খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ আটকে দিল যুক্তরাষ্ট্র

এক আমের ওজন ৫ কেজি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

একটি আমের ওজন কতটুকু হয়ে থাকে? বেশি হলে এক কেজি বা তারচেয়ে একটু বেশি। কখনো শুনেছেন আমের ওজন পাঁচ কেজি? বিষয়টি অবিশ্বাস্য হলেও এমন একজাতের আম মিলছে মাগুরার শালিখা উপজেলায়।

জানা যায়, মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলা আতিয়ার আতিয়ার রহমানের ভাগিনা ব্রুনাই থেকে ২০১১ সালে এ জাতের আম গাছের একটি ডাল নিয়ে এসেছিলেন। সেখান থেকে এ ব্রুনাই কিং আমের চারা গোটা জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে কলমের মাধ্যমে এ জাতের চারা তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিটি চারা ৫০০ টাকায় বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টার।

মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক ইমদাদ হোসেনের সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ব্রনাই কিং আমের চারা মূলত শালিখা উপজেলার আতিয়ার রহমানের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। তার ভাগনে ব্রনাই থেকে ২০১১ সালে এ জাতের আম গাছের একটি ডাল নিয়ে এসেছিলেন। সেখান থেকেই ব্রুনাই কিং জাতের আমের চারা গোটা জেলা ছড়িয়ে পড়েছে।’

আম সাধারণত এক কেজি বা তার চেয়ে একটু বেশি ওজনের হয়ে থাকে। কিন্তু ব্রুনাই কিং জাতের আম ওজনে পাঁচ কেজি পর্যন্ত হয়। ব্রুনাই কিং আম গাছের উচ্চতা ৮-১০ ফুট পর্যন্ত হয়। আকারে ছোট বলে কম জায়গায় বেশি চারা লাগানো সম্ভব। ব্রুনাই কিং আম দেখতে অনেকটা পেঁপের মতো লম্বা। কাঁচা অবস্থায় এর রং কালচে সবুজ। সাধারণত শ্রাবণ মাসের শেষ দিকে আম পাকে। স্বাদ অনেকটা ফজলি আমের মতো।

মাগুরা আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ব্রুনাই কিং আম দেখতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মসলা গবেষণা কেন্দ্রে আসছেন অনেকে। তিন বছর আগে মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টার থেকে ব্রুনাই কিং আমের চারা সংগ্রহ করে অফিসের সামনে রোপণ করেছিলাম। এ বছর তিনটি গাছে ২০-২৫টি আম ধরেছে। প্রত্যকটা আম চার থেকে পাঁচ কেজি ওজনের হয়েছে। অন্য আমের থেকে দেরিতে এই আম পেকে থাকে। তবে যদি বেশি খরা বা রোদ্দুর পড়ে তখন এই আমি একটু তাড়াতাড়ি পেকে যায়। এই আমের স্বাদ প্রায় ফজলি আমের মতোই।

তিনি আরও বলেন, ব্রুনাই কিং মূলত সৌন্দর্যবর্ধক আম। সৌন্দর্য পিপাসু মানুষেরা বাড়ির সামনে বা বাসা বাড়িতে ছাদ বাগান তৈরি করে এই জাতের আমগাছের চারা রোপণ করতে পারেন। আমগাছ আকারে ছোট এবং বেশি লম্বা হয় না। তাই অল্প জায়াগার মধ্যে এই আমগাছের চারা রোপণ করা যায়। এখন এই আম দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছেন। অনেকেই এই জাতের আমগাছের চারা রোপণের উদ্যোগ নিয়েছেন।

আমের বৈশিষ্ট্য

১. এ জাতের আম গাছের উচ্চতা ৮-১০ ফুট।
২. বৈশাখ-আষাঢ় মাসের মধ্যে এ জাতের চারা রোপণ করতে হয়।
৩. চারা রোপণের ২ বছরের মধ্যেই আম ধরে।
৪. শ্রাবণের শেষদিকে আম পাকে।
৫. প্রতিটি আমের ওজন সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ কেজি পর্যন্ত।
৬. প্রতিটি আম আঁশমুক্ত, মিষ্টি ও সুস্বাদু।
৭. দেখতে অনেকটা কলার মতো লম্বা হয়ে থাকে।
৮. কাঁচা আম খেতে কিছুটা টক, মিষ্টি স্বাদ।
৯. কাঁচা আমের রং হয়ে থাকে কালচে সবুজ।
১০. পাকা আমের স্বাদ অনেকটা ফজলি আমের মতো।
১১. আমের আঁটি (বিচি) একদম ছোট।
১২. মাতৃগাছে প্রতিবছর ২০-৩০টি পর্যন্ত আম হয়ে থাকে।

প্রাপ্তিস্থান : মাগুরা আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রে হর্টিকালচার সেন্টারে চারা কিনতে পাওয়া যাবে। সেখানে কলম লাগানো গাছ আছে, যা থেকে সংক্রায়নের মাধ্যমে নতুন চারা তৈরি করে তা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হচ্ছে।

খুলনা গেজেট/ এস আই

 




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!