খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  রাঙামাটির সাজেকে শ্রমিকবাহী মিনি ট্রাক পাহাড়ের খাদে পড়ে ৯ জন নিহত

খুলনায় ড্রোন উড্ডয়নে মানা হচ্ছে না নীতিমালা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর বিভিন্ন স্থানে উড়ানো হচ্ছে ড্রোন। শখের বশে এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজেই মানুষ ড্রোন ব্যবহার করছে। অনেকেই ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ড্রোনের মাধ্যমে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সেগুলো ছড়িয়ে দিচ্ছে। খোলাবাজার ও বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ড্রোনগুলোর বৈধতা এবং উড্ডয়নের নীতিমালা সম্পর্কে জানে না অনেকেই। তবে প্রশাসনের পক্ষে জানানো হয়েছে, ড্রোন ব্যবহারের নিয়ম ভঙ্গ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্প্রতি ড্রোন নিবন্ধন ও উড্ডয়ন নীতিমালা-২০২০ চূড়ান্ত করে রাষ্ট্রপতির নির্দেশ ক্রমে গেজেট জারি করা হয়েছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, শর্ত ভঙ্গ করে কেউ উৎপাদন ও উড্ডয়ন করলে দন্ডবিধি-১৮৬০ ও বেসামরিক বিমান চলাচল আইন-২০১৭ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

নীতিমালায় অনুযায়ী, ৫ কেজি ওজনের বেশি ড্রোন উৎপাদনের ক্ষেত্রে জননিরাপত্তা বিভাগের অনাপত্তি নিতে হবে। তবে খেলনা জাতীয় ড্রোনের জন্য অনুমতি লাগবে না। আর ড্রোন আমদানির ক্ষেত্রে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত পদ্ধতি ও আমদানি নীতি পালন করতে হবে। পাশাপাশি বিমানবন্দরের ৩ কিলোমিটারের ভেতরসহ নিষিদ্ধ ও বিপজ্জনক এলাকায় ডোন উড্ডয়ন করা যাবে না।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বিশ্বব্যাপী কৃষিকাজ, কৃষি উন্নয়ন ও আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ, পরিবেশ ও ফসলের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ড্রোন ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া মশার ওষুধ ও কীটনাশক স্প্রে, বিভিন্ন প্রকার সার্ভে, চলচ্চিত্র নির্মাণ, গবেষণা, জরুরি সাহায্য প্রেরণ, নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মানুষবিহীন আকাশযান ড্রোন ব্যবহার হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলায়ও এর ব্যবহার বাড়ছে।

খুলনা মহানগরীতেও ড্রোনের ব্যবহার আছে। বিশেষ করে রয়্যাল মোড় চত্ত্বর, খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পাশে, শিববাড়ি মোড়, রূপসা ব্রীজ এলাকা, লঞ্চঘাট এলাকাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ড্রোন ব্যবহার করতে দেখা যায়। বেশিরভাগ ড্রোন ব্যবহারকারী ভিডিও ফুটেজ, ষ্টিল পিকচার ফেসবুক, ইউটিউব চ্যানেলসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ব্যবহার করেন। তবে ড্রোন ব্যবহারের নীতিমালা সম্পর্কে না জানায় অনেকেই অতিগুরুত্বপূর্ণ স্থানেও ড্রোন ব্যবহার করছেন। যা অনেক সময় রাষ্ট্রের জন্য ঝুঁকি হয়ে যেতে পারে।

এদিকে খোলা বাজারে ড্রোন বিকিকিনি এবং বিদেশ থেকে অনুমোদনহীনভাবে ড্রোন আসা বন্ধ না হলে এটার ব্যবহার বন্ধ করা ভবিষতে বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, সুন্দরবনে জলদস্যূদের হাতে এই ড্রোন সহজে চলে গেলে জেলেসহ সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়বে।

এদিকে নীতিমালায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয়, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, গোপনীয়তা, বিমান চলাচলের সুরক্ষা ভঙ্গকারী ড্রোনচালক বা নিয়োগকারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি জনসাধারণ, প্রাণীর জীবন এবং রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ও সম্পত্তির ক্ষতি হলে দেশের প্রচলিত আইনে দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দন্ড ও আর্থিক দন্ড দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া নীতিমালায় ড্রোন উড্ডয়নের জন্য গ্রিন, ইয়েলো ও রেড- এ ৩ জোনে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে গ্রিন জোনে সর্বোচ্চ ৫০ ফুট পর্যন্ত উড়ানো যাবে এবং সেটি বিমানবন্দরের ৩ থেকে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে করা যাবে। তবে ১০০ ফুট উচ্চতায় উড্ডয়নের ক্ষেত্রে বিমানবন্দর থেকে ৫ কিলোমিটারের বাইরে যেতে হবে। তবে গ্রিন জোনে উড্ডয়নের জন্য কোনো ধরনের অনুমতির প্রয়োজন হবে না।

ইয়েলো জোনে রয়েছে সংরক্ষিত এলাকা (রাষ্ট্রের ভূমি বা আঞ্চলিক জলসীমার উপরিভাগে কোনো সুনির্দিষ্ট আকাশসীমা যার অভ্যন্তরে বিমান চলাচল নির্দিষ্ট কিছু শর্তসাপেক্ষে সংরক্ষিত)। এছাড়া রয়েছে সামরিক ও ঘনবসতি জনসমাগম পূর্ণ এলাকা। অনুমোদন সাপেক্ষে এ জোনে উড্ডয়ন করা যাবে। আর রেড জোনের আওতাভুক্ত হচ্ছে নিষিদ্ধ এলাকা (রাষ্ট্রের ভূমি বা আঞ্চলিক জলসীমার উপরিভাগে কোনো সুনির্দিষ্ট আকাশসীমা যার অভ্যন্তরে যে কোনো বিমান চলাচল নিষিদ্ধ)। রয়েছে বিপজ্জনক এলাকা (কোনো আকাশসীমা যার অভ্যন্তরে কোনো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিমানের উড্ডয়ন বিপজ্জনক) ও বিমানবন্দর, কেপিআই ও বিশেষ কেপিআই এলাকা। সেখানে কোনো ড্রোন উড্ডয়ন করা যাবে না। তবে বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে পরিচালনা করা যাবে। সূত্রমতে, গ্রিন জোনে ৫ কেজি ওজনের ড্রোন ১০০ ফুট উচ্চতায় বিনোদন হিসেবে অনুমতি ছাড়াই পরিচালনা করা যাবে। তবে এর বেশি হলে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নির্ধারিত নিয়মাবলী অনুসরণ করতে হবে।

খুলনায় অবাধে ড্রোন উড্ডয়নের বিষয়ে কেএমপির মিডিয়া বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো: মারুফ হুসাইন খুলনা গেজেটকে বলেন, ড্রোন উড্ডয়নের নীতিমালা অনুযায়ী আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খুলনা গেজেট/নূর




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!