নগরীর খালিশপুর পার্ক লাল হাসপাতালের পাশের একটি বাড়ি থেকে চান্দা (৫০) নামে এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার সমস্ত শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ মৃত্যুর ঘটনায় ওই এলাকায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, ১০ বছর আগে চান্দার প্রথম স্বামী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিন বছর পর চার্চ বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির সাথে তার বিয়ে হয়। চার্চ ঢাকায় একটি জুস কোম্পানীতে চাকরি করতেন। বিয়ের পর থেকে আর ঢাকায় ফিরে যান নি তিনি। চার্চের ঘরে চান্দার দু’টি সন্তান হয়।
বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে প্রায় কলহ-বিবাদ লেগে থাকত। পান থেকে চুন খসলে তাকে মারধর করা হতে। বুধবার (১৭ আগস্ট) রাতে তাদের মধ্যে আবারও ঝগড়া শুরু হয়। পরে তারা ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে উঠে সংবাদ না পেয়ে প্রতিবেশীরা খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেন ফ্যানের সাথে তার নিথর দেহ ঝুলে রয়েছে। শরীরে রয়েছে একাধিক আঘাতের চিহ্ন। তবে প্রতিবেশীরা বলছেন বুধবার রাতে স্বামী চার্চ বিশ্বাস অনেক মেরেছে। মারের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। পরে ঘটনাটি ধামা চাপা দিতে লাশ ঝুলিয়ে রাখার নাটক সাজানো হয়েছে।
চান্দার মৃত্যু সম্পর্কে জানতে চাইলে আগের ঘরের বড় ছেলে রাব্বি বলেন, চার্চ বিশ্বাস ঢাকায় জুসের কোম্পানীতে চাকরি করতেন। তার মাকে বিয়ে করার পর এখানে ইজিবাইকের ব্যবসা করেন। তাছাড়া আরও কয়েকটি ইজিবাইক আছে সেগুলো ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করেন। রাতে যখন তার মাকে চার্চ বিশ্বাস মারধর করছিল তখন ছোট ভাই নয়ন সাধারণ ডায়েরী করতে থানায় গেলে মাশিউর নামে একজন অফিসার সেটি গ্রহণ করে। পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বললে তাকে থানা থেকে বের করে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে মায়ের মৃত্যুর ঘটনার বিচার চাইতে পুলিশের কাছে বারবার ধর্ণা দিলে উল্টাে পুলিশের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত হতে হয় তাকে।
খালিশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চান্দার মৃত্যুর খবর জানতে পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। মৃতের ঝুলন্ত লাশ নামিয়ে সুরাতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এখানে মৃতের কোন সন্তানকে মারধরের ঘটনা ঘটেনি বা থানা থেকে কাউকে জোর করে বের করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেনি। ঘটনাস্থল থেকে মৃতের স্বামী ও তার ভাইকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এমএস