খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ | ২৮ মার্চ, ২০২৪

Breaking News

  ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত
  সাবেক সংসদ সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজির হোসেন মারা গেছেন
  নওগাঁয় বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত
  যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত
নগরে নিশ্চিত, জেলায় চমকের অপেক্ষা!

খুলনায় যুবলীগের সম্মেলন ঘিরে নেতৃত্ব প্রত্যাশীরা সরব

 নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ২৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। দীর্ঘদিন পর এ সম্মেলন ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের যুবসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। মহানগর নেতৃত্বেও বিষয়টি অনেকটাই নিশ্চিত হলেও জেলা কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে চলছে শীতল লড়াই। যুবলীগের সাবেক নেতারা ছাড়াও এ পদ দুটিতে উঠে এসেছে ছাত্রলীগের একাধিক সাবেক নেতাদের নাম। আর পদ প্রত্যাশীদের প্রচার-প্রচারণায় নগরীর অধিকাংশ বিলবোর্ডগুলো ছেয়ে গেছে। এখন চলছে তোরণ নির্মাণের তোড়জোড়। আবার কেউ কেউ পদ পেতে ছুটছেন সংগঠনের নীতি নির্ধারণীদের দ্বারে দ্বারে। সবমিলিয়ে খুলনা জেলা যুবলীগে নতুন এক চমকের অপেক্ষা করছেন তৃনমূলের কর্মীরা। খুলনা নগরীর শেখ রাসেল টেনিস কমপ্লেক্স চত্বরেেএ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রায় দু’বছরেরও বেশী আগে তোড়জোড় শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত আর সম্মেলন হয়নি খুলনা নগর ও জেলা যুবলীগের। এমন কি নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত নেওয়া হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মেলেনি। ওই সময়ে মহানগর কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একক প্রার্থী হলেও জেলায় দুটি পদ চেয়েছেন ১৭ জন। নগর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একক প্রার্থী যথাক্রমে বর্তমান আহবায়ক সফিকুর রহমান পলাশ ও বর্তমান যুগ্ম আহবায়ক শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন। ফলে আসন্ন সম্মেলনে নগর নেতৃত্ব অনেকটা নিশ্চিত হলেও জেলায় চমকের সম্ভাবনা রয়েছে। এমন কী জীবন বৃত্তান্ত জমা দেওয়ার বাইরের কেউ জেলার নেতৃত্বে আসা অসম্ভব নয় বলে ধারণা করছেন কেউ কেউ।

।।  খুলনা জুড়ে উৎসবের আমেজ ।।

জেলায় সভাপতি পদে ছয় জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১১ জন জীবনবৃত্তান্ত জমা দেন। সভাপতি পদ প্রত্যাশীরা হলেন বর্তমান যুবনেতা অজিত বিশ্বাস, যুবনেতা সরদার জাকির হোসেন, খুলনা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান চৌধুরী রায়হান ফরিদ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাদীউজ্জামান হাদী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরাফাত হোসেন পল্টু ও জসিম উদ্দিন বাবু। সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশী ১১জনের মধ্যে রয়েছেন- যুবনেতা এবিএম মরুজ্জামান, মাহফুজুর রহমান সোহাগ, সাবেক ছাত্রনেতা দেব দুলাল বাড়ই বাপ্পী, তসলিম হুসাইন তাজ, মো. মুশফিকুর রহমান সাগর, মো. আবু সাঈদ খান, বর্তমান যুবনেতা জলিল তালুকদার, মো. কামরুজ্জামান মোল্লা, হারুন আর রশিদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ছাত্রলীগ জেলা সভাপতি মো. পারভেজ হাওলাদার।

