খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
  ঢাকা শিশু হাসপাতালে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট
  রাজধানীর খিলগাঁওয়ে হাত বাঁধা অবস্থায় যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
  জাতীয় পতাকার নকশাকার, জাসদ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন

‘পেটের ক্ষুধা বোঝেনা লকডাউন’

নিতিশ সানা, কয়রা

লকডাউনে ৫ দিন ঘরে বসে ছিলেন। ঘরে খাবার না থাকায় লকডাউন জেনেও তার পেশা জুতা সেলাই ও পালিশের কাজে এসেছে। কিন্তু কোন কাজ নেই, সংসার চলছে না। এখন ৫০ টাকাও সারা দিনে ইনকাম হচ্ছে না।

ঘরে খাবার নেই। লকডাউনে সব বন্ধ। ঘর থেকে মানুষ বের হচ্ছে না। সারাদিন বাজারের রাস্তার পাশে বসে থাকলেও ইনকাম হচ্ছে না। পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। এভাবে আর কতদিন চলবে। সারাদিন বসে ৪০/৫০ টাকা ইনকামও হচ্ছে না। পেটের ক্ষুধা বোঝে না লকডাউন। কয়রা বাজারে বসে এভাবেই দুঃখ ভরা এক করুণ কাহিনী বলছিলেন উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৫ নং কয়রা গ্রামের ঋষি বুদিশ্বর মন্ডল (৫২)।

তার সাথে কথা বলে সামনে এগুতেই বসে ছিলেন ঋষি নিখিল। ‍তিনি জানান, লকডাউনে ৫ দিন ঘরে বসে ছিলেন। ঘরে খাবার না থাকায় লকডাউন জেনেও তার পেশা জুতা সেলাই ও পালিশের কাজে এসেছে। কিন্তু কোন কাজ নেই, সংসার চলছে না। আগে ৪শ’  থেকে ৫ শ’ টাকা দিনে ইনকাম হতো, এখন ৫০ টাকাও সারা দিনে ইনকাম হচ্ছে না।

বুদিশ্বর ও নিখিল নয় তাদের মত ভ্যান চালক, ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালক, চায়ের দোকানদার, দিনমজুরসহ নিম্ন আয়ের মানুষ গুলো রয়েছে চরম বিপাকে।

মহামারী করোনাভাইরাসে প্রতিদিনই বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। থেমে নেই মৃত্যুর মিছিল। গেলো বছর করোনায় দীর্ঘদিন লকডাউনের কারণে আর্থিকভাবে মারাত্মক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলো দক্ষিণ অঞ্চল খুলনার কয়রা উপজেলার উপকূলীয় অসহায় মানুষের। একদিকে আম্পান ইয়াসের ক্ষত অন্য দিকে লকডাউনকালীন বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে জীবনযুদ্ধ করছেন উপজেলার নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। এরই মাঝে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার । লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ-প্রশাসনও যথেষ্ট তৎপর। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য মানুষকে ঘরে রাখতে চলছে নানা কার্যক্রম। সেনাবাহিনীও নেমেছে মাঠে। দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ছোট বড় বাজার দোকান গুলো বন্ধ রয়েছে। করোনা ভাইরাসের ক্ষতিকর দিক জেনেও লকডাউন অমান্য করে পেটের দায়ে অনেকেই রাস্তায় বেরিয়ে আসছে। তবে এর মধ্যে ভ্যান চালক, ইজিবাইক চালক ও মোটরসাইকেল চালক বেশি। ফার্মেসি আর নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া সব কিছু বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলায় প্রবেশের প্রধান সড়ক গুলোতে বসানো হয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট। বাজার ঘাটে রয়েছে সেনাবাহিনীর টহল। উপজেলার ছোট বড় বাজার গুলোতে নিয়মিত নির্বাহী ম্যাজিস্টের টহলে আইন অমান্যকারীকে করা হচ্ছে জরিমানা। তারপরেও কিছু পাড়া -মহল্লায় চলছে চোর-পুলিশ খেলা। পুলিশ আসলে দিচ্ছে দৌড়, চলে গেলে আবার চলছে চা-কেরাম বোর্ড খেলার আসর।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস খুলনা গেজেটকে বলেন, লকডাউনে কোন কর্মহীন মানুষ না খেয়ে থাকবেনা। উপজেলা পর্যায় থেকে হটলাইন চালু করা হয়েছে এবং ৩৩৩ কল করলে তাদের বাসায় উপজেলা থেকে খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!