খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৬
  কিশোরগঞ্জে বাসচাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
  জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো : প্রধানমন্ত্রী

এ অঞ্চলের শিক্ষার হৃদপিণ্ড সরকারি বি এল কলেজ স্বমহিমায় গৌরবান্বিত (ভিডিও)

একরামুল হোসেন লিপু

“এসো জ্ঞানের সন্ধানে, ফিরে যাও দেশের সেবায়” এই নীতিবাক্যকে ধারণ করে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বিদ্যাপীঠ সরকারি ব্রজলাল কলেজ যেটি সরকারি বি এল কলেজ নামে অধিক পরিচিত প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এ অঞ্চলের অন্যতম  বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ যেটি স্বমহিমায় গৌরবান্বিত। কলেজের অবকাঠামো উন্নয়ন, ক্যাম্পাসের অপূর্ব সৌন্দর্য নান্দনিকতা প্রতিষ্ঠানটিকে উচ্চ মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ১২০ বছর পূর্বে ১৯০২ সালের ২৭ জুলাই ২টি টিনশেড ঘরে ক্লাস চালুর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। শিক্ষানুরাগী শাস্ত্রী ব্রজলাল চক্রবর্তী কলকাতার হিন্দু কলেজের আদলে ২ একর জায়গার উপর দৌলতপুর হিন্দু একাডেমী নামে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে হাজী মহম্মদ মহসীন ট্রাস্ট তার সৈয়দপুর এস্টেটের ৪০ একর জমি এই প্রতিষ্ঠানে দান করে এবং মাসিক ৫০ টাকা অনুদান বরাদ্দ করে।

প্রতিষ্ঠার ৬৫ বছর পর ১৯৬৭ সালের ১ জুলাই কলেজটি সরকারি কলেজে রূপান্তরিত হয়। ১৯৯৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে উন্নীত করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে ২১ টি বিষয়ে স্নাতক পর্যায়ে এবং ১৬ টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠদান করা হয়। এছাড়া প্রাইভেট স্নাতক পাস এবং স্নাতকোত্তর (১ম এবং শেষ পর্ব) কোর্স চালু আছে। কলেজটিতে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠদান কার্যক্রম চালু রয়েছে। বর্তমানে কলেজটিতে ২৫ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছেন। দুই শতাধিক শিক্ষক জ্ঞানের মশাল প্রজ্বলিত করছেন। কলেজটিতে রয়েছে ১১ টি সুদৃশ্য ভবন, ৫ টি ছাত্রাবাস, ২টি ছাত্রীনিবাস, সুদৃশ্য ১টি মসজিদ ও মন্দির, শহীদ মিনার, ভাস্কর্য, ৩ টি পুকুর, ২ টি খেলার মাঠ। রয়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো বিশাল এবং সমৃদ্ধ একটি গ্রন্থাগার। যে গ্রন্থাগারটিতে রয়েছে ৫০ হাজার বই।

২টি টিনশেড ঘরে ১৯০২ সালের ২৭ জুলাই থেকে প্রতিষ্ঠানটির ক্লাস শুরু হয। শুরুতে একটি বোর্ড অব ট্রাস্টির মাধ্যমে কলেজটি পরিচালনা করা হতো যার সভাপতি ছিলেন শাস্ত্রী ব্রজলাল চক্রবর্তী। প্রথমদিকে সম্পূর্ণ আবাসিক এই প্রতিষ্ঠানটি ‘চতুষ্পাঠী’ এবং ‘একাডেমি’ নামে দুইটি শাখায় বিভক্ত ছিলো। চতুষ্পাঠীর ছাত্রদের খাবার, পড়া এবং আবাসন খরচ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বহন করা হত। ১৯০৯ সালে সৈয়দ নওশের আলী এবং আটরা গিলাতলা নিবাসী মোঃ একরামউদ্দীন প্রথম মুসলিম ছাত্র ভর্তি হন। এবং পরবর্তীতে ১৯১০-১৯১১ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে প্রথম মুসলিম হোস্টেল নির্মিত হয়। মূল ভবনের বাইরে অবস্থিত এই মুসলিম হোস্টেলে আরবি এবং ফার্সি ভাষার ক্লাশ নেওয়া হতো। পরে তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নির্দেশে কলেজে প্রথম মুসলমান শিক্ষকও নিয়োগ দেওয়া হয়।

প্রতিষ্ঠাকালে ঘাটভোগের (ফকিরহাট, বাগেরহাট) জমিদার ত্রৈলক্যনাথ চট্টোপাধ্যায় জমি ক্রয় করে দেন। ১৯০৭ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি কলকতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়।

১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠাতা ব্রজলালের মৃত্যুর পরে কলেজের নামকরণ করা হয় ব্রজলাল হিন্দু একাডেমী। পরবর্তীতে একাডেমীকে কলেজে উত্তীর্ণ করা হয় এবং নাম সংক্ষিপ্ত করে বি এল কলেজ রাখা হয়। কলেজটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হয়। বর্তমানে কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!