খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৬
  কিশোরগঞ্জে বাসচাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
  জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো : প্রধানমন্ত্রী
চাপে সৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

খুলনা ইসলামিক ফাউন্ডেশন ঘিরে সক্রিয় অনিয়মে অভিযুক্তরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয় গত জানুয়ারি মাসে। এই মামলায় হিসাব রক্ষক রাকিব হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। অথচ মূল পরিকল্পনাকারী ফিল্ড অফিসার শাহাবুদ্দিনকে বরখাস্ত না করে বদলী করা হয় শরিয়তপুরে। মামলা চলছে সাবেক পরিচালক শাহীন বিন জামানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধেই।

আবার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা হয়েছে ফিল্ড অফিসার ফাইজার রহমানের বিরুদ্ধে। তাকে শাস্তিমূলক বদলীও করা হয় আরেক উপজেলায়। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নুরুল ইসলাম ও ফোরকান হোসাইনের বিরুদ্ধে দুনীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি তারা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।

নানা অভিযোগে অভিযুক্ত এমন কর্মকর্তারাই এখন ইসলামিক ফাউন্ডেশন খুলনা কার্যালয় পরিচালনা করছেন। অভিযুক্ত পুনর্বহাল হয়ে একজোট হওয়ায় চাপে পড়েছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দুর্নীতিবাজদের কাছে টানতে, ভালো কর্মকর্তাদের বদলী করা হচ্ছে দূরের উপজেলায়। গত কয়েক মাস ধরে ইসলামী ফাউন্ডেশনে ঘটছে এমন নানা ঘটনা। যা নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বিষয়টি জানতে পারে ২০ অক্টোবর ফাইজারকে এবং ৩০ অক্টোবর নুরুল ইসলামকে প্রকল্প দপ্তর থেকে শাস্তিমূলক বদলী করা হয়েছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনা মহানগরী ও জেলায় ১ হাজার ২৫৭টি মসজিদ ও মক্তবে শিশু শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। রাজস্বখাতের ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে ফিল্ড অফিসার শাহাবুদ্দিন ও হিসাব রক্ষক রাকিব হোসেনের বিরুদ্ধে। ওই সময় বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ছিলেন শাহীন বিন জামান। তাদের ৩ জনের বিরুদ্ধেই বিভাগীয় মামলা হয়, যা এখনও চলমান রয়েছে। শাহাবুদ্দিনকে শরিয়তপুরে বদলী ও পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। চাকরিজীবন শেষে পিআরএলে যান শাহীন বিন জামান। সম্প্রতি ফাউন্ডেশনে পরিচালক হিসেবে যোগ দিয়েছেন আজমল হক। তিনি যোগ দেওয়ার পর শাহাবুদ্দীন ও শাহীন বিন জামানরা আবারও সক্রিয় হয়েছেন। ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাদের এখন নিয়মিত দেখা যায়।

সূত্র জানায়, তারা সক্রিয় হওয়ার পর তাদের অনুসারীদেরও স্বপদে বহালের চেষ্টা শুরু করেন। গত ১১ অক্টোবর অন্যান্য অভিযুক্তদেরও সুবিধাজনক স্থানে বদলী ও ফাউন্ডেশনের কাজে সক্রিয় করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অফিসের মধ্যে সরকারকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ অশ্লীল বাক্য ব্যবহার করে কটুক্তি করায় ২০১৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ফিল্ড সুপারভাইজার ফাইজার রহমানকে শোকজ করা হয়। দায়িত্বে অবহেলা, নিজ উপজেলার বাইরে অন্যের কাজে হস্তক্ষেপ, বেতন ভাতার ফাইলে টাকার অংকে কাটাকাটিসহ নানা অভিযোগে ২০১৪ সালের ৩০ জুন আবারও তাকে শোকজ করা হয়। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাকে দাকোপে বদলী করা হয়।

গত ১১ অক্টোবর ফাইজার রহমানকে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় বদলী করে আনা হয়েছে। অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডুমুরিয়া উপজেলার। এটাকে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় ও পুরষ্কার বলে মন্তব্য করছেন অন্য কর্মকর্তারা।

এছাড়া আরেক ফিল্ড অফিসার ফোরকান হোসাইনের বিরুদ্ধে কেন্দ্র পরিদর্শন না করে টিএ/ডিএ বিল গ্রহণ, মনিটরিং সভায় অনুপস্থিত থেকেও সম্মানী ভাতা গ্রহণ, অফিসের মটর সাইকেল ভাংচুর, নিয়মিত অফিস না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, দিঘলিয়া উপজেলার গোলাম রহমানকে কেয়ার টেকার পদে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে নিয়োগ কমিটির মাধ্যমে দুই মাস পুর্বে নিয়োগ দেয়া হয়। অথচ তাকে বেতন ভাতা না দেয়া হয়নি। নিয়োগের জন্য তার কাছে ঘুষ দাবি করছে ফিল্ড অফিসার ফোরকান। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ফাউন্ডেশনের উপর ক্ষুব্ধ।

এছাড়া নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধেও অভিযোগের শেষ নেই। তাকে বটিয়াঘাটার সঙ্গে অতিরিক্ত হিসেবে ফুলতলায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর এই চক্রকে খুশী করতে ভালো কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত মশিয়ার রহমানকে ফুলতলা থেকে পাইকগাছায় বদলী করা হয়েছে। একইভাবে পাইকগাছার বিলাল হোসেন কয়রায় পাঠানো হয়েছে। কাজী এনামুল হককে রূপসা থেকে সদরে এনে সাধারণ শাখার প্রশাসনিক কর্মের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যা তার জন্য অত্যন্ত কষ্টের কাজ।

এ ব্যাপারে বর্তমান পরিচালক আজমল হক বলেন, আগে কী হয়েছে সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবো না। তবে অভ্যন্তরীণ কাজের অংশ হিসেবে কয়েকজনের দপ্তর রদবদল করা হয়েছে। পরে প্রকল্প দপ্তর থেকে কয়েকজনকে বদলী করা হয়েছে। এটা নিয়মিত কাজের অংশ।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!