দুই গোলে এগিয়ে গিয়ে আর্জেন্টিনা তখন জয়ের প্রহর গুণছিল। ঠিক তখনই কিলিয়ান এমবাপে এলেন আকাশি-সাদাদের পথে কাটা হয়ে। ৯৭ সেকেন্ডের এদিক ওদিকে করে বসলেন জোড়া গোল। তাতেই আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের বিশ্বকাপ ফাইনালটা চলে গেল যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে।
ডি মারিয়াকে আগের তিন ম্যাচে একাদশে রাখেননি কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি। তবে আজ রোববার লুসাইল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনালে সে পথে হাঁটেননি তিনি। লিয়ান্দ্রো পারেদেসকে সরিয়ে তাকে একাদশে আনেন তিনি।
কোচের আস্থার প্রতিদান ডি মারিয়া শুরু থেকেই দিয়েছেন। বাম প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠেছেন মুহুর্মুহু। সেই ডি মারিয়াই ২২তম মিনিটে আর্জেন্টিনাকে এনে দেন পেনাল্টিটা। বক্সের ভেতর তাকে ফাউল করেন উসমান দেম্বেলে। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি শিমন মারচিনিয়াক।
পেনাল্টি নিতে ধীরপায়ে এগিয়ে আসা মেসিকে পড়তে পারেননি ফ্রেঞ্চ গোলরক্ষক উগো লরিস। ঝাঁপিয়ে পড়েন নিজের ডান পাশে, মেসি শট নেন তার বাম পাশ দিয়ে। বলটা গিয়ে আছড়ে পড়ে জালে। ১৯৮৬ বিশ্বকাপ ফাইনালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল পায় আর্জেন্টিনা। মেসিও পেয়ে যান তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোলটা।
এরপর ৩৬ মিনিটে মেসি-ডি মারিয়ার যুগলবন্দিতেই দ্বিতীয় গোলটা পায় আকাশি-সাদারা। সমতাসূচক গোলের লক্ষ্যে ফ্রান্স আক্রমণে উঠেছিল আর্জেন্টিনার অর্ধে। তবে আকাশি-সাদারা বল জিতে নেয় দারুণভাবে।
এরপর রদ্রিগো ডি পল হয়ে প্রতিপক্ষ বিপদসীমার ঠিক আগে থাকা লিওনেল মেসির কাছে যায় বলটা। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক প্রথম ছোঁয়াতেই বলটা তুলে দেন প্রতি আক্রমণে উঠে এসে ফাঁকায় থাকা ডি মারিয়াকে।
জুভেন্তাস তারকা গোলটা করতে ভুল করেননি। প্রথম ছোঁয়াতেই আগুনে এক শট নিয়েছেন উগো লরিসের ফারপোস্টে। ফরাসি অধিনায়ককে ফাঁকি দিয়ে বলটা গিয়ে আছড়ে পড়ে ফ্রান্সের জালে। আর্জেন্টিনা এগিয়ে যায় দুই গোলে। সেই দুই গোলে এগিয়েই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
বিরতি থেকে ফিরে আর্জেন্টিনা ৩য় গোলের চেষ্টা করেছে ভালোভাবেই। তবে তাতে সফল হতে পারেননি মেসিরা। তবে তাতে ক্ষতিও ছিল না, অন্তত তখন পর্যন্ত। বিশ্বকাপের ফাইনালে দুই গোলের লিডে যে এগিয়ে ছিল দল।
ক্ষতিটা করলেন এমবাপে। ম্যাচের ৭৮ মিনিটে প্রতি আক্রমণে উঠে আসে ফ্রান্স। বক্সে আগুয়ান কিংসলে কোম্যানকে নিজেদের বিপদসীমায় ফাউল করে বসেন অটামেন্ডি। পেনাল্টি পায় শিরোপাধারী ফ্রান্স।
সেই পেনাল্টি থেকে এমবাপে শটটা মারেন বামে। আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ঠিক দিকে লাফিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি।
সেই একটা গোলই যেন নাড়িয়ে দিল আর্জেন্টিনাকে। সেই গোল হজম করে ঠিকমতো ধাতস্থও হতে পারেনি দলটি, এরই মধ্যে দ্বিতীয় গোল করে বসেন সেই এমবাপে। ৯৭ সেকেন্ডের এদিক-ওদিকে আর্জেন্টিনা খুইয়ে বসে ২ গোলের লিড।