খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন সভাপতি মিশা, সাধারণ সম্পাদক ডিপজল

খুলনার কৃষি অর্থনীতি বাঁচাতে একমাত্র ভরসা ২৪ নদীর পানি

কাজী মোতাহার রহমান

ভাদ্র মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বৃষ্টির দেখা মেলেনি। চৈত্র-বৈশাখের ন্যায় কৃষি ভূমি শুকিয়ে গেছে। বর্ষার ধান আমন, পাট, আউশ গ্রীষ্মকালীন সবজি পটল, ঝিঙ্গে, চিচিঙ্গা, টমেটোসহ শাক সবজি শুকাতে বসেছে। জেলার কৃষি অর্থনীতি বাঁচাতে নদীর পানি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। সে ক্ষেত্রে পাইকগাছা ও কয়রার নদী বাদ দিয়ে কৃষকের একমাত্র ভরসা ২৪ নদীর পানি।

আষাঢ়-শ্রাবণে খুলনার কৃষক কাঙ্খিত আমনের বীজতলা তৈরি করতে পারেনি। এ মৌসুমে আমন আবাদে দেড় মাস পিছিয়ে পড়েছে। ফলে একদিকে যেমন উৎপাদন খরচ বেড়েছে, অপরদিকে কৃষকের চিন্তা ও ঋণের ভার বেড়েছে।

জেলায় জুন-আগষ্ট ৩৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। গত বছর উল্লিখিত ৩ মাসে ১,১২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। চৈত্র ও বৈশাখের ন্যায় দাবদাহ চলছে। তাপমাত্রা ৩৭-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। স্বস্তির আবহাওয়া পেতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে।

জেলার ৯৩ হাজার ১৭০ হেক্টর আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আজ পর্যন্ত ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে রোপন কাজ হয়েছে। এক হাজার ৩১৬ হেক্টর জমির পাট পঁচাতে যেয়ে ছোট খাটো চৌবাচ্চা ব্যবহার করতে হচ্ছে। ৩ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমির আউশ মাঠে মারা যাচ্ছে। তরমুজ, কাঁচা মরিচ, হলুদ, আদা, কঁচুর মুখি, মিস্টি কুমড়া, চিচিঙ্গা ও শীতকালীন অন্যান্য শাক সবজির ভূমি সতেজতা হারিয়েছে।

পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের ভাষ্য, ছোট চৌবাচ্চার মধ্যে পলিথিন দিয়ে ঢেকে সাড়ে ৪শ’ একর জমির পাট পঁচানো হয়েছে। পাট পঁচাতে এবার নদীর পানি ব্যবহার হচ্ছে। আমন রোপনের অগ্রগতি কম। ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে।

কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প এর জুলাই-আগষ্ট মাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেলার অধিকাংশ নদ-নদী, খাল, গভীর ও অগভীর নলকূপের পানি লবণাক্ততার কারণে আমন আবাদের জন্য নিরাপদ নয়। কয়রা উপজেলার কপোতাক্ষ নদ সংলগ্ন উত্তর বেদকাশি, লালুয়া বাগালী, দক্ষিণ বেদকাশি, জালিরহাট, ঝিলাবাড়ি, মহেশ্বরীপুর, মদিনাবাদ, কয়রা, আমাদি, চাঁদ আলী, পাইকগাছা উপজেলা সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের বাকা বাজার, রাড়–লী, আমতলা, লস্কর, মাহমুদ কাঠি, হরিঢালী, চাঁদখালী বাজার, কপিলমুনি বাজার, ভদ্রা নদী সংলগ্ন দেলুটি, শিবসা নদী সংলগ্ন গড়–ইখালী, বেতবুনিয়া ও শোলাদানা নদীর পানি আমন চাষের উপযোগি নয়। এসব এলাকার পানি লবণাক্ততা বেশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার প্রকৌশলী দিপংকর বালা তথ্য দিয়েছেন, বাকি সাত উপজেলার রূপসা, আঠারোবেকি, ভৈরব, আত্রাই, চিত্রা, শোলমারি, ভদ্রা, বাগমারা, কাজিবাছা, নারায়ণখালি, ঝপঝপিয়া, গ্যাংরাইল, নলুয়া, পশুর, চুনকুড়ি, ঢাকি, শিবসা, মোংলা, খুদে, লাউডোব, চরানদী, ময়ূর, তলার খাল ও বুড়ি ডাবর খালের পানি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এসব উপজেলায় উল্লিখিত নদী-খালে ভাটার সময় লবণাক্ততা কমে যায়। ফলে রূপসা উপজেলার তিলক, শিয়ালী, শ্রীফলতলা, দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর, কোলা বাজার, তেরখাদা উপজেলার মধুপুর, শাচিয়াদাহ, আজগড়া., ছাগলাদাহ, ফুলতলা উপজেলার আটরা গিলেতলা, ডুমুরিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর, শোভনা, গুটুদিয়া, বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালি, গংগারামপুর, দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা, বানিশান্তা, লাউডোব ও পানখালি এলাকার আমন ক্ষেত্রে নদীর নিরাপদ পানি দেওয়া সম্ভব হবে।

সূত্র বলেছে, এ মৌসুমে জেলায় ২ লাখ ৭২ হাজার মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হলেও অনাবৃষ্টির কারণে উৎপাদন কমবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!