খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  রাঙামাটির সাজেকে শ্রমিকবাহী মিনি ট্রাক পাহাড়ের খাদে পড়ে ৯ জন নিহত

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর নিয়ে জবানবন্দি দিলেন দুই মাদ্রাসাশিক্ষক

গেজেট ডেস্ক

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামির মধ্যে মাদ্রাসার দুই শিক্ষক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেন তাঁদের জবানবন্দি নেন।

এর আগে চার দিনের পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেলা দুইটায় তাঁদের আদালতে নেওয়া হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক নিশি কান্ত সরকার তাঁদের আদালতে নেন। আগামীকাল রোববার মামলার অন্যতম প্রধান দুই আসামি মাদ্রাসার দুই ছাত্র আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে পারেন।

ওই দুই শিক্ষক হলেন কুষ্টিয়া শহরের জগতি পশ্চিমপাড়া এলাকার ইবনি মাসউদ (রা.) মাদ্রাসার শিক্ষক ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামের মো. আল আমিন (২৭) এবং পাবনার আমিনপুর থানার দিয়াড় বামুন্দি এলাকার বাসিন্দা মো. ইউসুফ আলী (২৬)। দুই ছাত্র হলেন একই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শিংপুর গ্রামের মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠুন (১৯) এবং জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর (গোলাবাড়িয়া) এলাকার সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০)।

আদালত পুলিশ সূত্র জানায়, বেলা দুইটার দিকে দুই মাদ্রাসাশিক্ষক মো. আল আমিন (২৭) ও মো. ইউসুফ আলীকে (২৬) পুলিশের কড়া পাহারায় আদালতে নেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেন তাঁর খাসকামরায় প্রথমে ইউসুফ আলীর জবানবন্দি নেন। ঘণ্টাব্যাপী জবানবন্দি শেষে পৃথকভাবে আল আমিনেরও জবানবন্দি নেওয়া হয়। বিকেল পাঁচটার দিকে জবানবন্দি শেষে পুলিশের কড়া পাহারায় প্রিজন ভ্যানে করে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

আগামীকাল রোববার মাদ্রাসার দুই ছাত্র মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠুন ও সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হচ্ছে। এ দুই ছাত্রও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে পারেন। ভাস্কর্য ভাঙায় সরাসরি অংশ নেওয়া ওই দুই ছাত্র ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।

মামলা-সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, দুই মাদ্রাসাশিক্ষক আদালতে স্বীকার করেছেন, তাঁরা দুই ছাত্রকে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যেতে বলেছিলেন। গত শনিবার (৫ ডিসেম্বর) ঘটনার পরদিন সকালে খাবার খাওয়ার সময় ওই দুই ছাত্র তাঁদের (শিক্ষকদের) জানান, তাঁরা রাতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করে এসেছেন। এমন কথা শোনার পর ওই দুই শিক্ষক তাঁদের মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যেতে বলেন।

পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ আসামিদের শনাক্তের জন্য মাদ্রাসায় গেলে এ দুজন শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাপারে তথ্য দিতে অস্বীকার করেছিলেন। তাঁরা এ দুই ছাত্রকে চেনেন না বলে জানান। ছাত্রদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করায় তাঁদের মামলায় আসামি করা হয়। ভাস্কর্য ভাঙচুরের আগে ঘটনা ঘটবে, এমন তথ্য ওই মাদ্রাসার আরেক শিক্ষক আগে থেকেই জানতেন। ওই শিক্ষককে পুলিশ এখনো খুঁজছে। আগামীকাল রোববার মাদ্রাসার দুই ছাত্র মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠুন ও সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হচ্ছে। এ দুই ছাত্রও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে পারেন। পুলিশের তিনজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে আটজন পুলিশ কর্মকর্তা আসামিদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। ভাস্কর্য ভাঙায় সরাসরি অংশ নেওয়া দুই ছাত্র ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।

৪ ডিসেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরের দিন শনিবার দিবাগত রাতে কুষ্টিয়া পৌরসভার সচিব কামাল উদ্দীন এ ঘটনায় বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।

 

খুলনা গেজেট / এআর




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!