খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর নিয়োগ নিয়ে ছাত্রদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
  ৭ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা
  ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
  ৪০তম ব্যাচের ক্যাডেট এসআইদের সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত

যশোরে বিষে হত্যা মামলার চার্জশিট, অভিযুক্ত ৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরে আমিনুর রহমান বিষে হত্যা মামলায় ছয় জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই সেকেন্দার আবু জাফর এ চার্জশিট দাখিল করেন।

অভিযুক্তরা হলেন, যশোর সদর উপজেলার বালিয়া ভেকুটিয়া কলোনীপাড়ার জসিমের বাড়ির ভাড়াটিয়া দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম সাগর, শহরের বারান্দি মোল্লাপাড়া কবরস্থান এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে রাকিব হোসেন, বারান্দি মোল্লাপাড়া আমতলা এলাকার লাল বাবুর ছেলে আসিফ আহমেদ, বারান্দী মোল্লাপাড়া কবরস্থান এলাকার হান্নানের দোকানের গলির লাল মিয়ার ছেলে নাসির হোসেন, আরবপুর মোড় এলাকার নজরুল ইসলাম বাবু ওরফে কসাই বাবুর ছেলে নাঈম হোসেন ওরফে ঠোঁটকাটা নাঈম ও হাশেম আলীর ছেলে সাইদুজ্জামান বাবু ওরফে দাঁতাল বাবু। একইসাথে চার্জশিটে এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামির অব্যাহতির আবেদন জানানো হয়েছে।

আদালত ও পুলিশ সূত্র জানায়, হত্যার শিকার আরবপুর তালপট্টির মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে বিষে ও চার্জশিটভুক্ত আসামি সাগর এক সাথে চলাফেরা করতেন। তারা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে চাঁদাও আদায় করতেন। এক পর্যায়ে বিষের সাথে চলাফেরা ও চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেন সাগর। পরে ২০২০ সালের নভেম্বরের শুরুতে সাগর সদর উপজেলার মহাদেবপুর গ্রামের পুকুর থেকে বালি নেয়ার জন্য এক লাখ টাকা চুক্তিবদ্ধ হন। এ জন্য সাগর পুকুর মালিককে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকাও দেন। কিন্তু এরই মধ্যে বিষে দলবল নিয়ে মহাদেবপুরে গিয়ে সাগরের বালি উত্তোলনের পাইপ ভেঙে দেয়। প্রতিবাদ করায় বিষে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে সাগরের কাছে। কোনো উপায় না পেয়ে সাগর তখন তাকে পাঁচ হাজার টাকা দেয়। পরে সাগর আরবপুর মোড়ে দাঁতাল বাবুর কাছে গিয়ে বিষের বিরুদ্ধে নালিশ করে। কিন্তু দাঁতাল বাবু দু’জনকে ডেকে বৈঠক করলেও বিষের চাঁদার বাকি ৩৫ হাজার টাকা সাগরকে দিতে বলেন। ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর রাতে ৩৫ হাজার টাকার মধ্যে ১৫ হাজার টাকা যোগাড় করে সাগর আরবপুর মোড়ে যায় বিষেকে দেয়ার জন্য। কিন্তু বিষে ওই টাকা না নিয়ে চড় থাপ্পর মেরে তাকে তাড়িয়ে দেয়। পরদিন ২১ ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে বিষে দলবল নিয়ে মহাদেবপুরে গিয়ে সাগর ও পুকুর মালিকের ছেলে সাইফুলকে মারপিট করে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিকেল ৩টার দিকে দাঁতাল বাবুর নির্দেশনা অনুযায়ী সাগর তার পূর্ব পরিচিত ঠোঁটকাটা নাঈম, রাকিব, আসিফ ও নাসিরকে নিয়ে আরবপুরের আসলামের হোটেলে গিয়ে সেখানে অবস্থানরত বিষেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।
হত্যার ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই শুভ হাওলাদার ছয় জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সেকেন্দার আবু জাফর জানান, প্রথমে সন্দেহভাজন আসামি রাকিব, নাসির ও আসিফকে আটক করে। এসময় তারা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এরপর সাগরকে আটক করা হলে তিনিও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এই চারজনের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, হত্যার সাথে এজাহারভুক্ত সোমরাজ, রুবেল, নাঈম, কর্ণ ও আকাশ জড়িত নন। এ কারণে চার্জশিটে তাদেরকে হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন জানানো হয়েছে। এছাড়া অন্যতম আসামি সাগর আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে আরবপুরের চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলামের নাম প্রকাশ করেছিলেন হুকুমদাতা হিসেবে। কিন্তু তদন্তে জানা যায়, শাহারুল ইসলাম এ ঘটনার সাথে জড়িত নন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জবানবন্দিতে শাহারুল ইসলামের নাম প্রকাশ করেছিলেন সাগর। এ জন্য চার্জশিটে তাকেও অব্যাহতির আবেদন জানানো হয়েছে।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!