খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  রাঙামাটির সাজেকে শ্রমিকবাহী মিনি ট্রাক পাহাড়ের খাদে পড়ে ৯ জন নিহত

আশাশুনিতে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ ৫, আহত ১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে নির্বাচন পরবর্তী বিজয় মিছিল থেকে উস্কানিমূলক কথাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের ইট পাটকেল ছোঁড়ার একপর্যায়ে পরাজিত প্রার্থীর বাড়ি থেকে ছোঁড়া গুলিতে নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিমের পাঁচ কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন আরো তিনজন।

বৃহষ্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে আটটার দিকে আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুর গ্রামের মাসের সেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে এঘটনায় খাজারা ইউনিয়নের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী অহিদুল ইসলাম ও তার সমর্থক সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল কুদ্দুস মোল্যাসহ ১০/১২ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

আহতরা হলেন, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গদাইপুর গ্রামের রফিকুল গাজীর ছেলে গুলিবিদ্ধ রাসেল হোসেন (২৫), একই গ্রামের নাফিলউদ্দিন শেখের ছেলে গুলিবিদ্ধ আসাদুল শেখ (৪৮), একই গ্রামের আহসান হাবিব টগরের ছেলে গদাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র গুলিবিদ্ধ রাকিব হোসেন (১২), শফিকুল সানার ছেলে গুলিবিদ্ধ ফিরোজ সানা (৩৩), বারিক সরদারের ছেলে হোসেন আলী সরদার (৫৫), তুয়ারডাঙ্গা গ্রামের সজিবউদ্দিন সাজুর ছেলে গুলিবিদ্ধ সজিব হোসেন (১১) , একই গ্রামের আমিনুর সরদারের ছেলে টুকু সরদার (৪৫), গদাইপুর গ্রামের রিয়াজউদ্দিন ফকিরের ছেলে ইমাম হোসেন (৫৫), একই গ্রামের শফিকুল সানার ছেলে ফিরোজ হোসেন (৪০), কুদ্দুস গাজীর ছেলে আসলাম (৩৬), তুয়ারডাঙ্গা গ্রামের কওছার সরদারের ছেলে ওয়াদুদ সরদার (৪০), একই গ্রামের আলাউদ্দিন শেখের ছেলে হাফিজুর রহমান (৪০), মৃত আফাজ উদ্দীন সদারের ছেলে নুর বক্স সরদার (৬০), জান্নাতুল গালিব এর ছেলে সাদিকুল ইসলাম সাদি (১৪) ও কাপসন্ডা গ্রামের ছিদ্দিক সরদারের ছেলে শহিদ সরদার (৪০)।

আহতদের মধ্যে ১০জনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে রাসেল হোসেন গাজীর অবস্থা আশঙ্খাজনক হওয়ায় তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এদিকে বৃহষ্পতিবার দুপুর একটার দিকে প্রতাপনগর ইউনাইটেড একাডেমী থেকে নবনির্বাচিত প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার সময় নাকনা মাধ্যমিক বিদ্যানিকেতের পাশে নাকনা গ্রামের আব্দুল গফুর গাজীর চেলে মঞ্জুাংল ইসলাম ও একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক গাজীর ছেলে রাজাদুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করেছে পরাজিত নৌকা প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা।

আশাশুনির খাজরা ইউপি’র সাবেক ও নব নির্বাচিত চেয়ারনম্যান শাহানেওয়াজ ডালিম জানান, ৫ম দফার ইউপি নির্বাচনে বুধবার তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি কর্মী সমর্থকদের নিয়ে বিজিয় মিছিল নিয়ে তুয়ারডাঙ্গা ব্রীজের পাশে আনারস প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী অহিদুল ইসলামের বাড়ির সামনে পৌঁছালে বিজয় মিছিলকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করা হয়।

জবাবে তার কর্মী সমর্থকরাও গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ ইট পাটকেল নিক্ষেপ করার সময় পরাজিত প্রার্থী অহিদুল ইসলামের বাড়ির দোতলা থেকে তারই দক্ষিণ হস্ত এনামুলের ছেলে রাব্বি বিজয় মিছিলকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে তার ভাতিজাসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়। ইটের আঘাতে আরো ১০/১২ জন আহত হয়। গুলিবিদ্ধ রাসেল ও আসাদুল সহ ১০ জনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

অপরদিকে খাজরা ইউপি থেকে স্বতন্ত্র প্রাথী হিসেবে পরাজিত অহিদুল ইসলাম জানান, নবনির্বাচিত খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিমের জয়লাভ এর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বুধবার রাত ১১টার দিকে তার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। বিষয়টি তিনি তাৎক্ষণিক আশাশুনি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। এরপরও বৃহষ্পতিবার সকালে শাহানেওয়াজ ডালিমের নেতৃত্বে বিজয় মিছিল করার সময় তার বাড়ির গেট ভাংচুর চালানো হয়। তিনি তখন বাথরুম থেকে বেরিয়ে নিজের লাইসেন্সকৃত শটগান থেকে আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোঁড়েন। বিজয় মিছিল থেকে ছোঁড়া ইটের আঘাতে আমার ছয়জন কর্মী সমর্থক আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কবির জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়োন করা হয়েছে। এলাকার এখন শান্ত রয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত টানা দুই ঘন্টার সহিংসতায় ৮ জন আহত হয়েছেন বলে তিনি দাবি করেছেন। পুলিশ অহিদুলের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা জব্দ করেছে। এঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তবে প্রতাপনগরে দু’জনকে পিটিয়ে জখমের ঘটনায় সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!