পদ প্রত্যাশী এসব নেতাদের প্যনা পোস্টার ও প্রচারণায় এখন নতুন নিয়ে মহানগরী খুলনা। যোগাযোগ রাখছেন উপজেলা পর্যায়ের সম্ভাব্য কাউন্সিলরদের সাথে। তবে সব ছাপিয়ে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে নির্ধারিত হতে পারে কে কে হবেন আগামী দিনের খুলনা যুবলীগের কা-ারি। যুবলীগের বর্তমান নেতৃত্ব নাকি ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা এ পদে আসবেন- তা অনেকটাই নির্ভর করছে তাঁদের ব্যক্তিগত আমলনামার ওপর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংগঠনটির এক প্রভাবশালী নেতা জানান, জেলায় ১৭ জনের নাম এসেছে। সেগুলোর বিবেচনা করা হচ্ছে। আবার সংগঠনের জন্য অপরিহার্য, কিন্তু জীবন বৃত্তান্ত জমা দেননি- তাদের বিষয়গুলোও মাথায় রাখা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পদ-পদবীর ক্ষেত্রে রদবদল করা হলেও সংগঠনের সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এই নেতা বলেন, সামনে সিটি করপোরেশন ও জাতীয় নির্বাচন। এ নির্বাচনে যুবলীগের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই পরীক্ষিত নেতারাই আগামী দিনে নেতৃত্ব দেবেন।

জেলা যুবলীগের বর্তমান নেতা সভাপতি পদ প্রত্যাশী অজিত বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় আমাদের কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দায়িত্ব পেলে ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। সংকটকালে সংগঠনের জন্য কাজ করেছি। আগামীতে সেই ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাদীউজ্জামান হাদী বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকে জনপ্রতিনিধি হয়ে দায়িত্ব পালন করেছি। দলের জন্য সিদ্ধান্তের বাইওে যাইনি। যুব সংগঠন গড়তে কাজ করার সুযোগ চাই।

যুবলীগ নেতা ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী মাহফুজুর রহমান সোহাগ বলেন, কারা সংগঠনের জন্য কাজ করছেন, কর্মীরা ভাল জানেন। নেতৃত্ব পেলে যুবলীগকে আরো শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করা হবে।
জেলায় নেতৃত্ব প্রত্যাশী ছাত্রলীগের খুলনা কমিটির সাবেক সভাপতি আরাফাত হোসেন পল্টু বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে বিদায় নিয়েও যুবলীগ ও দলের জন্য কাজ করছি। আগামীতেও কাজ করে যেতে চাই।
নিজেকে নেতা নয়, একজন কর্মী হিসেবে সংগঠন গড়ার কাজে থাকতে চাই।

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ২৫ মে জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন ও ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মহানগের দ্বিতীয় দফায় মহানগর আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। দলীয় রাজনীতিতে মহানগর কমিটি সক্রিয় থাকলেও দীর্ঘদিন সম্মেলনের অভাবে নিস্ক্রীয় জেলা যুবলীগ। ২০২১ সালে ২২ জানুয়ারি সম্মেলন ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। সর্বশেষ ২০০৩ সালের ২৫ মে খুলনা জেলা যুবলীগের সর্বশেষ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে কামরুজ্জামান জামাল সভাপতি ও আক্তারুজ্জামান বাবুকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর প্রায় ৫/৬ মাস পর ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়। দীর্ঘদিন সম্মেলন বা কাউন্সিল না হওয়ায় জেলা যুবলীগের কার্যক্রম অনেকটা স্থবির। ৯টি উপজেলা ও ৬৮ ইউনিয়নে কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ।

অপরদিকে নগর যুবলীগে ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি নগর যুবলীগের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। ওই কমিটিতে অ্যাডভোকেট সরদার আনিসুর রহমান পপলুকে আহবায়ক এবং মনিরুজ্জামান সাগর ও হাফেজ মো. শামীম যুগ্ম-আহবায়ক ছিলেন। দ্বিতীয় দফার আহবায়ক কমিটিতে আহবায়ক হয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা শফিকুল ইসলাম পলাশ। আর যুগ্ম সম্পাদক হয়েছেন নগর ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন। মূলত যুবলীগের নগর কমিটিই খুলনার রাজনীতিতে ব্যতিক্রম ধারার সূচনা করেছে।

