খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৬
  কিশোরগঞ্জে বাসচাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
  জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো : প্রধানমন্ত্রী

করোনায় মারাত্মক সংকটে কিন্ডারগার্ডেন স্কুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর কিন্ডারগার্ডেন স্কুলগুলোর ব্যবসায় ধস নেমেছে। অনেকেই বাড়ি ভাড়া দিতে না পেরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সরঞ্জাম বিক্রি করে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। স্কুলগুলো ঠিকমতো না চলার কারণে অনেকেই শিক্ষকতা পেশা পরিবর্তন করেছেন।

২০২০ সালের ১৮ মার্চ সারাদেশে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কয়েকটি ধাপে পদক্ষেপ নেওয়া হয় বিদ্যালয়গুলো খোলার জন্য। এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে করোনা সংক্রমণের মাত্রা কিছুটা কমে আসলে বিদ্যালয়গুলো খোলার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী ১২ সেপ্টেম্বর সারাদেশে বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এর আগে প্রি প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রেখে সপ্তাহে দু’দিনের জন্য অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার নির্দেশ দেয় সরকার। সরকারের এ সিদ্ধান্ত কিন্ডারগার্ডেন স্কুলগুলো মানলেও কিছু কোচিং সেন্টারের শিক্ষক তা মানছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।

সানফ্লাওয়ার কিন্ডারগার্ডেনের বাংলা মাধ্যমের শিক্ষক মেঘনা আক্তার জানান, আগামী রোববার থেকে সপ্তাহে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস চালু হবে। প্লে, নার্সারী ও কেজি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিষয়ে এখনও কোন নির্দেশনা আসেনি। বাচ্চারা স্কুলে না আসলেও তারা নিয়মিত কোচিং সেন্টারে ক্লাস করছে। তাছাড়া বাচ্চাদের একটি বড় অংশ গ্রামে চলে গেছে। অভিভাবকরা নিয়মিত ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করছেন। করোনাকালীন অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া হলেও অনেকে আর্থিক সমস্যার কারণে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পারেনি।

সোনার বাংলা শিশু বিদ্যা নিকেতনের পরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সপ্তাহে দু’টো ক্লাস পরিচালনা করছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দু’ঘন্টা করে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছেন তিনি। এরমধ্যে প্লে ও নার্সারী শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাসায় বসে বার্ষিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বেতনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কোন প্রকার চাপ দেওয়া হচ্ছেনা। সামর্থ অনুযায়ী বেতন প্রদানের জন্য তাদের অনুরোধ করা হচ্ছে। অনেকে কোচিং সেন্টারে বাচ্চাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্ডেন এসোসিয়েশন খুলনা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক ও অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশল কিন্ডারগার্ডেন পরিচালক এস এম ইকবাল হোসেন তুহিন জানান, সরকারি নিয়ম মোতাবেক দু’ঘন্টা শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। রুটিন অনুযায়ী ক্লাস চলছে তার প্রতিষ্ঠানে। প্লে থেকে কেজি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বন্ধ। মূলত: কিন্ডারগার্ডেন স্কুলগুলো তিন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ওপর নির্ভর করে চলে। এ সময় তিনি পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, কোচিং সেন্টারগুলো যদি তাদের কার্যক্রম চালাতে পারে তাহলে তারা পারব না কেন?

তিনি অভিযোগ করেন, স্কুলগুলো বন্ধ রাখার কারণে শিক্ষার্থীরা কোচিং সেন্টারে ভিড় করছে। এর ফলে কিন্ডারগার্ডেনগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে গেলে এর সাথে জড়িতরা বেকার হয়ে পড়বে। অনেকে তাদের পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় যোগ দিয়েছেন। আবার অনেকেই বাড়ি ভাড়া দিতে না পেরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সরঞ্জাম বিক্রি করে দিয়েছেন।

টুটপাড়া এলাকার দু’টো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের সরঞ্জম বিক্রি করে দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। এ অবস্থায় কিন্ডারগার্ডেন স্কুলগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা জন্য মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন তারা।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের কেন্দ্রিয় মহাসচিব মোঃ মিজানুর রহমান সরকার খুলনা গেজেটকে জানান, কিন্ডারগার্ডেনগুলোর পেছনে সরকারের কোন অর্থ ব্যয় করতে হয়না। স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে গেলে সরকারকে এ সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য আরও অতিরিক্ত ২৫ হাজার বিদ্যালয় নির্মাণ করতে হবে। এ পেশার সাথে জড়িতদের চাকরীর ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সচল রাখতে সরকারের প্রতি আর্থিক প্রণোদনার অনুরোধ জানান।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!