নড়াইলের তিন ভাগের এক ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে কোনো শহীদ মিনার স্থাপিত হয়নি।
তবে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগে শহীদ মিনার থাকলেও শহীদ মিনারের জায়গায় নতুন ভবন করায় এখনও পর্যন্ত শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়নি বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের নিজ খরচে খুব শীঘ্রই শহীদ মিনার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেলায় মোট ৬৯৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৪৫৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০২টি। এর মধ্যে ১১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে, ৮৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এর মধ্যে ৪৫টি কামিল, ফাজিল, আলিম ও দাখিল মাদ্রাসার একটিতেও শহীদ মিনার নেই। শহীদ মিনার না থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ৯টি উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি কলেজও রয়েছে। জেলায় ৪৯৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে ১২৭টিতে এবং ৩৬৮টিতে নেই।
নড়াইলের কৃতি সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের নামে বীরশ্রেষ্ঠের জন্মভূমি সদরের চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের নূর মোহাম্মদ নগরে একটি কলেজ এবং একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকলেও দু’টির একটিতেও শহীদ মিনার নেই।
এ ব্যাপারে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ কলেজের অধ্যক্ষ প্রনব কান্তি অধিকারী বলেন, যেহেতু কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যেই বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ জাদুঘর ও লাইব্রেরী রয়েছে সেহেতু একই ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার করার জন্য গত দু’বছর পূর্বে তৎকালীন জেলা প্রাশাসক এবং জেলা পরিষদের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু বিষয়টি আর এগোয়নি। এছাড়া শহীদ মিনার করার জন্য আমাদের কোন ফান্ডও নেই যে নিজস্ব অর্থায়নে শহীদ মিনার করবো।
জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম ছায়েদুর রহমান বলেন, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেসব প্রতিষ্ঠানের তালিকা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রতি বছরই পাঠানো হয়। তবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে প্রতি বছর ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরি করে দেওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া স্থানীয় সহায়তা এবং জেলা পরিষদ ও এলজিইডি অফিস থেকেও প্রতি বছর দু’একটি করে শহীদ মিনার তৈরি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
নড়াইল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অরুনাভ রায় জানান, আমাদের নিয়মে রয়েছে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেরামত ও সংস্কার কাজের বরাদ্দ আসে সেসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা যদি শহীদ মিনার তৈরি করে দিতে বলেন তাহলে আমরা নির্মাণ করে দেই। তবে তারা যদি না চান তাহলে আমরা করতে পারি না। গত ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নড়াইলে যোগদানের পর কালিয়ায় একটি মাধ্যমিক স্কুলে নতুন শহীদ মিনার নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।
জেলার শিক্ষানুরাগীদের দাবি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হোক।
খুলনা গেজেট/ এস আই