সাংগঠনিক তৎপরতা : এদিকে  খুলনা মহানগর ও জেলা যুবলীগের সম্মেলন সফল করা লক্ষে খুলনা মহানগর ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যৌথ কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টায় দলীয় কার্যালয় অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শেখ মো. আবু হানিফ। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আসাদুজ্জামান রাসেলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের আহবায়ক মো. সফিকুর রহমান পলাশ। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন।

উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. গোলাম মাওলা টিংকু, মো. শরিফুল ইসলাম প্রিন্স, মো. কামরুল ইসলাম, মো. আশরাফুল আলম বাবু, মো. মোজাহার হোসেন মোজো, মো. ইউসুফ আলী মন্টু, মো. রাজিব হুসাইন, মোস্তাফিজুর রহমান কামাল, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, শফিকুল ইসলাম অভি, মো. ইসমাইল হোসেন ইমন, শেখ রায়হান উদ্দিন, মো. রেজাউল ইসলাম রাজা, মো. ফেরদৌসুর রহমান, মো. আসাদুল ইসলাম সানি, মো. আমিরুল ইসলাম বাবু, মো. শিহাব উদ্দিন, মো. সরোয়ার হোসেন গহন, কুমারেশ মন্ডল, মাহমুদুন্নবী মিল্টন, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, অহিদুজ্জামান, মো. নূর ইসলাম, মো. নূর হাসান জনি, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, মো. তাজমুল হক তাজু, হারুন অর রশীদ রাজা, শহীদ মৃধা, কায়সার আহমেদ, শাহজাহান শিকদার, মো. রফিকুল ইসলাম রাসেল, মো. সাগর, মো. মারুফ চৌধুরী রিমন, মো. আকরাম হোসেন, মো. মতিয়ার রহমান, আরিফুল ইসলাম টুটুল, জাকির হোসেন খোকন, রবিন ধর, মো. কামরুল ইসলাম ইকবাল, মো. রফিকুল ইসলাম কাজল, মো. মনিরুল ইসলাম, মুন্সি মো. শামিম, মো. সাহিদ, মো. রিপন, মো. নূর ইসলাম, আব্দুর রব সানা, উজ্জল হাওলাদার, মো. শিমুল হোসেন, সুজল সেন, সফিকুল ইসলাম সোহাগ, শিশির বর, নাসির হোসেন, আবু নাঈম, বিজয় কুমার দাস, জুয়েল শেখ, শ্রাবণ, শরিফ জুয়েল, জাহিদুর রহমান জাহিদ, আরিফুল ইসলাম অনিক, রাসেল ফেরদাউস রানা, অহিদুল ইসলাম ডালিম, শওকত হোসেন, লিটন মাহমুদ, হামিদা বেগম, আফরিন আক্তার, ময়না বেগম, রিনা রিনা, আয়শা খাতুন।

অপরদিকে দপ্তর ও শৃঙ্খলা উপ-কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে সোমবার বিকাল ৪ টায় দলীয় কার্যালয়ে প্রথমে দপ্তর উপ-কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সন্ধ্যা সাতটায় শৃঙ্খলা উপ-কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। দপ্তর উপ-কমিটি এর আহবায়ক আসাদুজ্জামান রিয়াজ এর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অভিজিৎ পাল এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত দপ্তর উপ-কমিটির সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন আব্দুল কাদের শেখ, নূর হাসান জনি, জহির আব্বাস, আল মাহমুদ প্রিন্স, দিলীপ বর্মন, মীর মনির, সাদ আহম্মেদ খান, শাহ্ আরাফাত রাহীব, সাইফুল ইসলাম মিরাজ, উজ্জল রায়, বেনজির হোসেন প্রমুখ।

শৃঙ্খলা উপ-কমিটি এর আহবায়ক আব্দুল কাদের শেখ এর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মোস্তফা শিকদার এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা উপ-কমিটির সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন এস এম হাফিজুর রহমান হাফিজ, রোজি ইসলাম নদী, শেখ মোঃ হাদিউজ্জামান, শেখ মোহাম্মদ আলী, শওকত হোসেন, নাসির উদ্দিন স্বজল, মেহেদী হাসান, মুসফিকুর রহমান সাগর, মোঃ পারভেজ হাওলাদার প্রমুখ।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!