খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন সভাপতি মিশা, সাধারণ সম্পাদক ডিপজল

কচুয়ায় ব্যবসায়ীর টাকা আত্মসাত ও জোরপূর্বক চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট

বাগেরহাটের কচুয়ায় বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীর টাকা আত্মসাত ও জোরপূর্বক চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে শুক্রবার রাতে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী মোঃ সোহেল আহমেদ বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

ক্ষতিগ্রস্থ মোঃ সোহেল আহমেদ সিলেট জেলার খাদিমনগর উপজেলার বহর গ্রামের আসফর আলী শেখের ছেলে এবং কচুয়া উপজেলার সদরের মীর মার্কেটে জেমিস জুতার শোরুমের মালিক। ব্যবসার সুবাদে বেশকিছুদিন মোঃ সোহেল আহমেদ কচুয়ায় ভাড়া থাকতেন।

মোঃ সোহেল আহমেদ বলেন, কচুয়া উপজেলার টেংড়াখালি (খাদ্য গুদামের পাশে) গ্রামের সালাম শেখের ছেলে সবুজ শেখ (৩০) আমার দীর্ঘ দিনের বন্ধু। বন্ধুত্বের সুবাদে সবুজের পরামর্শে মীর মার্কেটে জুতার ব্যবসা শুরু করি। ঢাকাতে অন্য ব্যবসা থাকায় সবুজ কচুয়ার শোরুম পরিচালনা করত। ব্যবসা ও বন্ধুত্বের সূেেত্র আমার স্ত্রী বিউটির সাথে সবুজের ভাল সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সূত্র ধরে সবুজ ও তার স্ত্রী আসমা খাতুন (২২) আমার স্ত্রী বিউটি বেগমকে কুমিল্লা জেলার বড়ুয়া উপজেলার মহেশপুর গ্রামের আলি আশরাফের ছেলে জুয়েল রানার সাথে ভাগিয়ে দেয়। সবুজ ও সবুজের স্ত্রী আসমা খাতুনের যোগসাজগে দুটি শিশু সন্তান রেখে আমার স্ত্রী চলে যায়। যাওয়ার সময় বাসায় থাকা নগদ ৭ লক্ষ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্নালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায়। সেই সাথে সবুজ ও তার স্ত্রী গা ঢাকা দেয়। সবুজ আমার শোরুম ও ব্যবসার অন্তত ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে যায়। উপয়ান্তু না পেয়ে সবুজ, সবুজের স্ত্রী ও জুয়েলের নামে মতিঝিল থানায় মামলা করি। মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে সবুজ আমাকে হুমকী-ধামকী দিতে থাকে। মামলা উঠিয়ে না নিলে আমাকে জীবনে মেরে ফেলারও হুমকী দেয় সবুজ। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সবুজের হুকুমে সিলেটের কাইয়ুমসহ ১০-১২ জন লোক আমাকে শো-রুম থেকে তুলে নিয়ে যায়। কচুয়া থানার ভিতর নিয়ে আমাকে হুমকী-ধামকী দেয়, মারধর করে। কোন মামলা না থাকায় কচুয়া থানার ওসি আমাকে ছেড়ে দিতে বলেন। তখন সবুজের লোকজন আমাকে আবার শোরুমে নিয়ে আসেন। শোরুম থেকে আমার রুপালী ব্যাংক, কচুয়া শাখার ২৮৭৩০২০০০০৮১৩ নং হিসাবের চেকবইসহ কচুয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শেখ সুমনের অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শেখ সুমনের সামনে জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে ১৮টি চেকে মোট ২১ লক্ষ টাকা লিখে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। একটি স্টাম্পে আমার কাছে টাকা পাবে এমন চুক্তি করে নেয় এবং আমার সেলসম্যান ইমরানের কাছে থাকা তার মায়ের নামের ৫ শতক জমির দলিল কেড়ে নেয় তারা। ওই জমি দখলে নেওয়ারও হুমকি দেয় তারা। এসব ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকী দিয়ে আমাকে শোরুমে পাঠিয়ে দেয়।

এই অবস্থায় স্ত্রী ও টাকা হারিয়ে আমি খুবই বিপর্যস্ত অবস্থায় আছি। স্ত্রী, টাকা ও সম্পদ ফিরে না পেলে যেকোন সময় আমি মারা যেতে পারি। আমি যদি হঠাৎ মারা যাই, আমার মৃত্যুর জন্য সবুজ, সবুজের স্ত্রী ও আমার স্ত্রী বিউটি বেগম দায়ী থাকবে। প্রশাসনের সহযোগিতায় আমার স্বাক্ষর করা চেক, আমার বৈধ স্ত্রী, নগদ টাকা ও স্বর্নালঙ্কার ফেরত চাই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ব্যবসায়ী মোঃ সোহেল আহমেদ।

কচুয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও কচুয়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ সুমন বলেন, জোর করে চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি। মোঃ সোহেল আহমেদ কচুয়া বাজারের একজন ব্যবসায়ী। তার কাছে সিলেটের লোকজন টাকা পাবে, সেই টাকার প্রদানের জন্য সোহেল তাদেরকে চেক প্রদান করেছে। আমরা শুধু ঘটনার স্বাক্ষীমাত্র।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সবুজকে ফোন করা হলে সবুজের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, সিলেটের লোকজন কচুয়া বাজার কমিটির লোকজনসহ মোঃ সোহেল আহমেদকে থানায় নিয়ে আসছিল। যখন দেখেছি, এটা আমাদের থানার বিষয় না। তখন তাদেরকে চলে যেতে বললে তারা চলে যায়।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!