দুর্নীতির অভিযোগে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনারসহ ৩২ কাস্টমস ও বন্দর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। রোববার বেনাপোলের সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স সাগর এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী আকবর আলী বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন। যশোরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক অভিযোগটি আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান, সাবেক কমিশনার বেলাল হুসাইন চৌধুরী, অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম, বর্তমান উপকমিশনার এসএম শামীমুর রহমান, বিল্লাল হোসেন, পারভেজ রেজা চৌধুরী, অনুপম চাকমা, সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা, দিপারাণী হালদার, মুর্শিদা খাতুন, এইচ এম আহসানুল কবীর, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (কার্গো শাখা) শামিম হুসাইন, কামাল হোসেন, নূরে আলম, জিএম আশরাফুল আলম, বিকাশ চন্দ্র মন্ডল, সাজেদুর রহমান, সাখাওয়াত হোসাইন, এসএম মেজবাহ উদ্দিন, রাজস্ব কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ, মৃণাল কান্তি সরকার, স্বপন কুমার দাস, এসএম আজিজুর রহমান, এসএম বদিউজ্জামান, বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আবদুল জলিল, মামুন তরফদার, সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান, লাকি বেগম, উপসহকারী পরিচালক (যান্ত্রিক) শিমরান হোসেন, ওয়ার হাউজের সুপারিন্টেন্ড আবু রাসেল ও কম্পিউটার অপারেটর রনি কুমার বসাক।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ঢাকার মিরপুরের সোহেল এন্টারপ্রাইজ ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ১৩৮ প্যাকেট গামেন্টস পণ্যসহ অন্যান্য মালামাল আমদানি করে। আমদানিকৃত পন্য ভারতীয় কাস্টমস ৩ হাজার ২শ’ ৭৯ দশমিক ৪০ কেজি ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশে পাঠায়। এরপর সেটি বেনাপোল বন্দরের এক নম্বর শেডে রাখা হয়। এরপর সহকারী কমিশনার দিপা রাণী হালদারের নেতৃত্বে একটি টিম শেডে রাখা পণ্য পরীক্ষা করেন। সেখানে অতিরিক্ত কোন পন্য পাওয়া যায়নি। ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর কাস্টমস কর্মকর্তারা তাকে কোন কিছু না জানিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। এ নোটিশের জবাব দেবার পরও ৩ হাজার ৬শ’ ৭২ কেজি পণ্য দেখিয়ে একটি প্রতিবেদন দিয়ে শুল্কায়নের প্রস্তাব করা হয়। এ ঘটনায় তৎকালীন কমিশনার বেলাল হুসাইন আমদানিকারককে মোট চার লাখ টাকা জরিমানা করেন। এরপর সিএন্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চলতি বছরের ৫ আগষ্ট পণ্য খালাশের আবেদন করেও পণ্য নিতে পারেননি। একই সাথে মেসার্স সাগর এন্টারপ্রাইজের সিএন্ডএফ লাইসেন্স বাতিল করা হয়। এর আগে ৩ নম্বর আসামি অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম পণ্য খালাসের কথা বলে ৩ লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন। একইসাথে লাইসেন্স অবমুক্ত করার জন্য আরো দুই লাখ টাকা ঘুুষ দাবি করেন বলে তিনি মামলায় উল্লেখ করেছেন। আসামিরা দুর্নীতির মাধ্যমে লাভবান হতে পন্য খালাসে বাঁধা ও লাইসেন্স বাতিল করে বাদীকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি দুদকে অভিযোগ দেয়ার পর তা গ্রহণ না করায় আদালতে এ মামলা করেছেন।
এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমানের বক্তব্য নিতে তার মোবাইল ফোনে কয়েকদফা কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
খুলনা গেজেট/ টি আই