খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  ৬ দিনের সফরে আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের ডাক দিতে একজন ভাসানীর প্রয়োজন

কাজী মোতাহার রহমান

 

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ চলছে নয় মাস ধরে। যুদ্ধে রাশিয়ার এক লাখেরও বেশি সৈন্য হতাহত হয়েছে। ইউক্রেনেরও সমান সংখ্যক সৈন্য হতাহত হয়েছে। প্রায় ৪০ হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। যুদ্ধ দু’টো দেশের সাথে হলেও এর প্রভাব পড়েছে গোটা বিশ্বে।

যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেন থেকে এই প্রথম ৫১ হাজার মেঃ টঃ গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস করে। গত ৯ নভেম্বর রাশিয়া থেকে ৪৯ হাজার মেঃ টঃ গম নিয়ে জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস করে। যুদ্ধের নয় মাসে উল্লেখিত দু’টো দেশ থেকে গম না আসায় আটার দাম চালের দামের কাছাকাছি চলে এসেছে। জ্বালানি সংকটে পড়তে হয়েছে দেশকে। হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি কমেছে। চাল, আটা, জ্বালানি, চিনি ও সয়াবিনের দাম বেড়েছে। মানুষের সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় ফাঁদ পেতে বসে থাকছে।

বিশ্বব্যাপী আশঙ্কার মধ্যে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চীফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান মার্ক মিলি বলেছেন, কিয়েভ মস্কোর সঙ্গে ফের আলোচনা শুরু করার আগ্রহ প্রকাশ করায় দু’পক্ষের আপোষ-মীমাংসার ক্ষেত্রে এক পাথেয় তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি ইউক্রেন মস্কোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী বলে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।

প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে বলতে হয়, লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনকালে ১৯৫৯ সালের নভেম্বরে স্টক হোম বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের এক বিশেষ অধিবেশনে মাওলানা ভাসানী আমন্ত্রিত ছিলেন। এখানে তিনি উল্লেখ করেন, পৃথিবীর বুক থেকে আরেকটি মহাযুদ্ধের সম্ভাবনা চিরতরে বিদূরিত করার উদ্দেশ্যে আমাদের ক্ষুদ্র শান্তি আপনাদের জন্য মজুদ রেখেছি, উৎসর্গ করেছি। পাকিস্তানের মতো সদ্য স্বাধীন দেশের পক্ষে তাই যুদ্ধের সম্ভাবনার কথা চিন্তা করাও যায় না। জাতিগঠন কখনো যুদ্ধের মাধ্যমে হয় না, জাতি গঠনে চাই নিরবচ্ছিন্ন শান্তি। ১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনে মাওলানা ভাসানী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমি কোন প্রকার যুদ্ধ কলহ বিশ্বাস করিনা। বিশ্ব শান্তির পরিপন্থী যে কোন প্রকার যুদ্ধ কলহ মানব সভ্যতা ও মুক্তির পথে বাধাস্বরূপ।

চলমান যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাব সৃষ্টি করেছে। উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। দুর্ভিক্ষ দুয়ারে এসে দাঁড়াচ্ছে। এমনই সময়ে যুদ্ধ বন্ধের ডাক দিতে মাওলানা ভাসানীর মতো একজন রাজনীতিকের বড়ই প্রয়োজন। যিনি রক্তপাত বন্ধ করে আলোচনার মাধ্যমে শান্তির আহ্বান জানাবেন। পাশাপাশি দেশের চলমান সংকট নিরসনে একটি বলিষ্ঠ কন্ঠের প্রয়োজন। মজলুম জননেতার মৃত্যু বার্ষিকীতে আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!