিলেন। হাজির না হওয়া দুই জনের খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পেরেছি তারা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। স্বচ্ছতার সাথে বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। তালিকা থেকে ১৬ জন বাদ পড়েছেন। এদরেমধ্যে একজন আনসার বাহিনীর সদস্য। কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা মিলে এ ব্যাপরে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দিয়েছি। সেই সাথে যাচাই-বাছাই কমিটির সকল সদস্যের স্বাক্ষর সম্বলিত বাছাইয়ের প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় যাচাই বাছাই কার্যক্রমের ফলাফলের উপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সকল সদস্যের স্বাক্ষর সম্বলিত বাদপড়াদের নামের তালিকায় যাদের নাম রয়েছে। তারা হলেন, বড়বাড়িয়া গ্রামের এফ এম বদর উজ্জামান (আনসার বাহিনী), একই গ্রামের মোঃ কেরামত আলী খান, একই গ্রামের আঃ হক শিকদার (মৃত), বড়গুনি গ্রামের বাবর আলী মোল্লা (মৃত), বারাশিয়া গ্রামের মোঃ নুর ইসলাম শেখ, একই গ্রামের চান মিয়া শেখ, বাশবাড়িয়া গ্রামের মোঃ তাছেন শেখ (মৃত), পরানপুর গ্রামের মোশারেফ, ঘোলা গ্রামের শেখ মোঃ ফরিদ আহম্মেদ (মৃত), পারনপুর গ্রামের মোঃ আব্দুর রশিদ, মাছুয়ারকুল গ্রামের জ্যেতিষ বসু, বাকপুর গ্রামের ছলেমান শেখ, শৈলদাহ গ্রামের ইদ্রিস শেখ, শিবপুর গ্রামের মোস্তফা শেখ (মৃত), একই গ্রামের মোঃ সরোয়ার হেসেন (মৃত) ও আড়–য়াবর্নী গ্রামের মোঃ আঃ সাত্তার খান।

খুলনা গেজেট/কেএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!