খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন সভাপতি মিশা, সাধারণ সম্পাদক ডিপজল

দৃঢ়ভাবে বলছি, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয় : ফখরুল

গেজেট ডেস্ক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হুঁশিয়ারী করে বলেছেন, ‘অত্যন্ত পরিষ্কার, স্পষ্ট ও দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।’ তিনি বলেন, এ সরকার থাকলে কোনো নির্বাচন হবে না। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। তাছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।

রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম শফিউল আলম প্রধানের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাগপা।

শফিউল আলম প্রধানের স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কখনো আপস করেননি মরহুম প্রধান। তিনি সবসময় দেশ ও জাতির জন্য সোচ্চার ছিলেন। তিনি কোনো সাধারণ নেতা ছিলেন না। তিনি সত্যিকার অর্থেই ত্যাগী, দেশপ্রেমিক ও বিপ্লবী নেতা ছিলেন। তার বাবা ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান অ্যাসেম্বলির স্পিকার। তিনি নিজেও সারাজীবন পরাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। তিনি ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতা বা অর্থ লোভে গা ভাসিয়ে দেননি। তার রাজনীতির কোনো স্বার্থ ছিল না। তার কাছে দেশ ও দেশের মানুষ ছিল মূখ্য। আমরা তাকে রাজনীতিতে সম্মান করি। বেগম খালেদা জিয়া তাকে অনেক পছন্দ করতেন। আমরা ওনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা কাজে লাগাতে চেয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের তাকে আমরা বেশি দিন পাইনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এক দিকে দেশের মানুষ আর অন্য দিকে ক্ষমতায় জোর করে একটি শাসক শ্রেণী আজ মুখোমুখি। এই সরকার যখন আন্দোলন দেখে, তখন তা অন্য দিকে প্রবাহিত করতে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। যে আওয়ামী লীগ বলেছিল, দেশ হবে সাম্যের, গণতন্ত্রের অথচ সেই আওয়ামী লীগ জোর করে অন্যায়ভাবে, একবার নয়, দু’দুবার ভোট না করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। যেখানে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। ২০১৪ সালের নির্বাচনে কেউ ভোট দেয়নি।

তিনি বলেন, দেশের সকল ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। সব জায়গায় একই অবস্থা। নির্বাচন ব্যবস্থাও ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে এত মিডিয়া কেউ কি কিছু লিখতে পারে? না। সাংবাদিকরা সব সময় ভয়ে থাকে। সাগর-রুনি হত্যার বিচার হয়নি এখনো। অনেক সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অনেক সাংবাদিক দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে জীবনের ভয়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের কোনো সাংবাদিক নেতারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলেন না। কারণ চাকরি চলে যাবে। আরো নানা ভয়ে। মনে রাখতে হবে, এ আওয়ামী লীগ- সেই আওয়ামী লীগ যারা বাকশাল কায়েম করে মাত্র চারটি পত্রিকা রেখেছিল। আর সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, খুলনায় আমাদের ওপর হামলা করে শেষ পর্যন্ত আমাদেরই ১৩০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাহলে বুঝেন, এক মামলায় ১৩০০ আসামি হলে তাহলে কত আসামি করা হয়েছে? আমাদের ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।

ভালো মানুষ কখনো আওয়ামী লীগের থাকতে পারেন না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মওলানা ভাসানী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা কিন্তু আওয়ামী লীগে থাকতে পারেননি। আ স ম আব্দুর রব, ওবায়দুর রহমান, মাহমুদুর রহমান মান্না, আব্দুস সালাম আরো অনেকে আওয়ামী লীগ করতেন, কিন্তু কেউ আর আওয়ামী লীগে থাকেননি। কারণ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতির আখড়া তৈরি করে ছিল। মওলানা ভাসানী বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ‘নিখিল বাংলা লুটপাট সমিতি’। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অর্থনীতিকে খুবলে-খুবলে খাচ্ছে। তারা দেশের স্বাধীনতার চেতনা ধ্বংস করেছে।

সাম্য সৃষ্টি, গণতন্ত্র পুনরদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে ও বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আমাদের অটল থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে দেয়া তাদের সব প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। তারা হচ্ছে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী দল। এখন অনেক খেলা হবে। সবাই সতর্ক থাকবেন। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চলছে। আমাদের শেষ পর্যায়ে যাওয়ার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করে এই সরকারকে সরিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করতে হবে। বাইরে থেকে কেউ দাবি আদায় করে দিবে না। আমাদের তরুণদের জেগে উঠে বিপ্লব করতে হবে। জাতিকে রক্ষা করা ও বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার দায়িত্ব তাদের।

সংগঠনের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো: আব্দুস সালাম, জাগপার সাধারণ সম্পাদক এসএম শাহাদত হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য খন্দকার আবিদুর রহমান, আ স ম মেজবাহউদ্দিন, অধ্যক্ষ হুমায়ূন কবির, যুগ্ম সম্পাদক ডা. আওলাদ হোসেন শিল্পী, সাইফুল আলম, এনপিপির অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, যুব জাগপার সভাপতি আমির হোসেন আমু প্রমুখ।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!