খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬ ডিগ্রি, খুলনায় ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে
  চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে প্রাণ গেল ১ জনের
  দাবদহের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ল ৫ দিন, খুলবে ২৮ এপ্রিল
পরিকল্পিত আধুনিক নগরায়ণের আহবান

কেডিএ’র উন্নয়ন কাজের ধীরগতিতে জনভোগান্তি বাড়ছে : উন্নয়ন ক‌মি‌টি

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনার আঞ্চলিক উন্নয়নে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) স্থবিরতা, উন্নয়ন প্রকল্পের গতিহীনতা, প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে জনভোগান্তি, অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ এবং কেডিএ’র চেয়ারম্যান হিসেবে স্থানীয় প্রতিনিধি নিয়োগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি।

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। খুলনার উন্নয়নে জনপ্রতিনিধিত্বশীল খুলনা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে কেডিএর কাজের সমন্বহীনতা থাকায় অপরিকল্পিত নগরায়ণ হচ্ছে বলে দাবি করেন সংবাদ সম্মেলনে। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ মনে করেন এ সমন্বহীনতা দূর করতে পারলে পরিকল্পিত আধুনিক নগর গড়ে তোলা সম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ মোহাম্মাদ আলী। তিনি বলেন, নগরে পরিকল্পিত রাস্তা ও ড্রেন ছাড়া যত্রতত্র ভবন গড়ে ওঠেছে। কেডিএর তৈরি আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকাগুলোও নির্মাণ করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। সোনাডাঙ্গা ও ‍নিরালা আবাসিক এলাকার একটি ফেজও গৃহস্থালী বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা করেনি। মুজগুন্নী মহাসড়কের দুই পাশে বাণিজ্যিক প্লট তৈরি করলেও মূল সড়কে আসার জন্য কোনো সংযোগ সড়ক তৈরি করেনি। দৌলতপুর কেডিএ’র কল্পতরু মার্কেটে অবাদে গরু চরে, রূপসা কেডিএ মার্কেটের অবস্থা জরাজীর্ণ এবং নিউ মার্কেটের পিছনের সড়কটি ড্রেন ছাড়া ও ভাঙাচোরা। এসব কারণ এখন নগরের মানুষের দুর্ভোগের চরম ভোগান্তি হয়ে দাড়িয়েছে।

মোহাম্মাদ আলী বলেন, খুলনায় এ মুহূর্তে দরকার আগামী ৫০ বছরের একটি মাস্টার প্লান প্রকাশ করা। তা না হলে অচিরেই খুলনা নগরী একটি বস্তিতে পরিণত হবে।

মোহাম্মাদ আলী সম্প্রতি কেডিএর অবরাদ্দকৃত ৩১টি প্লট নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারার অভিযোগ তুলে বলেন, বাইরে কাঠাপ্রতি ৯ লাখ টাকা দরে নির্ধারণ হলেও কেডিএ সেখানে ৫ লাখ টাকা দরে বরাদ্দ নিয়েছে। যা নিয়মবহির্ভূত ও দুর্নীতির সামলি বলে দাবি করে তিনি। এছাড়া প্রকল্পের ভূমি উন্নয়নের নামে চলছে নিম্নমানের কাজ। তাছাড়া ২০০০ সালের পরে কেডিএ যে সংযোগ সড়কগুলো করেছে তা এখন মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে বাস্তুহারা সিটি বাইপাস সড়ক, খুলনার সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে সিটি বাইপাস সংযোগ সড়ক দুটি এতই নিম্নমানের যে, মাত্র দুই বছরের মধ্যে সড়ক দুটি চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আধুনিক ও পরিকল্পিত নগর বিনির্মাণে ১৯৬১ সালে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) গঠন করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে খুলনার উন্নয়নে কেডিএ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ণের মাধ্যমে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু অত্যন্ত হতাশার ব্যাপার হল গত দুই দশকে খুলনার উন্নয়নে কেডিএর উন্নয়ন কাজ মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিশেষ করে উন্নয়ন কর্মেকাণ্ডে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা, দীর্ঘসূত্রিতা ও নানা ধরণের অনিয়ম। এর ফলে খুলনাবাসী তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাঙ্খিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, পিছিয়ে পড়ছে সম্ভাবনার খুলনা শহর।

সংবাদ সম্মেলনে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ বিদায় চেয়ারম্যান আবুল মকিম সরকারের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয় তদন্ত করা ও কেডিএ’র চেয়ারম্যান হিসেবে স্থানীয় প্রতিনিধি নিয়োগের দাবি জানান। এদিকে খুলনার উন্নয়ন বাস্তবায়ন করার লক্ষে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি কেডিএর সম্মুখে অবস্থান ধর্মঘাট পালন করবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. আবুল বাসার, মিজানুর রহমান বাবু, চৌধুরী মো. রায়হান ফরিদ, কোষাধ্যক্ষ মিনা আজিজুর রহমান, দৈনিক সময়ের খবরের সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ মোল্ল্যা, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা, নাগরিক নেতা সুজন সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, মো. মনিরুজ্জামান রহিম, মিজানুর রহমান জিয়া, প্রচার সম্পাদক মফিদুল ইসলাম টুটুল, জোবায়ের আহমেদ খান জবা, রকিব উদ্দিন ফারাজী, এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব, মোল্লা মারুফ রশিদ, শেখ মুশার্রফ হোসেন, সৈয়দ এনামুল হাসান ডায়মন্ড, আহমেদ ইব্রাহিম তন্ময়, খুলনা উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান শরিফ শফিকুল হামিদ চন্দন, ডা. সৈয়দ মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু, মো. শফিকুল ইসলাম, মো. রহিম, আতিয়ার রহমান প্রমূখ।

 

খুলনা গেজেট / এআর




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!