খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ | ২৮ মার্চ, ২০২৪

Breaking News

  ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত
  সাবেক সংসদ সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজির হোসেন মারা গেছেন
  নওগাঁয় বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত
  যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত

আশাশুনিতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে থানায় তরুণীর মিথ্যে শ্লীলতাহানির অভিযোগ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কাপসন্ডা গ্রামে প্রকাশ্যে তরুণীর শ্লীলতাহানির ঘটনাটি সাজানো নাটক বলে দাবি করেছে আশাশুনি থানা পুলিশ। তরুণীর দেয়া অভিযোগ তদন্ত করে ঘটনার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। প্রতিপক্ষকে হয়রানি করতে মেয়েটি অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থানায় মিথ্যে অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, তরুণীটির দেওয়া অভিযোগ সত্য নয়। পুলিশের দাবি মোটরসাইকেল চালক হিসাবে তরুণীটি তার চাচা সাগর খার নাম উল্লেখ করলেও তিনি দুই মাস যাবত লেখাপড়ার কারণে খুলনায় রয়েছেন। অপরদিকে তরুণীকে মোটরসাইকেলে বহনকারী ব্যক্তি রিয়াসাত আলী পুলিশকে জানিয়েছে ওইদিন সেখানে এমন কোন ঘটনাই ঘটেনি। রিয়াসাত আলি আসামি শুভর মামা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশাশুনি থানার সহকারি পরিদর্শক (এসআই) মোঃ হাসানুজ্জামান বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্তকালে কিছুই পাননি। সাগর খাঁ দুই মাস যাবত খুলনায় রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য মেয়েটি এই সাজানো মামলা করেছে। তবে তিনি বলেন, এটা ছায়া তদন্ত, বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত হতে পারে।

অপরদিকে নির্যাতিত মেয়েটি পুলিশের দাবিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, এসআই হাসানুজ্জামান তার পৈত্রিক বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে বলেছেন, সাগর খাঁ এবং ওই তরুণীর নামে চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। তারা কোথায় ? পুলিশের এমন হুমকিতে বাড়ির লোকজন তাদের রক্ষার জন্য জানিয়েছে, সাগর খাঁ দুই মাস যাবত খুলনায় আছেন। তবে সাগর খাঁ সাংবাদিকদের জানান, তিনিও ঘটনার সময় ধস্তাধস্তিতে বাধা দেওয়ায় সন্ত্রাসীদের হাতে মার খেয়েছেন। সাতক্ষীরা হাসপাতাল থেকে তিনি প্রাথমিক চিকিৎসাও নিয়েছেন।

উল্লেখ্য: গত শুক্রবার বিকালে নির্যাতিত তরুণী তার চাচা সাগর খাঁর মোটরসাইকেলে সাতক্ষীরায় আসার সময় কাপসন্ডা স্কুলের সামনে ৬ যুবক গতিরোধ করে থামিয়ে তাকে নামিয়ে জাপটে ধরে। তার দেহের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করে অসম্মান করে। তাকে সাকিব বিল্লাহকে বিয়ে করতে হবে বলে তাদের সাথে যাওয়ার জন্য টানাহেঁচড়া করে। এতে তার কাপড়চোপড় ছিড়ে যায় এবং তিনি শ্লীলতাহানির শিকার হন।

এদিকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে খাজরা ইউনিয়নের একাধিক মামলার আসামী রমজান তার ভাগ্নিকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করে হয়রানি করছেন দাবি করেছেন উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের কাপসান্ডা গ্রামের আমিনুদ্দীনের ছেলে রায়হান উদ্দীন খোকা। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে তিনি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বোমবাজি, চাঁদাবাজি, অপহরণ, চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণসহ ৪৫ মামলার আসামী রমজানের নামে আমার ভাইপো লাকী বিল্লাহ বাদী হয়ে আশাশুনি থানায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর একটি মারামরির মামলা দায়ের করে। এ মামলায় তার আপন ভাগ্নি রুবিয়াকে ১৫ নম্বর আসামী করলে তাকে দিয়ে আমার ও আমার গ্রাম বাসীর নামে নারী নির্যাতন ও অপহরণসহ বিভিন্ন মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে দেয়ার জন্য হুমকি প্রদর্শন করে আসছে। এমনকি আমার কলেজ পড়ুয়া ভাই শুভ, ভাইপো আলামিন, রকিব, জাকারিয়া ও সাকিবকে ফেসবুকে রুবিয়া বিভিন্ন রকম হুমকি দিয়ে আসছে। এছাড়া রমজানের কাজে বাধা দিলে মিথ্যে মামলায় জড়ানো হবে বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে।

স্থানীয় ইউপি মেম্বর আরিফ বিল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রমজান বাহিনীর সাথে স্থানীয় এলাকাবাসীর মারামারির ঘটনায় তার ও তার ভাগ্নির নামে মামলা হওয়ার পর থেকে সে প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ খুজতে থাকে। সে লাকী বিল্লাহ, খোকা, আলামিন, জাকারিয়া ও সাকিবকে মিথ্যে মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়ে আসছিল। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে আশাশুনি থানায় তাদের বিরুদ্ধে রমজানের ভাগ্নি রুবিয়া বাদী হয়ে একটি মিথ্যে শ্লীলতাহানির এজাহার জমা দিয়েছে।

আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কবির জানান, শ্লীলতাহানীর অভিযোগ এনে এক তরুণী থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে দেখা গেছে তরুণীটির দেওয়া অভিযোগ সত্য নয়। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য কেউ মেয়েটিক দিয়ে এই সাজানো অভিযোগ করিয়েছেন। তবে বিষয়টি এখনো তদন্তাধিন আছে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!